নাইজারে পালানোর খবর নাকচ করলেন গাদ্দাফি

প্রতিবেশী দেশ নাইজারে পালিয়ে যাওয়ার খবর নাকচ করে দিয়েছেন লিবিয়ার ক্ষমতাচ্যুত নেতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফি। একে তাঁর বিরুদ্ধে ‘মানসিক যুদ্ধ’ বলে আখ্যা দেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি ন্যাটো ও বিদ্রোহীদের পরাজিত করার অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
এদিকে কর্নেল গাদ্দাফি এখনো লিবিয়ার জন্য ‘বিপজ্জনক’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন দূত জেন ক্রেজ। গাদ্দাফির স্ত্রী সাফিয়া ক্রোয়েশিয়ায় একটি পর্যটনকেন্দ্র কেনার ব্যাপারে আলোচনা করছেন।
গতকাল সিরিয়াভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল অ্যারাই ওরুবার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন গাদ্দাফি। এতে তাঁর নাইজেরিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার খবরের সমালোচনা করেন তিনি। গাদ্দাফি বলেন, ন্যাটো ও বিদ্রোহীরা আমাদের নৈতিক মনোবল দুর্বল করতে চায়। তিনি বলেন, আমরা ত্রিপোলিসহ লিবিয়ার সব জায়গায় প্রস্তুত আছি। বিদ্রোহীদের ওপর হামলা চালানো হবে।
গাদ্দাফি বা তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা যাতে লিবিয়া ছেড়ে পালাতে না পারেন, সে জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোকে লিবিয়ার সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিল (এনটিসি) ও যুক্তরাষ্ট্র।
গত ২৩ আগস্ট ত্রিপোলিতে গাদ্দাফির প্রধান আশ্রয়স্থল বাব আল আজিজিয়ার পতনের পর অ্যারাই ওরুবা চ্যানেলে গাদ্দাফির বেশ কিছু অডিও বার্তা প্রচারিত হয়। এর আগে এই চ্যানেলটির মালিক ইরাকের সাবেক এমপি মিসান আল জুবুরি দাবি করেন, গাদ্দাফি লিবিয়াতেই আছেন এবং তাঁর সঙ্গে কথাও হয়।
মার্কিন দূত ক্রেজ গত বুধবার ওয়াশিংটনে বলেন, গাদ্দাফিকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা এনটিসির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জানান, লিবিয়ার ক্ষমতাচ্যুত এই নেতা এখনো দেশটির ও জনগণের জন্য বিপজ্জনক। লিবিয়ায় গাদ্দাফির অনুগত বাহিনীকে লক্ষ্য করে সামরিক জোট ন্যাটোর বিমান হামলা অব্যাহত থাকবে।
লিবিয়ায় বনি ওয়ালিদ, সাবহা ও গাদ্দাফির জন্মস্থান সার্তে শহরে এখনো প্রবেশ করতে পারেনি বিদ্রোহীরা। গাদ্দাফির অনুগত সেনাদের আত্মসমর্পণের জন্য আগামীকাল ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে এনটিসি।
গাদ্দাফির স্ত্রী সাফিয়া ক্রোয়েশিয়ায় একটি পর্যটনকেন্দ্র কেনার ব্যাপারে আলোচনা করছেন বলে খবর বেরিয়েছে। ক্রোয়েশিয়ার দৈনিক ক্রনিকল এক প্রতিবেদনে জানায়, লিবিয়ায় গাদ্দাফিবিরোধী অভিযান শুরুর পর গাদ্দাফির পতন নিশ্চিত হলে পর্যটনকেন্দ্র কেনার ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেন সাফিয়া। বাব আল আজিজিয়ার পতনের পর গাদ্দাফির দ্বিতীয় স্ত্রী সাফিয়া তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে পালিয়ে আলজেরিয়ায় আশ্রয় নেন। সাফিয়া সাবেক যুগোস্লাভিয়ার মোস্তার শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে শহরটি বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় পড়েছে।

No comments

Powered by Blogger.