ইউএনও’র বাড়িতে ককটেল বিজয়ী প্রার্থীকে গুলি

পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা, সংঘর্ষ, ভাংচুর ও লুটের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বিকাল থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঘটা এসব ঘটনায় একজন নিহত ও ৮৭ জন আহত হয়েছেন। কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর পৌরসভায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষে আবুল কাশেম নামের এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এখানে দু’দফা সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হন। জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় একজন গুলিবিদ্ধসহ ৮ নৌকা সমর্থক আহত হয়েছেন। দাউদকান্দিতে বিজয়ী কাউন্সিলরকে গুলি করা হয়েছে। তিনি এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। শরীয়তপুরের নড়িয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয়ী মেয়র প্রার্থীর ৫ সমর্থককে কুপিয়ে জখম করেছে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা। পিরোজপুরে বিজয়ী কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় পরাজিত প্রার্থীর ৮ সমর্থক আহত হয়েছেন। নড়াইলের কালিয়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা ৫ নৌকা সমর্থককে কুপিয়ে জখমসহ বেশ কয়েক জনকে আহত করেছে। গৌরনদীতে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন এবং গাইবান্ধায় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষে ৪ জন আহত হয়েছেন। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সংঘর্ষে ৭ জন আহত হয়েছেন। চাঁদপুরের কচুয়ায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। ময়মনসিংহের ফুলপুরে রিটার্নিং অফিসার ও ইউএনও’র বাড়ি লক্ষ্য করে ৬টি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি স্থানে বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাংচুর, লুট ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) : হোসেনপুর পৌরসভায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষে এক ব্যবসায়ী নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন। পৌরসভার নতুনবাজার মোড় এলাকায় বুধবার সন্ধ্যায় ও বৃহস্পতিবার সকালে দু’দফা সংঘর্ষে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।

জানা যায়, জাল ভোট দেয়া নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী জহিরুল ইসলাম ওয়াসিম ও মো. শাহজাহান কাজলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আবুল কাশেমসহ (৪৫) অন্তত ১০ জন আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় কাশেমকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে চিকিৎসাধীন ওই হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তিনি নবনির্বাচিত কাউন্সিলর কাজলের চাচা।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে কাশেমের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে কাজলের লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষ জহিরুল ইসলাম ওয়াসিমের সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ৮-১০ জন আহত হন। এ সময় দু’পক্ষের লোকজন ধুলিহর গ্রাম ও নতুনবাজারে বেশকিছু বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাংচুর করে।

হোসেনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নান্নু মোল্লা আহত আবুল কাশেমের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, ঘটনায় জড়িত অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার ও কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ছেংগারচর (চাঁদপুর) : ভোটে হেরে যাওয়ার পর চাঁদপুরের ছেংগারচর পৌরসভায় ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী নাজমুল খানের সমর্থকরা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছানাউল্যাহ সরকার ও তার সমর্থকদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেছে। বুধবার নির্বাচনের পর সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ছানাউল্যাহ সরকারের স্ত্রী জাহানারা বেগম জানান, হামলাকারীরা ব্লেন্ডার মেশিন, ল্যাপটপ, ট্যাব মোবাইল সেট, একটি ফ্রিজ ও টিভি ভাংচুর করে। এ সময় তারা দুই ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। নাজমুল খানের কর্মীরা ছানাউল্যাহর সমর্থক আবদুল মালেক সিকদারের বাড়ি ও সাবেক কমিশনার সোহরাব মিয়ার বাড়িতেও হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর করে।

কচুয়া (চাঁদপুর) : চাঁদপুরের কচুয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয়ী ও পরাজিত দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশসহ ৫ জন আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে পৌরসভার বিশ্বরোড বাইপাস এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জানা যায়, ৩নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ বিজয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন ও পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী কামাল হোসেন গাজীর সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পুলিশ ও বিজিবি ঘটনাস্থলে পৌঁছে ১২ রাউন্ড শর্ট গানের ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নড়িয়া (শরীয়তপুর) : বৃহস্পতিবার সকালে জেলার নড়িয়া উপজেলার মাদবর বাজার সংলগ্ন লোংশিং এলাকায় পৌর নির্বাচনে বিজয়ী মেয়র প্রার্থী হায়দার আলীর সমর্থক কোরবান মুন্সি, কাদের ছৈয়াল, শামিম মাদবর ও সাবেক কমিশনার আবদুল আজিজ মাদবরের বাড়িতে পরাজিত আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা হামলা চালিয়ে ৪টি ঘর ভাংচুর করে। এ সময় তারা নজরুল মাদবর, রহিমা বেগম, আমেনা বেগম ও পিয়ার হোসেনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে। আহতদের নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত নজরুল মাদবরকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

পিরোজপুর : পিরোজপুর পৌর নির্বাচনে বিজয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী আ. সালাম মধুর সমর্থকরা বুধবার রাত পৌনে ৮টার দিকে পরাজিত কবির সিকদারের সমর্থকদের ওপর হামলা চালালে দুই মহিলাসহ ৮ জন আহত হন। এদের মধ্যে গুরুতর একজনকে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ২ জনকে আটক করা হয়েছে।

নেত্রকোনা : নেত্রকোনা পৌরসভায় দুই পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী আতাউর রহমান তারা ও মো. শামীম রেজা খান সরলের কর্মী সমর্থকরা নির্বাচনে পরাজয়ের জন্য একে অপরকে দোষারোপ করে কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও র‌্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

দাউদকান্দি : দাউদকান্দি উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ও পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর মো. রকিব উদ্দিন রকিবকে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাত ১০টার দিকে উপজেলা পরিষদ থেকে নির্বাচনের ফল নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলা পরিষদ মাঠ সংলগ্ন রাস্তায় দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে দ্রুত গৌরীপুর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে বৃহস্পতিবার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রকিব উদ্দিনের শরীর থেকে গুলি বের করা হয়।

দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) : দেওয়ানগঞ্জ পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের একজন গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ছাত্রনেতা ভিপি সেলিমের পিতা আলহাজ আ. সালাম দেওয়ানী, তার ছোট ভাই যুবলীগ নেতা রাসেল, আওয়ামী লীগ নেতা হাছেন মিস্ত্রী, মিজানুল হক পিন্টুসহ ৮ জনকে দেওয়ানগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার পর ঢাকায় পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে আ. সালামের অবস্থা আশংকাজনক।

নগরকান্দা (ফরিদপুর) : নগরকান্দা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডে নির্বাচিত কাউন্সিলর নিমাই চন্দ্র সরকারের বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে। বুধবার রাতে পরাজিত কাউন্সিলর জালালউদ্দিন সরদারের নেতৃত্বে এ হামলা হয়। এ ঘটনায় নগরকান্দা থানায় একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার পর রাতেই পরাজিত কাউন্সিলর জালালউদ্দিন সরদারসহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। জানা যায়, নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরই পরাজিত কাউন্সিলরের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নিমাই চন্দ্র সরকারের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় নিমাই চন্দ্র সরকার বাড়িতে ছিলেন না। সন্ত্রাসীরা তার ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাংচুর করে। এ সময় তারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও ভাংচুর করে। একপর্যায়ে হামলাকারীরা ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়।

ফুলপুর (ময়মনসিংহ) : ফুলপুর পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ইউএনও সুব্রত পালের বাসভবন ও অফিসার্স ক্লাবে বুধবার ককটেল হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা পরিষদ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করাসহ পুলিশ বাদী হয়ে স্থানীয় থানায় মামলা দায়ের করেছে। জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যার পর একদল দুর্বৃত্ত সুব্রত পালের বাসভবনের ভেতরে, সামনের গেটে ও অফিসার্স ক্লাবে ৬টি ককটেল নিক্ষেপ করে। এর মধ্যে ৫টি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এ সময় রিটার্নিং অফিসার সুব্রত পাল অফিসে ছিলেন। এ সময় এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে।

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) : গৌরীপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী মাসুদুর রহমান শুভ্র’র নেতৃত্বে বিজয়ী কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম রিপনের আত্মীয়, তার ছোট ভাইয়ের কোচিং সেন্টারে হামলা হয়েছে। এদিকে এই পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী জিয়াউর রহমান জিয়া ও তার কর্মী বাহিনী পরাজিত অপর প্রার্থী একেএম রুকনুজ্জামান রুকনের বাড়ি, বাসা ও দোকানে হামলা ও ভাংচুর করে। বুধবার রাতে এসব হামলা হয়।

কালিয়া (নড়াইল) : কালিয়া পৌরসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় এমপি কবিরুল হক মুক্তির ক্যাডাররা উপজেলার বাকা গ্রামের মোড়ে অবস্থিত স্বেচ্ছাসেবক লীগের অফিস, একই গ্রামের নৌকার সমর্থক আইউব শেখ ও ডা. রবির ডিসপেন্সারিতে হামলা, ভাংচুর ও লুট করে। একই সময়ে তারা নৌকার সমর্থক জোকা গ্রামের শিমুলকে (২৭) কুপিয়ে আহত করে। এছাড়া মুক্তির ক্যাডার বাহিনী বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে বিলবাউচ গ্রামের আ. জালালের পুত্র বাবুল (৪৫), তার সহোদর সাগর (২৫), আনন্দ দাসের ছেলে বাবুল দাসকে (৩৪) কুপিয়ে আহত করে। বুধবার রাতে নড়াগাতি থানার কলাবাড়িয়া গ্রামের নৌকার সমর্থক আছাদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালায় এমপির লোকজন। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ নেতা এমপি কবিরুল হক মুক্তি বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক। অপরদিকে বৃহস্পতিবার মহম্মদপুর গ্রামের লিকু শিকদারের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত ছাত্রলীগ নেতা মির্জাপুর গ্রামের নাদিমের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় ওই বাড়ির ৪ জনকে কুপিয়ে আহত করা হয়। এসব ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওয়াহিদুজ্জামান হীরা অভিযোগ করে বলেন, এমপি কবিরুল হক মুক্তি ক্ষমতা, অস্ত্র ও অর্থের বিনিময়ে ভোট কেন্দ্র দখল করে ভোট কেটে নৌকাকে পরাজিত করেছে। তিনি অসংখ্যবার নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। এর প্রমাণসহ নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাইনি।

গাইবান্ধা : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভায় বৃহস্পতিবার পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী আন্টু মিয়ার সমর্থকদের সঙ্গে বিজয়ী কাউন্সিলর জোবায়দুর রহমানের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম শাহিনসহ (৩৮) উভয়পক্ষের চারজন আহত হয়েছেন। তাদের গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বরুড়া (কুমিল্লা) : বরুড়া পৌর নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর রাতে পৌরসভার শালুকিয়া গ্রামের কাউন্সিলর প্রার্থী মাহফুজুর রহমানের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালায় একই গ্রামের কাউন্সিলর প্রার্থী আমান উল্লাহর কর্মীরা। এ সময় তারা এই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সভাপতি শফিকুল ইসলামকে মারধর করে। তার ঘরের আসবাবপত্রও ভাংচুর করা হয়। এছাড়া শফিকুলের ভাই রফিকুল ইসলাম ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেকের ঘরে হামলা চালিয়ে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুটে নেয় ওই হামলাকারীরা।

বাগেরহাট : বাগেরহাট পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মীনা হাসিবুল হাসান শিপনকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিজয়ী আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র খান হাবিবুর রহমানের বাড়িতে হামলার ঘটনায় বুধবার রাতে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান খান জানান, বুধবার রাতে পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গণনাকালে মীনা হাসিবুল হাসান শিপনের নেতৃত্বে তার সমর্থকরা খান হাবিবুর রহমানের নাগেরবাজারস্থ বাড়িতে বোমা হামলা চালায়। এ ঘটনায় মীনা হাসিবুল হাসান শিপনকে প্রধান আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গৌরনদী (বরিশাল) : গৌরনদী পৌরসভায় পরাজিত কাউন্সিলরের সমর্থকরা বিজয়ী কাউন্সিলরের চার সমর্থকদের বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। হামলায় এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। বুধবার রাতে পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ পালরদী মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে।

বিজয়ী কাউন্সিলর মো. লিটন বেপারী জানান, তার বিজয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী নুরে আলম সিকদারের ২০ থেকে ২৫ জন সমর্থক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ফারুক সরদার, নাগর ঘরামী, খলিল মাঝি ও তোতা সরদারের বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে। হামলায় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ পপি বেগমসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ৪ জনকে গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জ পৌর নির্বাচনে ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হযরত আলীকে ভোট না দেয়ার অভিযোগে বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মানিকগঞ্জ পৌরসভার ঋষিপাড়া এলাকার দুলাল চন্দ্র দাসের বাড়িতে লোহার রড, শাবল ও বাঁশের লাঠি নিয়ে হামলা চালানো হয়। হযরত আলী এবং তার দুই ছেলে আসাদুজ্জামান আসাদ ও মো. টিপুসহ আরও ২০/২৫ জন হামলা চালায় বলে জানা গেছে। হামলাকারীরা দুলাল চন্দ্রের বসতঘর ও রান্নাঘরের টিনের বেড়া ভাংচুর করে। এছাড়া পরিবারের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হযরত আলী।

শাহজাদপুর : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের দুই পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী আনোয়ার হোসেন দুদু ও মোস্তাফিজুর রহমান পিযুষের সমর্থকদের মধ্যে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে দুটি ঘর ভাংচুর ও ৬ রাউন্ড গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকের এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৭ জন আহত হন।

No comments

Powered by Blogger.