অনৈতিক কিছু করতে রাজি হইনি তাই ফাইনালে নেই by মারুফ কিবরিয়া

গত এক মাসজুড়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) উপস্থাপনা করে আসছিলেন আলোচিত উপস্থাপিকা ও অভিনেত্রী আমব্রিন। কিন্তু আজ ফাইনালে দেখা যাবে না তাকে। নৈতিকতার বিরুদ্ধে যায় এমন কিছু করতে নারাজ ছিলেন বলেই তাকে বাদ দেয়া হয়েছে বলে জানান আমব্রিন। এ প্রসঙ্গে মানবজমিনকে তিনি বলেন, আমি অনৈতিক কোনো কাজ করতে পারবো না। আমার যোগ্যতা দিয়েই যে কোনো কাজ করতে চাই। বিপিএলের ফাইনালের আগে আমাকে এমন কিছু করতে বলা হয়েছে, যা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আপস করিনি বলেই আমাকে বাদ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মাসজুড়ে আমি মাঠে কাজ করেছি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আমার বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ আমি উচ্ছৃঙ্খল চলাফেরা করেছি। তাই আমাকে বাদ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমাকে ক্লিয়ার করেনি আমি কী এমন উচ্ছৃঙ্খলতা করেছি যে আমাকে বাদ দেয়া হয়েছে? আমি কী মাঠে লেট করে গিয়েছি? কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছি? নাকি মদ খেয়ে মাঠে প্রবেশ করেছি? এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমাকে নির্দিষ্ট করে বলেনি। বিপিএলের ফাইনালে নেই আমব্রিন। খবরটি নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন তিনি। পোস্টটি করার সঙ্গে সঙ্গেই তোলপাড় লেগে যায় গতকাল। এদিকে বিপিএল শুরুর আগে একাধিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন আমব্রিন। এর মধ্যে রয়েছে দেশটিভিতে ‘সিনেমা এক্সপ্রেস’, এনটিভির ‘উদ্দীপন’ ও আরটিভির ‘মিউজিক স্টেশন’ অনুষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি ‘নীড় খোঁজে গাঙচিল’ ও ‘আয়নাঘর’ নামে দুটি ধারাবাহিক নাটকের কাজও করছেন আমব্রিন। ২০০৭ লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার সেরা দশে ছিলেন তিনি। তবে বিজ্ঞাপনে মডেলের পাশাপাশি উপস্থাপিকা হিসেবেই তার উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি। আফজাল হোসেনের ‘চলো বিয়ে করে ফেলি’ নাটকের মাধ্যমে আমব্রিনের মিডিয়ায় অভিষেক ঘটে। বাংলালিংক, বসুন্ধরা গ্রুপ, প্রাণ গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের বিজ্ঞাপনে মডেল হয়ে তিনি বেশ সুখ্যাতি অর্জন করেছেন। বাংলালিংক কল ব্লকের বিজ্ঞাপনচিত্রে আমব্রিনকে প্রথম মডেল হিসেবে উপস্থাপন করেন নির্মাতা তানভীর হাসান। এখন পর্যন্ত ১৩-১৪টি বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। এ মাধ্যমে তাকে সব শেষ দেখা গেছে, নাদিমের পরিচালনায় ‘বস ফ্রিজের’ বিজ্ঞাপনচিত্রে। তবে এ সময়ে যেখানে আমব্রিনের শৈল্পিক উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, তা হচ্ছে উপস্থাপনা। তার এ কাজটি দর্শককে মুগ্ধ করছে নিয়মিত। আমব্রিন প্রথম উপস্থাপনা করেন এনটিভির ‘মিউজিক-ই ফোনি’ অনুষ্ঠানে। এতে টানা দুই বছর উপস্থাপনা করে বেশ দর্শকপ্রিয়তা পান তিনি। আমব্রিনের জন্ম লিবিয়ায়, তার মায়ের বাড়ি শ্রীলঙ্কা। তবে পরিবারে মা ও ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় নাম লেখান। আর সেই থেকে মিডিয়ায় নিয়মিত কাজ করে আসছেন তিনি। অবশ্য আমব্রিনের আজকের অবস্থানের পেছনে এ প্রতিযোগিতাই বড় অবদান রেখেছে বলে মনে করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতা আমার জন্য বিশাল একটা প্লাটফরম ছিল। সেখানে শীর্ষ দশে অবস্থান করে এখন মিডিয়ায় নিয়মিত কাজ করছি। সত্যিই ওই প্লাফরমটির কাছে আমি অনেক বেশি কৃতজ্ঞ। আজ আমার অবস্থানের পেছনে এর অবদানের কথা অস্বীকার করা যাবে না। তবে আমি আজকের আমব্রিন হতে পেরেছি কিংবা আজ আমার যা অর্জন তার পেছনে আমি অনেক শ্রম দিয়েছি। প্রতিযোগিতা থেকে বেরিয়ে এসে নিয়মিত কাজের পাশাপাশি অনেক শেখা হয়েছে। অনেক জানাও হয়েছে। প্রতিনিয়ত ভালো কাজটা উপহার দেয়ার জন্য নিজেকে রাতে-দিনে তৈরি করেছি। সব মিলিয়ে বলবো, এই ৮ বছর মিডিয়া ক্যারিয়ারে অনেক পেয়েছি। তবে এখানেই শেষ নয়। আমাকে অনেক দূর যেতে হবে। সেজন্য আরও পরিশ্রম করতে হবে। সুন্দরী প্রতিযোগিতা থেকে দেশের আলোচিত উপস্থাপক হিসেবে খ্যাতি। ভবিষ্যৎ নিয়ে কী ভাবছেন আমব্রিন- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আসলে আমাদের দেশ থেকে তেমন কাউকে বিশ্বমাধ্যমে উপস্থাপনায় সুনাম অর্জন করতে দেখা যায়নি। সে জায়গা থেকে আমি সে চেষ্টায় থাকবো। বিপিএল তো শেষ হয়েছে। যদিও শেষটা ভালো হয়নি। তবুও এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আইপিএল কিংবা বিশ্বের অন্য বড় বড় আয়োজনে হোস্ট হিসেবে নিজেকে দেখতে চাই।

No comments

Powered by Blogger.