দেশের অর্থনীতি মহাবির্পযয়ের মুখে পড়বে : আনু মুহাম্মদ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, উন্নয়ন আর দেশের স্বার্থের কথা বলে জনগণের ওপর কর চাপানো হচ্ছে। করের বোঝা জনগণ সামলাতে না পারলে অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে। আর এঅবস্থা চলতে থাকলে অর্থনীতি মহাবির্পযয়ের মুখে পড়বে। জনগণ একটি পরিবর্তনের অপেক্ষা করছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তন অপরিহার্য। গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার উদ্যোগে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ‘জাতীয় কনভেনশন’-এ বক্তব্য রাখতে গিয়ে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এ কথা বলেন। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আরো বলেন, বর্তমান সরকারের অনেকে বলছেন গণতন্ত্রকে কাটছাট করতে হবে। মালয়েশিয়ার মডেলে গণতন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু তারা যে মালয়েশিয়ার কথা বলে সেই (মালয়েশিয়া) তাদের নিজ দেশের জাতীয় সম্পদ অন্যে দেশের হাতে তুলে দেয়নি। স্বক্ষমতা অর্জন করে সেই মালয়েশিয়া এখন অন্য দেশের খনিজ সম্পদ উত্তোলনে যোগ্যতা অর্জন করেছে। আর আমাদের দেশের শাসকরা দেশের সম্পদ অন্যের হাতে তুলে দিচ্ছে নিজ ক্ষমতা পাকাপোক্ত করা জন্য। ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে ও দেশি বিদেশি লুটেরাদের আর্শিবাদের আশায় সরকার দেশের সম্পদ অন্যের হাতে তুলে দিচ্ছে তারা। জনগণের কষ্ট হবে জেনেও সরকার একের পর এর করারোপ করে যাচ্ছে, গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে পারে না। এজন্য পরিবর্তন দরকার। জনগণকে সেই পরিবর্তনের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
বাম মোর্চার সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল গণতান্ত্রিক ধারায় শান্তিপূর্ণ পথে সরকার পরিবর্তনের পথ বন্ধ না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ভোট ও ভাতের অধিকারের কথা বলে ক্ষমতায় এখন তারা জনগণের ভোটাধিকারকেই ভয় পাচ্ছে। এটা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ও নৈতিক পরাজয়।
তিনি বলেন, দুর্নীতি, ব্যাংক লোপাট, অর্থপাচার ও জবরদখল, সন্ত্রাস, গুম-খুনের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে আড়াল করতেই সরকার বিশ্বব্যাংক প্রদত্ত নিম্নমধ্য আয়ের সার্টিফিকেট ফেরি করছে। বর্তমান সংসদ ও সরকার নির্বাচিত নয় বলেই তারা স্বেচ্ছাচারী পন্থায় অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের মত এই সরকারের কাছে দেশের কোনো গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত নেই, জানমালের নিরাপত্তা নেই, জাতীয় সম্পদ ও জাতীয় স্বার্থ নিরাপদ নয়।
কনভেনশনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রকৌশলী বিডি রহমতুল্লাহ, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর আহ্বায়ক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদের (মাহবুব) ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ইয়াসিন মিয়া, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক। দেশের ৫৫টি জেলা থেকে ৫৫০ জন প্রতিনিধি কনভেনশনে অংশগ্রহণ করছেন।
কনভেনশনের উদ্বোধনী অধিবেশনে অন্যান্যের মধ্যে ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া, অ্যাডভোকেট তাসমিন বীনা, প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, নাগরিক ঐক্যের ইফতেখার আহমেদ বাবু প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অধিবেশন পরিচালনা করেন ইউসিএল-এর নজরুল ইসলাম এবং বাসদ (মার্কসবাদী) এর ফখরুদ্দীন কবির আতিক।

No comments

Powered by Blogger.