বাতাসের প্রচণ্ড চাপে ফেটে যায় রাকিবের মূত্রথলি

বাতাসের প্রচণ্ড চাপে রাকিবের পেটের নাড়ি, মলদ্বার, প্রস্রাবের থলে ফেটে যায় এবং চুপসে যায় ফুসফুস। এতে পেটের ভেতরে অতিমাত্রায় রক্তক্ষরণ হয়। রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়। খুলনায় নিহত শিশু রাকিবের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে এসব কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে রাকিব হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে গতকাল শনিবারও বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে একাধিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান।
গতকাল রাকিবের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন খুলনা মেডিকেল কলেজ থেকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাজী মোস্তাক আহম্মদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী ও খুলনা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন প্রথম আলোকে বলেন, বাতাসের চাপে শিশু রাকিবের ফুসফুস চুপসে যায়। দুই হাতের ১০টি আঙুল ও কবজি এবং দুই পায়ের গোড়ালিতে রক্ত জমাট হয়ে যায়। পেটের মধ্যে মলদ্বার থেকে গলা পর্যন্ত রক্ত ছড়িয়ে পড়ে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়।
বিক্ষোভ-মানববন্ধন: শিশু রাকিব হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গতকাল সকাল থেকেই অন্তত ১০টি বিভিন্ন সংস্থা ও স্কুল মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
দুপুর ১২টায় এফপিএবি খুলনা শাখার আয়োজনে কমিউনিটি অ্যাকশন ফর চাইল্ড প্রটেকশন ফ্রম ভায়োলেন্স প্রকল্পের অধীনে শিশু রাকিব হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। নগরের টুটপাড়ার সেন্ট্রাল রোডে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ ছাড়া ওই একই স্থানে একই সঙ্গে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) খুলনা শাখা, টুটপাড়া এলাকাবাসী ও রাকিবের পরিবারবর্গ, সুলতানা হামিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও পশ্চিম টুটপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় আহ্ছানিয়া মিশন, খুলনা শাখা ও সাতক্ষীরা জনকল্যাণ সমিতি, বেলা ১১টায় জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা ও জাতীয়তাবাদী মহিলা দল নগরের পিকচার প্যালেস মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। আর সাড়ে ১১টায় খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে জাতীয় কন্যা শিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম।
গত সোমবার বিকেলে মোটরসাইকেলের হাওয়া দেওয়া কমপ্রেসর মেশিনের পাইপ শিশু রাকিবের পায়ুপথে ঢুকিয়ে পেটে হাওয়া দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নগরের টুটপাড়া সেন্ট্রাল রোডের মোটরসাইকেল গ্যারেজ শরীফ মোটরসের মালিক শরীফ, তাঁর সহযোগী মিন্টু মিয়া এবং শরীফের মা বিউটি বেগমকে ক্ষুব্ধ জনতা গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। এর মধ্যে বিউটি বেগমকে বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। শুক্রবার তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। অপর দুই আসামি শরীফ ও মিন্টু খান এখনো চিকিৎসাধীন আছেন।

No comments

Powered by Blogger.