সজনে ডাঁটা : পতিত জমিতে আবাদ হলেও ফেলনা নয় by আনোয়ার হোসেন শাহীন

বসতবাড়ির আশপাশে অনাদরে অবহেলায় বেড়ে ওঠা সজনে এখন আর ফেলনা নয়। সজনে সবজি হিসেবে যেমন উপাদেয়, এর ভেষজগুণও অসাধারণ। ব্যাপক চাহিদা থাকায় মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার কৃষকেরা এখন পতিত জমিতে পরিকল্পিতভাবে সজনের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সজনে চলে যাচ্ছে ঢাকাসহ দেিণর ১০ জেলায়। জানা গেছে, সদর, নহাটা, বিনোদপুর, রাজাপুর, বালিদিয়া, বাবখালি, পলাশবাড়িয়া ও দীঘা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে আগে কৃষকেরা বসতবাড়ির আশপাশে নিজেদের খাওয়ার জন্য সজনে গাছ রোপণ করতেন। অযতœ অবহেলায় বেড়ে উঠত কোনো যতœ ছাড়াই। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনদের জন্য পাঠানো হতো। এখন অবস্থা ভিন্ন। সজনে এখন ভেষজ দামি সবজির স্থান লাভ করেছে। মওসুমের শুরুতে প্রতি কেজি সজনে বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। এখন দাম কমে গেলেও প্রতি কেজি সজনে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।
কৃষকেরা জানান, গত কয়েক বছর ব্যাপক চাহিদা থাকায় তারা বসতবাড়ির আশপাশে ও েেতর আইলে সজনে গাছ রোপণ করছেন। অন্য সবজি বিক্রি করতে বাজারে যেয়ে বসে থাকতে হলেও সজনে ব্যাপারীরা বাড়ি এসে চড়া দামে কিনে নিয়ে যায়। ব্যাপারীরা সজনে ঢাকা, বরিশাল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, খুলনা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, যশোর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় চালান করে।
সজনে সবজি হিসেবে যেমন উপাদেয়, এর ভেষজগুণও তেমন অসাধারণ। মওসুমি নানা রোগব্যাধির নিরাময় ও শরীরে রোগপ্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধিতে অত্যন্ত কার্যকর। বিশেষ করে বসন্ত, জন্ডিস, মূত্রসংক্রান্ত সমস্যায় প্রাচীনকাল থেকে সজনের নানা অংশের ব্যবহার করে আসছেন ইউনানি ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসকেরা।
বালিদিয়ার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম জানান, মূল্যবান ভেষজ হিসেবে সজনের কদর দিন দিন বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে দাম। এতে কৃষক সজনে চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
মহম্মদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম জানান, উপজেলায় সজনে আবাদের সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। তবে এমন কোনো বাড়ি নেই যেখানে দুই-তিনটি সজনে গাছ নেই। দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকে পরিকল্পিতভাবে সজনের আবাদ করছেন।

No comments

Powered by Blogger.