কৌশলগত সহযোগিতা জোরদারের অঙ্গীকার

টোকিওতে গতকাল বৈঠকের আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রী
শিনজো আবে ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এএফপি
এশিয়ার দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দুই দেশ জাপান ও ভারত কৌশলগত সম্পর্ক শক্তিশালী করতে সম্মত হয়েছে। দুই দেশের নেতা পারমাণবিক জ্বালানি খাতে দুই দেশের সহযোগিতা বাড়াতে আলোচনা জোরদার করতেও রাজি হয়েছেন। গতকাল সোমবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। মোদি পাঁচ দিনের সফরে জাপান রয়েছেন। খবর এএফপি, রয়টার্স, এনডিটিভির। জাপানের রাজধানী টোকিওতে দুই নেতার শীর্ষ বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে বলা হয়, দুই প্রধানমন্ত্রী প্রতিরক্ষা খাতে দুই দেশের সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরে এ সম্পর্ককে আরও জোরদার ও শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নেন। বৈঠকে ভারতের নৌবাহিনীর জন্য যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে আলোচনা হয়।’ জাপান আগামী পাঁচ বছর ভারতকে অবকাঠামো নির্মাণ ও ‘স্মার্ট সিটি’ নির্মাণে তিন হাজার ৩৫৮ কোটি মার্কিন ডলার দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ভারতে বুলেট ট্রেন চালু করতে আর্থিক, কারিগরি সহায়তাও দেবে জাপান।
এর আগে গতকাল সকালে জাপানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আমি গুজরাটি। আমার রক্তে রক্তে মিশে আছে ব্যবসা।’ তিনি বলেন, ব্যবসায় কোনো ছাড় দেওয়ার বিষয় নেই। এর জন্য দরকার সঠিক পরিবেশ। মোদি দাবি করেন, তিনি ক্ষমতায় আসার পর ভারতে ব্যবসার ক্ষেত্রে ‘নিরাশার পরিবেশ’-এর অবসান হয়েছে। ক্ষমতায় আসার ১০০ দিনের মধ্যে ভারতে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা ব্যবসায়ীদের বলতে ভোলেননি মোদি। তিনি জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়াসহ নানা সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। প্রতিরক্ষা, কৌশলগত নানা খাতে জাপানের সঙ্গে সমঝোতা, বিনিয়োগ টানতে আন্তরিক আহ্বানের পাশাপাশি চীনকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি নরেন্দ্র মোদি। দুই দেশের সঙ্গেই চীনের সীমানা নিয়ে বিরোধ পুরোনো। অবশ্য এ ক্ষেত্রে তিনি চীনের নাম উল্লেখ করেননি। মোদি বলেন, ‘বিশ্ব দুই ধারায় বিভক্ত। একদিকে আছে সম্প্রসারণবাদ, অন্যদিকে ‘উন্নয়নমুখিতা’ বা ‘বিকাশবাদ’। আমাদের ঠিক করতে হবে, আমরা কোন পথে যাব।” এরপর চীনের দিকে তির নিক্ষেপ করে মোদি বলেন, অনেকেই অষ্টাদশ শতকের সম্প্রসারণবাদী ধারণায় বিশ্বাস করে। অন্যদের ভূমি, সমুদ্র দখলের ভাবনা নিয়ে আছে তারা। মোদি বলেন, যারা ভগবান বুদ্ধের পথে বিশ্বাস করে, তারা চায় উন্নয়ন। কেননা, এভাবেই শান্তি ও উন্নয়নের পথ প্রশস্ত হয়। তবে বিশ্বে এখন সম্প্রসারণবাদই বেশি চোখে পড়ে। মোদির কথিত সেই ‘সম্প্রসারণবাদের’ বিরুদ্ধে জাপান আর ভারত যে এককাট্টা, সেই কথাও মোদির মুখে শোনা যায়। বললেন, বলা হচ্ছে এশিয়া একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে। জাপান ও ভারতকে শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের ধারায় নেতৃত্ব দিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.