এবার দিল্লি চলো দেশ গড়
কলকাতার ব্রিগেডের বিশাল জনসভায় দাঁড়িয়ে আসন্ন সংসদীয় ভোটে দিল্লিতেও পরিবর্তনের ডাক দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। কয়েক লাখ মানুষের জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে মমতার আহ্বান, ‘আসন্ন লোকসভা ভোটে কংগ্রেস, বিজেপি ও সিপিএমকে একটি আসনও জিততে দেয়া যাবে না। তৃণমূল কংগ্রেসই সারা দেশের বিকল্প পথ। আজ বাংলা যা ভাবছে, কাল ভারতও তাই ভাববে।’ দেশের পরবর্তী সম্ভাব্য দুই প্রধানমন্ত্রী রাহুল গান্ধী ও নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে তাদের নাম উল্লেখ না করে তোপ দেগে মমতা বলেন, ‘দিল্লিতে রাজতন্ত্র চাই না, চাই না দাঙ্গাবাজের সরকার। ‘দাঙ্গার মুখ’ হিসেবে পরিচিত এমন কাউকে দেশের দায়িত্বে আনা যাবে না।’ গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে মোদি এবং গান্ধী পরিবারের উত্তরসূরি হিসেবে রাহুলই যে তার টার্গেট তা এদিন বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেছেন, ‘প্রতিহিংসা নয়, প্রতিকার চাই, দাঙ্গা নয়, সংহতির সরকার চাই। দুর্নীতি হঠাও, দেশ বাঁচাও। আগামী লোকসভা ভোট পর্যন্ত প্রত্যেক তৃণমূল কর্মী-সমর্থককে সতর্ক ভূমিকা নিয়ে সজাগ থাকার নির্দেশ দেন তিনি। মমতার আগে বক্তব্য দেন একাডেমি পুরস্কারজয়ী প্রবীণ সাহিত্যিক মহাশ্বেতাদেবী। দেশের দায়িত্ব নেয়ার জন্য মমতাই যে যোগ্যতম ব্যক্তিত্ব তা উল্লেখ করে মহাশ্বেতাদেবী বলেন,
‘মমতাই আগামী দিনের ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। মমতাই আমাদের প্রেরণা। মমতাই সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী। তার নির্দেশেই মমতা পরে ঘোষণা করেন, প্রত্যেককে ব্রিগেড থেকে ফিরে গিয়ে দশজনকে বোঝানো ও সই সংগ্রহ করতে হবে দিল্লিতে সরকার গড়ার লক্ষ্যে। মাত্র ১১ দিনের মধ্যে কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে পর পর তিনটি সমাবেশ। প্রথমটি ছিল শাসকদল তৃণমূলের। দ্বিতীয়টি ৫ ফেব্র“য়ারি বিজেপির নরেন্দ্র মোদির এবং শেষটি সিপিএমের ৯ ফেব্র“য়ারি। তিনটি সভাই সংসদীয় ভোটের টার্গেট নিয়ে। প্রথম সভা করে মমতা যে এক ধাপ এগিয়ে গেলেন তা এদিন সমাবেশের ভিড়ই বলে দিয়েছে। মমতা দাবি করেছেন, দলের নেতাদের রিপোর্ট থেকে তিনি জেনেছেন ২৫ লাখ লোক এসেছে মাঠে। তবে সরাসরি না বললেও তিনিই যে দেশের প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত বলে ডাক দিয়েছেন, এবার দিল্লি চলো, দেশ গড়ো। কংগ্রেসের বিকল্প বিজেপি নয়, সিপিএম নয়, একমাত্র বিকল্প তৃণমূল কংগ্রেস। দেশের সবাইকে নিয়ে ফেডারেল ফ্রন্ট গড়ার ডাক দিয়েছেন তিনি। বাংলা থেকে যে লড়াই শুরু হয়েছে তা গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়বে।

No comments