আমন্ত্রণ জানাতেই রাজি ফারিয়া

বাংলাদেশের মডেল ফারিয়া আলম যৌন আবেদনময়ী। স্মার্ট। গায়ের রঙ শ্যামলা। উত্তেজনাকর তার অভিব্যক্তি। তার সঙ্গে আমার রোমান্টিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
সপ্তাহে কমপক্ষে একবার আমাদের দেখা হতো। কখনও লিওনার্দো হোটেলে। কখনও একটি ভারতীয় রেস্তরাঁয়। এর মালিককে সে ভালভাবে চেনে। ন্যান্সি ডেলওলিও’র সঙ্গে আমার রোমান্টিক সম্পর্কের বাইরেও ফারিয়ার সঙ্গে এ সম্পর্কে জড়িয়ে গিয়েছিলাম। এসব কথা অকপটে স্বীকার করেছেন ফুটবল বস বলে পরিচিত ভেন গোরান এরিকসন। তার সঙ্গে বাংলাদেশী বংশোদভূত মডেল ফারিয়া আলমের প্রেম কাহিনী নিয়ে কয়েক বছর আগে তোলপাড় হয়েছিল সারাবিশ্বে। তা প্রকাশ হয়ে পড়ায় এরিকসনের ক্ষতি হয় কয়েক লাখ ডলারের চুক্তি। তবে তখনও মুখ খোলেন নি ফারিয়া আলম। কিন্তু এতদিন পর সব গোপন কথা ফাঁস করে দিয়েছেন সেই এরিকসনই। ভেন গোরান এরিকসন ও স্টেফান লোভগ্রেন দু’জনে মিলে লিখেছেন বই ‘ভেন: মাই স্টোরি’ নামের বই। এ বইটি আজ বৃটেনের বাজারে আসার কথা। দাম ২০ পাউন্ড। এতে এরিকসন কিভাবে ফারিয়ার প্রেমে পড়েন, কিভাবে তারা একে অন্যের একেবারে ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে চলে আসেন তার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। এ বইয়ে তিনি লিখেছেন, লন্ডনে ফুটবল এসোসিয়েশনের অফিসে প্রথম ফারিয়া আলমের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়। ফুটবল এসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক ডেভিড ডেভিসের কাচে ঘেরা অফিসের বাইরে একটি ডেস্কে সে বসা ছিল। বাংলাদেশী বংশোদভূত এই সাবেক মডেল শ্যামলা। দেখতে ভীষণ যৌন উত্তেজক। প্রতিবারই যখন ডেভিড ডেভিসের অফিসে এসেছি ততবারই তার সঙ্গে অনেক অনেক বেশি কথা বলেছি। এর মধ্যে ফুটবল এসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী মার্ক পালিওসের সঙ্গে সে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। আমি পরে এ বিষয়ে আর তেমন কিছু দেখি নি। তখন কেউই তাদের এ সম্পর্কের কথা জানতো না। যতদূর মনে করতে পারি সেটা ছিল ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারি। এ সময়ই আমি প্রথম ফারিয়াকে দুপুরের খাবারের আমন্ত্রণ জানাই। আমি নিশ্চিত ছিলাম সে আমার আমন্ত্রণ এড়িয়ে যাবে না। বলবে- ‘হ্যাঁ, আমি রাজি।’ ঠিক তাই বললো সে। তাই মার্বেল আর্চের কাছেই লিওনার্দ হোটেল বুকিং দিলাম। সেখানে আমরা দুপুরের খাবার খেলাম। এখানে একের পর এক ঘটনা ঘটতে থাকে। প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে আমাদের অন্তত একবার সাক্ষাৎ হতে থাকে। ইউরোপিয়ান ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের সময় আমি যখন পর্তুগালে তখন প্রায় প্রতিদিনই আমি ফারিয়ার সঙ্গে ফোনে কথা বলতাম। তখন ন্যান্সি আমার সঙ্গে পর্তুগালে। কিন্তু সে ছিল হোটেলে। সেখানে সে খেলোয়াড়দের স্ত্রী ও গার্লফ্রেন্ডকে দেখাশোনা করতো। এরিকসন আরও লিখেছেন, ইউরোর পর ন্যান্সি চলে যায় ইতালি। আমি যাই সুইডেনে। সেখানে বেরকেফোরে আমার লেকসাইডের বাসায় আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যায় ফারিয়া। এ বাড়িটি মেরামতে আমি খরচ করি ৫০ লাখ পাউন্ড। আমরা যখন ইংল্যান্ডে ফিরে যাই তখন অপ্রত্যাশিত একটি ফোনকল পাই আমি। কলটি করেন ডেভিড ডেভিস। তিনি বলেন, একটি পত্রিকা প্রায় বলেই দিয়েছে যে ফারিয়ার সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ডেভিড আমার কাছে জানতে চাইলেন, এ কথা সত্য কিনা। এ কথার পর আমার বাড়ির চারদিকে সুইডেনের ও ইংলিশ ফটোশিকারিতে ভরে গেল। তারা আমার একটি মাত্র শট চাইছিল। এমনকি তাদের একজন আমার বাড়ির ভিতরে আমার একটি ছবি ধারণ করতে একটি ক্রেন পর্যন্ত ভাড়া করেছিল। আমি ডেভিডের কথার জবাবে তাকে বললাম, এসব বাজে কথা। এর মাধ্যমে আমি অভিযোগ স্বীকারও করলাম না। কিন্তু আমাকে যে প্রশ্ন করা হয়েছে তাকে বলা যায় ননসেন্স। সর্বোপরি এটা আমার ব্যক্তিগত জীবন। ডেভিড যখন আমাকে ফোন করেছিলেন তখন আমার সঙ্গে লিওনার্দ হোটেলে ফারিয়া আলম। এ কথা তিনি জানতেন না। আমি ফারিয়াকে বললাম, তাকে ফোন করলে সেও যেন একই রকম উত্তর দেয়। অন্য কথায় এমনভাবে যেন সে কথা বলে যা দিয়ে সত্যা-মিথ্যা কিছুই বোঝা না যায়। এ বিষয়টি অন্যদের নয়। কিছুক্ষণ পরে ফারিয়ার ফোন বেজে ওঠে। ফোন করেছেন ডেভিড ডেভিস। ফোনটি ধরতে রুম থেকে বেরিয়ে যায় ফারিয়া। আমি ঠিক জানি না সে কি বলেছে। তবে ফারিয়া যখন ফিরে তখন দৃশ্যত সে কাঁপছে। আমি তাকে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে বলি, দ্রুততার সঙ্গে কিছু করে বসো না। শেষ রাতের দিকে সে ফিরে গেল। সে ছিল উদ্বিগ্ন। আমার মনে হলো, হোটেলের বাইরে ততক্ষণে অবস্থান নিয়েছে ফটোশিকারিরা। এর কিছু পরেই পত্রিকায় স্কুপ নিউজ হিসেবে ছাপা হলো যে, ফারিয়া আলমের সঙ্গে আমার প্রেম রয়েছে। আমি ধরে নিলাম, যে পরিস্থিতিই সৃষ্টি হোক আমি তা মানিয়ে নিতে পারবো। তখন ন্যান্সি লন্ডনে ছিল বলে আমার মনে হলো না। পরের দিন অফিসে গেলাম। আমি অফিসে ঢুকেই দেখি ফারিয়া কথা বলছে ডেভিড ডেভিসের রুমে। তাকে আইনি সহায়তা দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। সে বলছে, যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সত্য নয়। তাই ফুটবল এসোসিয়েশন দ্রুত একটি বিবৃতি ইস্যু করে। তাতে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। পত্রিকাটির বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেয়া হয়। এটা ছিল বড় একটি ভুল। শুধু তা-ই নয়। মার্ক পালিওসের সঙ্গে ফারিয়ার সম্পর্ক ছিল তা জানতো ওই পত্রিকাটি। তবে তাতে রক্ষা পেয়েছে মার্ক পালিওস। এরিকসন লিখেছেন, আমার জানার বাইরে প্রেস ডাইরেক্টর কলিন গিবসন ওই পত্রিকার সঙ্গে একটি চুক্তি করার চেষ্টা করেন। তাতে বলা হয়, আমার সঙ্গে ফারিয়ার সম্পর্ক নিয়ে তাদেরকে জানানো হবে। এর বিনিময়ে মার্ক পালিওসের নাম এ কাহিনী থেকে গোপন করতে হবে। তবে আমি মার্ক পালিওসকে রক্ষা করার পক্ষপাতী ছিলাম না। যে কোন ভাবেই হোক বাস্তবে আমরা এক হতে পারি না। সব সময়ই আমি মনে করতাম যে, প্রধান নির্বাহী পদে চাকরি করার যোগ্য নন মার্ক পালিওস। গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে ফারিয়া কয়েক লাখ পাউন্ডের বিনিময়ে তার কাহিনী বিক্রি করে দিচ্ছে। কিন্তু তাতে আমি মোটেও বিব্রত হই নি। পরে যখন ওই পত্রিকাটি এ বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে ঠিকই দেখতে পাই তাদের প্রথম পৃষ্ঠায় আমার ও ফারিয়ার ছবি।

No comments

Powered by Blogger.