মাথার ছায়া, হাতের লাঠি by কাজল ঘোষ

‘বাঁশবাগানের মাথার ওপর চাঁদ উঠেছে ঐ, মাগো আমার শোলক বলা কাজলা দিদি কই’। কবিরা বরাবরই কল্পনাপ্রবণ। কিন্তু যতীন্দ্রমোহন বাগচীর লেখা এই কবিতাটিতে কল্পনার মিশেল যত না ছিল তার চেয়েও অনেক বেশি ছিল বাস্তবতার উপস্থিতি।
ভাবুন তো একবার, ভরা পূর্ণিমায় আপনি বাঁশবাগানের ভিতর একা দাঁড়িয়ে। উপরে দিগন্তবিস্তৃত আকাশ। চোখ যেদিকে যায় কেবলই অগুনতি তারা। দূরে অবস্থান নিয়েছে সপ্তর্ষি। বাঁশঝাড়ে ঝিরিঝিরি বাতাসে পাতার মর্মর ধ্বনি। পা পড়ার মচমচ আওয়াজ। নীরবতায় গা ছমছম করা পরিবেশ। আপনার সঙ্গী তখন কেবলই কাছে, তবু দূরে আপনারই ছায়া। খানিকটা সৌভাগ্য হয়েছিল আমার সেই সৌন্দর্যের ছোঁয়া পেতে। মন জুড়িয়ে উপলব্ধি করতে, বাঁশঝাড়ের ঘন ছায়ায় প্রকৃতির সেই অপরূপ রূপ। বাঁশ নিয়ে কত না প্রবাদ-প্রবচনের ছড়াছড়ি। ‘বাঁশ পাকলে সরু, বাড়ির কর্তা পাকলে গরু’, ‘দাতার নারকেল, বখিলের (কৃপণ) বাঁশ’, ‘কাঁচায় না নোয়ায় বাঁশ, পাকলে করে ট্যাঁসট্যাঁস’, ‘বাঁশ বনে ডোম কানা’, ‘বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়’, ‘বাঁশ মরে ফুলে, মানুষ মরে ভুলে’। আর কেউ কারও বিরুদ্ধে বিবাদে জড়ালে বাঁশ দিতে ভুল করে না- এটা নতুন কিছু নয়। আমাদের বাড়ির পেছনেই ছিল বাঁশঝাড়। রোদ আর বৃষ্টিতে ভিন্ন ভিন্নরূপে দেখা যেতো বাঁশঝাড়ের গাঢ় সবুজকে। তীব্র, ঝাঁঝালো রোদে তপ্ত গা শীতল হয়ে যেতো বাঁশঝাড়ের নিচে দাঁড়ালে। রোদ ঘন বাঁশপাতা এড়িয়ে মাটি ছুঁতে অনেক কসরত করতে হতো। অন্যদিকে ঝমঝম বৃষ্টিতেও পাতা আর বাঁশ মাড়িয়ে ঝাড়ের আশপাশ ভিজাতে অনেকটা সময় চলে যেতো। সামনের বাড়ি আর পেছন বাড়ি বলে দু’ভাগ থাকা আর বাড়ির সামনের দিকটায় একটা করে বাংলাঘর থাকা আমাদের এলাকায় রীতি ছিল। আশির দশকের কথা বলছি। এখন সময় বদলেছে। বাংলাঘর আর ইংলিশ ঘর নয়। এখন থাকার ঘরই মিলছে না অনেক এলাকায়। মানুষের ক্রমাগত বৃদ্ধিতে প্রতিটি পাড়াই এখন একেকটি বস্তিতে পরিণত। ছোটবেলায় আমাদের উঠোনে দাঁড়ালে অন্তত পঁচিশটি বাড়ির উঠোন দেখা যেতো। আমরা যে কোন বাড়িতে যাওয়ার জন্য চারপাশের বহু পথ দিয়েই যেতে পারতাম। বাড়ির পেছনে সবারই অনির্ধারিতভাবেই ছিল বাঁশঝাড়। ভোরের আলো আর সন্ধ্যায় টের পেতাম- বাঁশঝাড়ে লুকিয়ে থাকা পাখির কিচির-মিচিরে। রাত বিরাতে সবাই বাঁশঝাড় এলাকা এড়িয়ে চলতো। সন্ধ্যায় কেউ বিনা প্রয়োজনে একা বাঁশঝাড়ে গিয়েছে তো এটা মাথায় সমস্যা অথবা তাকে কি পেত্নিতে পেয়েছে- এমন কথা বলতে শুনেছি। ময়লার ভাগাড়ে বেড়ে ওঠা এই বাঁশদল যে কত কাজের তা বলে শেষ করা যাবে না। নিজেদের নিরাপত্তা আর রোদ বৃষ্টিতে বাঁচার যে ছাদ তা তো এই বাঁশ দিয়েই তৈরী। এখন তার স্থলে ঠাঁই নিয়েছে বাহারি ইট-পাথর-সুরকি। বয়সের ভারে ন্যুব্জ ঠাকুরমাকে দেখেছি এই বাঁশঝাড়ের লাঠি ভর করেই মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে। আমার জন্ম বেড়ে ওঠা ছনের ঘরে। ছিল তরজার বেড়া। কাঠের দরজা। বর্ষা এলেই বাবাকে দেখেছি বাঁশঝাড় থেকে একটা দুইটা বাঁশ কেটে এক আধজন মুনি বা কামলা নিয়ে ছনের খসে যাওয়া ঘরে আবারও বাঁশের ধন্না দিয়ে মজবুত করতে। নতুন কোন ঘর তুললেই দেখেছি শুভদিনে ‘ইশান পালা’য় শুভ যাত্রা অনুষ্ঠান করতে। বাবার সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, যে কোন নতুন ঘর তুলতেই ইশান কোণে একটি মজবুত বাঁশ (পালা নামে পরিচিত) বা পালা স্থাপন করা হতো। পালার মাথায় বাঁধা হতো লাল কাপড়ের ডোরা। পঞ্জিকায় দিন তারিখ দেখে এটি করা হতো। বাড়ির চার-পাঁচজন মিলে এই কাজটি করতো। দেয়া হতো জুকার (উলুধ্বনি)। কাজ শেষে ফুল বেলপাতায় পবিত্র জল ছিটিয়ে দেয়া হতো। সবশেষে পান বাতাসা। কখনও ঘর ভেঙে নতুন করে তৈরি করলেও ইশান পালাকে অন্যরকম মর্যাদা দেয়া হতো। সময় বদলেছে। এখন ভবন নির্মাণ করতে গেলেও প্রথম গাঁথুনি বা পিলার স্থাপনে মঙ্গল কামনা করে স্বর্ণ, রৌপ্য, টাকার প্রতীকী অংশ খুঁজে দেয়া হয়। মিষ্টিমুখ করা হয় শুভ কাজের শুরুতে। আমাদের বাড়ির পেছনে থাকা বাঁশঝাড়ে খুব বেশি বাঁশ ছিল তা বলা যাবে না। গোটা তিরিশেক হবে হয়তো। কিন্তু প্রতিটি বাস্তুভিটার পেছনেই এমন বাঁশঝাড় থাকায় পুরো পাড়া জুড়েই লম্বা বাঁশঝাড়ের মিছিল চলছে এমনটাই মনে হতো। এর ভেতর থাকতো নানারকমের পাখির বাসা। বিশেষত কাকের রাজত্ব ছিল। বর্ষায় অনেক সময় বকের বাসাও দেখেছি। পানি কাদায় আছন্ন ভরা বর্ষায় দেখেছি গুঁই সাপ আর ঢোঁরা সাপের আশ্রয়। বাঁশের পাতায় এক ধরনের সবুজ রঙের সাপ দেখেছি বেশ অনেকবার। এটাকে আমাদের অঞ্চলিক ভাসায় সুতানলি বলে থাকে। রঙ গাঢ় সবুজ। বাঁশপাতায় থাকলে অনেক সময়ই একে আলাদা করা অসম্ভব। মনে পড়ে বাঁশঝাড়ে কাকের বাসায় হামলে পড়বো এই ভয়ে কাকেরা দল বেঁধে পাহারা দিতো। রাগ সামলাতে না পেরে অনেক সময় মাথায় ঠোকর দিয়েছে। ছিলে যাওয়া মাথা নিয়ে বাঁচতে মায়ের আঁচল তলে আশ্রয় নিয়েছি। বকুনি খেয়েছি। তাতে কি আর দমি! আবারও বাঁশের জিংলা (বাঁশের চিকন অংশ) বা কঞ্চি নিয়ে কাকের বাসা ধ্বংসে লেগে গেছি। অদ্ভুত এক সম্পদের বাকসো এই কাকের বাসা। বাড়ির হারিয়ে যাওয়া, ফেলে দেয়া অনেক কিছুই পাওয়া যেতো ওদের বাসায়। কাকদের অবাক করা আগ্রহ কলপারে পড়ে থাকা ৫৭০ সাবানের ওপর। এই সাবানে কাপড়ও ধোয়া হতো, আবারও ক্বচিৎ কখনও গায়েও মাখা হতো। আমাদের ছোটসময়ে লাক্স আর কসকো ছিল সবচেয়ে দামি সাবান। এর ব্যবহার এক আধজন করলে নদীর পাড়ে দূর থেকে অনেককেই বলতে শুনেছি এই ‘সিন্ধুক সাবান’। একটু চেয়ে নিয়ে গায়ে মাখার আনন্দই অন্যরকম। কাকের বাসা ভাঙলেই খুঁজে খুঁজে বিভিন্ন সাইজের লোহা, চুরি করা সাবানের টুকরো, বৈদ্যুতিক তারের ফেলে দেয়া অংশ, বিভিন্ন সাইজের গুনা পাওয়া যেতো। যা আবারও ভাগ ভাগ করে ঘরের কাজে লাগাতাম। অনেক সময়ই মাকে দেখেছি জ্বালানির অভাবে বাঁশের মুথা বা গোড়ালি দিয়ে খড়ি তৈরি করতে। বাঁশের সাঁকো সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে নদীমাতৃক এই বাংলায়। বাঁশ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাড়ির ময়লার ভাগাড়ে থাকলেও এর গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। বাঁশের কচি ডগা দিয়ে তৈরি হয় চচ্চরি, ছোট মাছের ঝোল আর ভর্তা। চিংড়ি দিয়ে বাঁশের কোঁড়লের স্বাদ ভোলার নয়। অনেক আগে একবার রাঙামাটির প্যাদা টিংটিংয়ে বেড়াতে গিয়ে দেখেছি বাঁশের কোঁড়লে নানারকম পদ তৈরি করতে। চীনে সবচেয়ে দামি সুপটিই তৈরি হয় বাঁশের কোঁড়লে। একে বলা হয় ব্যাম্বু শ্যুট। এর ঔষধি গুণের কথা জেনেছি শিবকালী ভট্টাচার্যের ‘চিরঞ্জীব বনৌষধি’ বই থেকে। বাঁশকে বলা হয়ে থাকে গৃহচিকিৎসক। এর বিভিন্ন অংশ নানা রোগের নিবারক হিসেবে কাজ করে। অর্শ রোগে পরামর্শ দেয়া হয় রোগীর গায়ে তেল মাখিয়ে বাঁশ কচি পাতা সিদ্ধ জলে অবগাহন করতে। বাঁশার পাতার রস মধু মিশিয়ে খেলে কাশি ভাল হয়ে যায়। গেঁটে বাতে পাতার গরম প্রলেপ দিলে ব্যথা উপশম হয়। গরুর বাচ্চা বা বাছুর হওয়ার সময় দ্রুত ফুল বের করতে বাঁশপাতা খাওয়ানো হয়। ধনের দেবী লক্ষ্মীর ভূমিকাতেও দেখেছি বাঁশকে। এ যেন গৃহলক্ষ্মী। ঘরের বাঁশের খোলে বাঁশের ব্যাংক এটা জন্মের পর থেকেই দেখেছি। বছরের পর বছর এখানে কাঁচা পয়সা ফেলে তারপর যখন ঘর ভাঙা হতো বা বাঁশ কেটে এই পয়সা গণনা করে বের করা হতো। বাঁশ ব্যাংকিং আর্থিক অনটনে বেশ কাজে দিতো। ছেলেবেলায় দেখেছি শুক্রবারের হাটে আমাদের স্কুলের মাঠে বাঁশ বিকিকিনি হতো। এখনও তা আছে। দলবেঁধে বাঁশ একসঙ্গে বেঁধে নদীপথে নৌকার আকৃতি করে নিয়ে এসে আগেই রাখা হতো। কখনও কখনও আমাদের বাঁশঝাড় থেকে বাঁশ নিয়ে যাওয়া হতো হাটে বিক্রয় করতে। তখন তিরিশ-চল্লিশ টাকায় যে বাঁশ পাওয়া যেতো এখন তাই পাঁচ শ’ টাকায় কেনা কষ্টকর। এখনও ইশ্‌কুলের মাঠে হাট বসে। এখনও বাড়ি ফিরি। তবে সেই বাঁশঝাড় আর দেখি না। সংকীর্ণ হয়ে এসেছে বাঁশের বাজারও। এক সময় কুলিয়ারচরে একটি পাকা দালান ছিল। এখন সেখানে সবই পাকা দালান। এটাই আভিজাত্য। আর বাঁশের তরজায় তৈরি ঘর হচ্ছে অতি দরিদ্রের সূচক। সুখবরও আছে, বাঁশের প্রজাতি ধরে রাখতে নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। সিলেটে দেশের প্রথম জাতীয় বাঁশ উদ্যানের (ন্যাশনাল ব্যাম্বু পার্ক) কাজ চলছে। যেখানে দুর্লভ ও বিপন্ন হয়ে পড়া দেশী-বিদেশী ২৪ জাতের ৭০০ বাঁশের চারা রোপণ করা হয়েছে। ‘জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও ইকো-ট্যুরিজম উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় সিলেট শহরতলির বিমানবন্দর এলাকায় ফরেস্ট স্কুল অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট চত্বরে টিলাসহ তিন একর জায়গাজুড়ে এ উদ্যান গড়ে তোলা হচ্ছে। উদ্যানের প্রথম ভাগে রয়েছে সোনালিসহ দুর্লভ সব জাতের বাঁশ। ‘কলসি’ নামে এক প্রজাতির বাঁশ রয়েছে, যেগুলোর বেড়ে ওঠা বৈচিত্র্যময়। এছাড়া কলসির পাশাপাশি রয়েছে বোতল, কালী, রঙ্গন, কঞ্চি, মৃতিঙ্গা, টেংগা, বরুয়া, বুদুম, বেতুয়াসহ সিলেট অঞ্চলের প্রসিদ্ধ ২৪ জাতের বাঁশ। বাঁশ থেকে নিত্যব্যবহার্য ও সৌখিন পণ্যসামগ্রী উৎপাদন করা যায়। গ্রামাঞ্চলে বাঁশের তৈরী অনেক পণ্য ব্যবহার করা হয়। এসব পণ্য কম বেশি প্রতি বাড়িতেই ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে আছে হাতপাখা, চাটাই, ঝাঁকা, টুকরি, কুলা, চালুনি, ঝাড়ু, খালই, ঝুড়ি ইত্যাদি। সৌখিন মধ্যে বুক সেলফ, কলমদানি, ট্রে, ওয়ালম্যাট, খেলনা সামগ্রী ম্যাট এবং বিভিন্ন ধরনের শৌখিন হস্তশিল্পজাত পণ্য ইত্যাদি। প্রধানত শহরাঞ্চলে এর চাহিদা বেশি। গুরুত্বপূর্ণ কথাটাই বলা হয়নি বাঁশ নিয়ে। বাঁশের তৈরি বাঁশির সুরেই মন হারিয়ে যায় জীবন খেয়ার ভিন্ন স্রোতে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পাগল করা সেই বাঁশি আজও আমাদের দোলায়িত করে। যদি বাঁশ না আসতো তবে কি আমরা পান্নালাল বা চৌরাসিয়াকে পেতাম, আবদুর রহমান বা বারী সিদ্দিকীর বাঁশির সুরে চোখ। বাঁশির সুরে কি ঘরে ছেড়ে পালাতো প্রেমিক তার প্রিয়ার জন্য। পূজোর মণ্ডপে দেবীর কাঠামোও নির্মিত হয় বাঁশেই। জীবন সায়াহ্নে এসে চিরবিদায়ে এই বাঁশই সঙ্গে থাকে, বাঁশের চাঙ্গারিতে নিয়ে যাওয়া হয় শশ্মান ও কবরে।
সবশেষ : বাড়িতে এখন সেই বাঁশঝাড় নেই। জায়গাও নেই। নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে যখন ঢাকায় চলে আসি তখন কিছুদিন বাংলামোটর লিঙ্ক রোডে ছোট একটি বাঁশের ঝাড় ছিল। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে কাজের সুবাদে বিকালে প্রায়ই গিয়ে এর নিচে দাঁড়াতাম। প্রাণ জুড়াতাম ঝিরিঝিরি বাতাসে। আজ তা-ও নেই। বহুতল অট্টালিকার নিচে চাপা পড়েছে।

বাঁশের খোঁজ খবর
সংস্কৃত ‘তৃণধ্বজ’ বা বেণু। বেটানিক্যাল নাম Bambusa bambs। চিরহরিৎ উদ্ভিদ বাঁশ আসলে ঘাস পরিবারের বৃহত্তম সদস্য। বাঁশগাছ সাধারণত একত্রে গুচ্ছ হিসেবে জন্মায়। এরা যূথবদ্ধ হয়ে বেড়ে ওঠে। যেন যৌথ পরিবার। এক বাঁশঝাড়ে ১০ থেকে ৭০-৮০টি বাঁশগাছ একত্রে দেখা যায়। নানা প্রজাতির বাঁরেশর মধ্যে ‘তল্লা’ খুবই খ্যাত। তল্লা বাঁশ, যা বিশেষভাবে বাংলাদেশে জন্মে। এর বৈজ্ঞানিক নাম ব্যাম্বুসা পলিমরফা (ইংরেজি Bambusa Polymorpha )। এটি বাংলার বাঁশ নামেও পরিচিত। বাংলাদেশ ছাড়াও থাইল্যান্ড, ভারত ও মিয়ানমারে তল্লা বাঁশের খোঁজ পাওয়া যায়। ১৮৬৮ খ্রিষ্টাব্দে উদ্ভিদবিজ্ঞানী উইলিয়াম মানরো প্রথম এই বাঁশের বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন। এই বাঁশ অনেকাংশে নলাকার, ভেতর ফাঁপা, উচ্চতা ১৫ থেকে ২০ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর ব্যাস ৭ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। তুলনামূলকভাবে সুস্পষ্ট গাঁট থাকে ৪০ থেকে ৬৫ সেন্টিমিটার পরপর। মুলি বাঁশ, বৌড়া বাঁশসহ আরও বেশ কিছু প্রজাতির বাঁশও রয়েছে। বাঁশের দু’টি গাঁটের মধ্যবর্তী স্থান ছাই-সবুজ বর্ণ। বাঁশ চিরসবুজ উদ্ভিদ, সপুষ্পক, সবীজ। চিকন বাঁশপাতার বর্ণ সবুজ, পাতা একে অপরের ঠিক বিপরীতে গজায়। বেলে মাটি থেকে কাদা মাটি, নানা রকম মাটিতে বাঁশ অনায়াসে জন্মে। এরা পরিচর্যা ছাড়াই বেড়ে ওঠে। রোদে বৃষ্টিতে কোন সমস্যা হয় না।

No comments

Powered by Blogger.