ভারতবিরোধী কর্মকাণ্ড থামান

নয়াদিল্লির লাল কেল্লায় গতকাল স্বাধীনতা দিবসের
ভাষণ দেন মনমোহন সিং ষ রয়টার্স
পাকিস্তানের মাটিকে ‘ভারতবিরোধী কর্মকাণ্ডে’ ব্যবহারের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। কাশ্মীর নিয়ে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ দুটির মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে গতকাল বৃহস্পতিবার এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন মনমোহন। গতকাল ১৫ আগস্ট ছিল ভারতের স্বাধীনতা দিবস। এ উপলক্ষে রাজধানী নয়াদিল্লির লাল কেল্লা থেকে দেওয়া বার্ষিক ভাষণে মনমোহন সিং বলেন, ভারত সব সময় তার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখতে উদ্যমী। তবে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন প্রশ্নে এ বিষয়টি অপরিহার্য যে তাদের নিজ ভূখণ্ড ও তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূখণ্ডকে ভারতবিরোধী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা প্রতিরোধ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন বুলেটপ্রুফ বেষ্টনীর মধ্যে অবস্থান নিয়ে ভাষণ দেন। সম্ভাব্য জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় এলাকাটি নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য দিয়ে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়। বিরোধপূর্ণ কাশ্মীরে গত সপ্তাহে পাঁচ ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী মনমোহনের এই বক্তব্য এল। ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য ভারত পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে দায়ী করে আসছে। ঘটনাটি নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে থমকে যাওয়া শান্তি আলোচনা আবার শুরুর সম্ভাবনা দেখা দিলেও তাতে এখন অনিশ্চয়তার ছায়া পড়েছে। গত সপ্তাহের ওই ঘটনার পর থেকে কাশ্মীর অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণরেখায় উভয় দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান হলে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি পৃথক রাষ্ট্র গঠিত হয়। পৃথক হওয়ার পর দেশ দুটির মধ্যে তিনটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, যার মধ্যে দুটিই কাশ্মীর নিয়ে। বর্তমানে ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যটির কিছু অংশ ভারতের ও কিছু অংশ পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে উভয় দেশই পুরো কাশ্মীরকে নিজেদের বলে দাবি করে থাকে। মনমোহন সিংয়ের আগে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেওয়া পৃথক এক বাণীতে পাকিস্তানের উদ্দেশে বলেন, ‘ধৈর্যের সীমা আছে’। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও ভারতীয় ভূখণ্ড রক্ষা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ‘প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে বলেও তিনি ঘোষণা দিয়েছেন। স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং আগামী বছর অনুষ্ঠেয় নির্বাচন সামনে রেখে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বলিষ্ঠ ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মনমোহন ঘোষণা করেন, ‘একটি আধুনিক, প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ দেশে সংকীর্ণ ও সাম্প্রদায়িক ভাবাদর্শের’ কোনো জায়গা নেই। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ভাবাদর্শগুলো আমাদের সমাজে বিভাজন সৃষ্টি এবং গণতন্ত্রকে দুর্বল করে। তাই আমাদের এগুলো প্রতিরোধ করা দরকার।’ অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গত নয় বছরে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা (ইউপিএ) সরকারের সফলতা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি মনমোহন স্বীকার করেন, শিক্ষাসহ কিছু ক্ষেত্রে আরও অনেক কিছুই করার রয়েছে। এএফপি ও আইএএনএস।

No comments

Powered by Blogger.