সীমান্ত বিরোধ মিটিয়ে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা চায় দিল্লি-বেইজিং

চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং উভয় দেশের সীমান্ত বিরোধ ও অন্যান্য উত্তেজনা যতটুকু সম্ভব কমিয়ে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। দুই প্রধানমন্ত্রী গতকাল সোমবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে গতকালের আলোচনায় বাণিজ্য সম্পর্ক ও অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক বিষয় স্থান পায় এবং তাঁরা আটটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। কেকিয়াং গত রোববার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পৌঁছান। চীনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটিই তাঁর প্রথম বিদেশ সফর। চীনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন ও ভারতের মধ্যে ব্যবধানের তুলনায় অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় অনেক বেশি। উভয় দেশ একসঙ্গে কাজ না করলে এশিয়া শক্তিশালী হতে পারবে না এবং বিশ্বকে আরও ভালো একটি স্থানে পরিণত করা যাবে না। মনমোহন বলেন, চীন ও ভারতের উত্থানকে গোটা বিশ্বের জন্যই ইতিবাচক বলে মনে করেন তিনি। এশিয়ার দুই দেশের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে উভয় দেশের জনগণের পারস্পরিক বোঝাপড়ার ব্যাপারটি গুরুত্বপূর্ণ। বৃহত্তর আস্থা ও আত্মবিশ্বাস তৈরির জন্য উভয় পক্ষকেই সক্রিয় হতে হবে। জনসংখ্যা বিবেচনায় বিশ্বের শীর্ষ দুই দেশ চীন ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে গত মাসে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। লাদাখ সীমান্ত নিয়ে ১৯৫০ সাল থেকে দুই দেশের বিরোধ রয়েছে। কেকিয়াং বলেন, দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যার অস্তিত্ব অস্বীকার করা যায় না। তাই উদার ও পরিশীলিতভাবে সেগুলো মোকাবিলা করতে হবে এবং উভয় দেশের সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, সীমান্তে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখতে হবে। দুই দেশের বিশেষ প্রতিনিধিদের মধ্যে শিগগিরই আলোচনা হবে। সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে তাঁরা উভয় দেশের জন্য গ্রহণযোগ্য উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন।  সীমান্ত-সংকট ও অন্যান্য জটিলতা সত্ত্বেও ভারত-চীন বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার রয়েছে। বাণিজ্যে ভারতের অংশীদার শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে চীনও একটি। ২০১৫ সালের মধ্যে তাদের মধ্যে ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বাণিজ্যের ব্যাপারে ইতিমধ্যে নতুন চুক্তি হয়েছে। প্রথম বিদেশ সফরে ভারতে আসার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করে চীনা প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ককে বেইজিং কতটা গুরুত্ব দেয় তাঁর এই পদক্ষেপই সেটা ইঙ্গিত করে। তিন দিনব্যাপী ভারত সফরে দেশটির রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেসের প্রধান সোনিয়া গান্ধী এবং লোকসভায় বিরোধীদলীয় নেতা সুষমা স্বরাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন কেকিয়াং। এ ছাড়া তিনি দিল্লিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন এবং মুম্বাইয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর তিনি পাকিস্তান, সুইজারল্যান্ড ও জার্মানি সফরে যাবেন।

No comments

Powered by Blogger.