‘সরকার ক্রমাগত নিয়ন্ত্রণমূলক হয়ে উঠছে’

আগামী এক মাস রাজধানীতে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তারা সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে। বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের এ আচরণকে ‘নিয়ন্ত্রণমূলক’ হিসেবে চিহ্নিত করে এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) বলেছে, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধের সরকারি সিদ্ধান্ত সাংবিধানিক অধিকারকে সরাসরি লঙ্ঘন করে। জরুরি অবস্থা জারি ছাড়া কোনো অবস্থাতেই এই সাংবিধানিক অধিকার স্থগিত বা কেড়ে নেওয়ার সুযোগ নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা দেখা দিলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট/পুলিশ কমিশনাররা আগে ঘোষণা দিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করতে পারেন।
কিন্তু সরকারের একেকজন মুখপাত্র একেক ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, যা জনমনে বিভ্রান্তি ও অনিরাপত্তা বোধের জন্ম দিচ্ছে। সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের এ ধরনের ঘোষণা সরকারের ভেতরে অস্থিরতা এবং আত্মবিশ্বাসের অভাব বলেই মনে হয়।গতকাল রাজধানীর শাহবাগে ‘প্রতিবাদের অধিকার দাবিতে জনতা’র ব্যানারে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়। মানববন্ধন শেষে বক্তারা অভিযোগ করেন, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে সরকার ক্রমাগত নিয়ন্ত্রণমূলক হয়ে উঠছে। ইউটিউব নিষিদ্ধ, ব্লগে লেখার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের পর এবার রাজপথে মত প্রকাশের স্বাধীনতাও কেড়ে নিচ্ছে সরকার। এ ধরনের নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণের বিরুদ্ধে জনগণকে সোচ্চার হতে হবে।
সমাবেশে বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সেলিম রেজা নিউটন, ব্লগার পারভেজ আলম, মাহবুব রশিদ ও বাকি বিল্লাহ।সমাবেশ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা ও বাসদ বিকেলে তোপখানা রোড থেকে মিছিল নিয়ে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। সেখানে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সমাবেশ ও সংবাদ ব্রিফিং করে তারা। প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির নেতা মোশরেফা মিশু। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বাম মোর্চার ২২ মে মিরপুরে শ্রমিক গণসমাবেশ এবং ২৮ মে সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

No comments

Powered by Blogger.