ভোটের দিন আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনাতালেবানের

পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিন আত্মঘাতী হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে তালেবান। কট্টরপন্থী এই গোষ্ঠীর নেতা হাকিমুল্লাহ মেহসুদের এক চিঠি থেকে এই পরিকল্পনার কথা জানা যায়। তালেবান হামলা ঠেকাতে নির্বাচনের দিন সেনাবাহিনী ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবে বলে জানা গেছে। কাল শনিবার পাকিস্তানে ভোট গ্রহণ হবে। পাকিস্তানি তালেবানের প্রধান মেহসুদ সংগঠনটির মুখপাত্রের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে নির্বাচনের দিন হামলার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। এতে দেশের চারটি প্রদেশেই আত্মঘাতী হামলা চালানোর কথা বলা হয়। ওই চিঠি বার্তা সংস্থা রয়টার্স গতকাল বৃহস্পতিবার হাতে পেয়েছে। চিঠিতে মেহসুদ বলেন, ‘আমরা নাস্তিকদের গণতন্ত্র নামের এই ব্যবস্থা মানি না।’ চিঠিতে ১ মে তারিখ উল্লেখ রয়েছে। তালেবানের হুমকির কারণে পাকিস্তানের ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলো স্বাভাবিক নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারেনি। বিশেষ করে বিদায়ী ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান শরিক পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ও তার সহযোগী দলগুলো তালেবান হামলার শিকার হয়েছে। গত এপ্রিলে নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকে তালেবান হামলায় শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল পিপিপির নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির ছেলে আলী হায়দার গিলানিকে অপহরণ করা হয়। তাঁর নেতৃত্বে ছোট একটি সমাবেশ হচ্ছিল। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল মুসলিম লিগ (পিএমএল-এন) ও সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এবং ধর্মভিত্তিক দলগুলোর প্রতি তালেবানের কোনো হুমকি ছিল না। নওয়াজ ও ইমরান দুজনই পাকিস্তানে মার্কিন ড্রোন (মানুষবিহীন বিমান) হামলার বিপক্ষে এবং তালেবানের সঙ্গে সরকারের আলোচনার পক্ষে। এটাই তাদের পক্ষে তালেবানের সহানুভূতির মূল কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। ভোটের দিন তালেবানদের হামলা ঠেকাতে চার প্রদেশেই দায়িত্ব পালনের ঘোষণা দিয়েছে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল অসীম বাজা গতকাল জানান, সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা রয়েছে পাঞ্জাব প্রদেশে। এখানে নির্বাচনের দিন তিন লাখ নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হবে। এর মধ্যে ৩২ হাজার সেনাসদস্য থাকবেন। পাকিস্তানে তালেবানের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত পাখতুনখাওয়া প্রদেশে নির্বাচনের দিন ৯৬ হাজার নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন থাকবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নির্বাচনের দিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় ছয় লাখ নিরাপত্তাকর্মী দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে সেনাসদস্য থাকবেন মোট ৫০ হাজার।

No comments

Powered by Blogger.