বাশারকে অবশ্যই সরে যেতে হবে: জনকেরি

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, সিরিয়া সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের স্বার্থে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে অবশ্যই সরে যেতে হবে। সিরিয়ার রক্তপাত বন্ধে গতকাল বৃহস্পতিবার ইতালিতে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাসের জুদেহের সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্র এ কথা বলেন। রোমে বৈঠকে জন কেরি বলেন, সিরিয়ার সরকার ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মতৈক্যের ভিত্তিতে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের লক্ষ্যে সব পক্ষই কাজ করছে। এর পরিষ্কার অর্থ হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনায় বাশারের কোনো স্থান নেই। বৈঠকে কেরি বলেন, সিরিয়ার শরণার্থীদের জন্য ১০ কোটি ডলারের বাড়তি মানবিক সহায়তা দেওয়া হবে। আর এ সহায়তার অর্ধেক ব্যয় হবে জর্ডানে আশ্রয় নেওয়া সিরীয় শরণার্থীদের জন্য। সিরিয়ায় লড়াই শুরুর পর বহু শরণার্থী জর্ডানে আশ্রয় নেয়। ওয়াশিংটন সিরিয়ার জনগণের জন্য এখন মানবিক সহায়তা হিসেবে ৫১ কোটি ডলার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। এ ছাড়া বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে আরও ২৫ কোটি ডলার সহায়তা দেবে। তবে বৈঠকের শুরুতে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিরিয়ার রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিদিন সিরিয়া থেকে প্রায় দুই হাজার মানুষ জর্ডানে আশ্রয় নিচ্ছে। বর্তমানে জর্ডানে প্রায় পাঁচ লাখ ২৫ হাজার সিরীয় শরণার্থী আছে। জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশই সিরীয় শরণার্থী। আর পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে আগামী বছরের শেষ নাগাদ আমাদের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশই হবে সিরীয় শরণার্থী।’ এ ছাড়া এ ধরনের পরিস্থিতি কোনো দেশের পক্ষেই এককভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব নয় বলে তিনি জানান।
বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিরিয়া সংকটের সমাধান খুঁজে বের করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্মেলন করার কাজ অব্যাহত আছে। এর আগে গত মঙ্গলবার তিনি মস্কোয় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠকে সিরিয়ার সংকট নিরসনে একযোগে কাজ করার বিষয়ে সম্মত হন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন সিরিয়ার সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্মেলন করার বিষয়ে আগ্রহী। কাজেই আমরা সব পক্ষকে নিয়ে শিগগিরই এই সম্মেলন করতে পারব বলে আশা করছি।’  মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে সিরিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট ফোর্ড অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়ে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। রোমের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি-প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়েও আলোচনা করেছেন। এ মাসের শেষ নাগাদ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ইসরায়েল সফরের কথা রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.