বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ককটেল বিস্ফোরণ যানবাহনে আগুনের মধ্যে দিয়ে চলছে হরতাল

বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও যানবাহনে আগু, ককটেল বিস্ফোরণ, ধাওয়াপাল্টা ধাওয়ার মধ্যে দিয়ে দেশব্যাপী চলছে ১৮ দলের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল। রাজধানীতে বেশ কয়েকটি জায়গায় ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটেছে।
নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘিরে রেখেছে। তবে রাজধানীর বাইরে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ও নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। কুমল্লির পদুয়ার বাজারে রেললাইন উৎপাটনের ফলে ৭ বগি লাইনচ্যুত হয়। সিলেটে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। রূপগঞ্জে একটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয় পিকেটাররা। রাজধানীসহ সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
রাজধানীতে বেশ কয়েকটি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৭টার দিকে রামপুরা চৌধুরীপাড়া কমিউনিটি  সেন্টারের সামনে মহিলা দল একটি মিছিল বের করে। এ সময় তারা গাড়িতে আগুন দেয়া চেষ্টা করলে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে রমনা থানা মহিলা দলের সভাপতিসহ ২ জনকে আটক করে পুলিশ। সকাল ৮টার দিকে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার পদ্মা সিনেমা হলের কাছ  থেকে ২টি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। সাড়ে ৭টার দিকে  চৌধুরীপাড়ায় যুবদল একটি মিছিল বের করে। মিছিল শেষে তারা ব্যানার দিয়ে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তারা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এদিকে সকাল ৭টার দিকে মোহাম্মদপুর টাউন হলের সামনে সিএনজিতে আগুন দিয়েছে হরতাল সমর্থকরা। ধানমন্ডিতে চারটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় পিকেটাররা। একই সময় রাজধানীর দয়াগঞ্জে একটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়।
নারায়ণগঞ্জে বিএনপির পিকেটারদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধদের মধ্যে খোকন নামের একজনকে শহরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৬টায় শহরের পুরাতন কোর্ট এলাকা থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের নেতৃত্বে হরতালের সমর্থনে বিএনপির নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি বঙ্গবন্ধু সড়ক দিয়ে শহরের ২নং রেল গেটের দিকে যাওয়ার সময় পুলিশ বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরে বিএনপি নেতাদের লাঠিচার্জ করে এবং টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে বেশকয়েকজন পিকেটার গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়।
সিলেটে নগরীর শাহী ঈদগাহে পিকেটিংকালে বিজিবি’র সঙ্গে শিবিরকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, সকাল সাড়ে ৬টায় নগরীর পাঠানঠুলায় ঝটিকা মিছিল করে জামায়াত-শিবির রাস্তার ওপর টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেয়। একই সময় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সিলেট-সুনমাগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে শাবি শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। প্রায় আধঘণ্টা তারা সড়কটি অবস্থান নিয়ে কাগজ জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। এরপর ঘটনাস্থলে বিজিবির ৩টি গাড়ি পৌঁছুলে পিকেটাররা বিজিবির গাড়ি লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এসময় বিজিবি ফাঁকা গুলি ছুঁড়লে শিবিরকর্মীরা পালিয়ে যায়।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি রড বোঝাই ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। সোমবার মধ্যরাতে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের উপজেলার কাঞ্চন  পৌরসভার মায়ারবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য, গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি, সম্প্রতি দেশব্যাপী সংঘটিত গণহত্যার প্রতিবাদ ও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে মঙ্গলবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করে ১৮ দল। এর আগে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেনের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল-সন্ধ্যা দেশব্যাপী হরতাল ডাকে শিবির।

No comments

Powered by Blogger.