হেফাজতে ইসলামের লংমার্চঃ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের চেষ্টাও ব্যর্থ

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পূর্ব ঘোষিত আগামী ৬ এপ্রিল এর লংমার্চ নিবৃত করতে সরকার এখন বেশ তৎপর হয়ে উঠেছে। তবে সরকারের এই চেষ্টা অবশেষে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানা গেছে। হেফাজতে ইসলাম এখনও তাদের দাবী-দাওয়া তথা লংমার্চ নিয়ে অনঢ়।
হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ থামানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার আদেশে বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক, বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) চেয়ারম্যান এবং হেফজাতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমীর পীরে কামেল শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীর সাথে সাক্ষাত করেছেন। মন্ত্রী সাক্ষাত শেষে তার প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হেফাজতে ইসলামের আমীর ও নেতৃবৃন্দদের সাথে নিয়ে প্রায় ঘন্টা ব্যাপী নিষ্ফল বৈঠক করে। বৈঠক শেষে মন্ত্রী হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি তথা দাবী-দাওয়া গুলো যুক্তি সংঘত বলে সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেন।

রবিরাব (৩১ মার্চ) সকালে প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শে সকাল ১১টা বন ও পরিবেশ মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল হাটহাজারী মাদ্রাসার এসে পৌঁছে হেফজাতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমীর পীরে কামেল শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত পরবর্তী এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে মন্ত্রী তথা প্রতিনিধির পক্ষ থেকে আগামী ৬ এপ্রিল লংমার্চ প্রত্যাহার করতে বললেও হেফাজতে ইসলাম তাদের সিদ্ধান্তে অনঢ় থাকার কারণে তাদের এই বৈঠক নিষ্ফল হয়েছে বলে জানা যায়। এ সময় মন্ত্রী হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা লংমার্চ প্রত্যাহার কারা অনুরোধ করলে নেতাকর্মীরা প্রত্যাখান করে বরং লং মার্চে সাবিক সহযোগীতা কামনা করলে মন্ত্রী নিরব ভূমিকা পালন করেন। উক্ত বৈঠকে হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগবী, নায়েবে আমীর আল্লামা শামসুল ইসলাম সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি দলে মন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম. এ সালাম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আলহাজ জাফর আহামদ, হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন নোমন ও হাটহাজারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা আজম উদ্দিন।

মন্ত্রী বৈঠক শেষে হেফাজতে ইসলাম এর আমীরের কক্ষ থেকে প্রতিনিধি দল সহ বেরিয়ে আসলে বৈঠকে কি আলোচনা হয়েছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শে আমারা এই সফর। কোরআন সুন্নাহর অবমাননা ও নবী সর্ম্পকে কটুক্তি করা সরকার কখনও সহ্য করবে না। বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমান। তাই হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ সহ নান কর্মসূচি নিয়ে আমরা তথা সরকার অনেকাংশে একমত। কিন্তু প্রধান বিরোধী দল ও জামাত শিবির বেশ তৎপর। তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিক্ষার করতে প্রস্তুত।

তিনি আরো বলেন, প্রধান বিরোধী দল ও জামাত শিবির নাশকতা করতে পারে এমন তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। তাইতো আমরা প্রধানমন্ত্রীর আদেশে এত বেশি তৎপর হয়েছি। এছাড়া আমরা হুজুরকে এই বিষয়ে নিয়ে আলোচনার জন্য এসেছি। যাতে তারা এই বিষয়টি তথা কর্মসূচি নিয়ে সতর্ক থাকেন। আর হেফাজতে ইসলাম এর দাবীর সাথে সরকারও একমত। তবে বাস্তবায়নের জন্য সময়ের প্রয়োজন।

এদিকে সাংবাদিকরা পূণরায় বৈঠক সর্ম্পকে জানতে হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক, বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) চেয়ারম্যান এবং হেফজাতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমীর পীরে কামেল শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহ্্মদ শফীর কার্যালয়ে উপস্থিত হয়। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এখনও পর্যন্ত আমাদের সিদ্ধান্তে অনঢ়। আগামী ৬ এপ্রিল লংমার্চে অংশ নিতে তৌহিদি জনতার প্রতি আহবান জানাছি।

উল্লেখ্য, গত শনিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে একই বিষয়ে আলোচনা তারা ব্যথ হয়েছিল। মন্ত্রীর সাথে হেফজাতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমীর আল্লামা শাহ্ আহ্্মদ শফী’র বৈঠক চলাকালে মাদ্রসার শত শত উৎচোক শিক্ষার্থী সহ অনেকেই মাদ্রসার বাইরে দাড়িয়ে দৃশ্য অবলোকন করে।

No comments

Powered by Blogger.