জার্মান সেন্ট্রাল ব্যাংকের আপত্তি ॥ নোট জালকারীদের মৃত্যুদন্ডের প্রস্তাব প্রত্যাহার করছে বাংলাদেশ ব্যাংক

 জার্মান সেন্ট্রাল ব্যাংকের আপত্তির কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক নোট জালকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- করার প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। শুক্রবার এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেয়।
জানা যায়, বর্তমানে জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বান্দেশব্যাংক নোট জাল প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংককে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। বিশেষ করে জাল নোট শনাক্তকরণে বাংলাদেশ ব্যাংককে সহায়তা দিচ্ছে। সাম্প্রতিক নোট জাল ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি লাভ করায় সরকার তা প্রতিরোধে একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়। ওই আইনে বাংলাদেশ নোট জালকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- কারার প্রস্তাব করেছে।
জার্মানি একটি মানবাধিকার সচেতন দেশ হওয়ায় তারা এ বিষয়ে আপত্তি তুলেছে। এ ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে তারা বলেছে, পরবর্তী নোটিস না দেয়া পর্যন্ত জার্মান কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোট জাল বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে সহযোগিতা প্রদান স্থগিত করছে। বাংলাদেশ মুদ্রা জালকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- করার পরিকল্পনা করছে। প্রেস রিপোর্টের মাধ্যমে এই খবর জানার পর জার্মান কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে কারিগরি সহায়তার আওতায় এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও আলোচনার সময় এ ধরনের পরিকল্পনার ব্যাপারে জার্মান কেন্দ্রীয় ব্যাংক অবহিত ছিল না।
জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত এক দশক ধরেই বাংলাদেশ ব্যাংককে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করে আসছে। তারই অংশ হিসেবে, জাল নোট শনাক্তকরণের বিষয়ে মূল প্রকল্পের কাজ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হওয়ার কথা ছিল। বান্দেশব্যাংক মনে করে, মুদ্রা জাল একটি গুরুতর অপরাধ। এটি মৃত্যুদ-যোগ্য হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশ এই পরিকল্পনা বাদ না দিলে জার্মান কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার আগেই বন্ধ করে দেবে।
জার্মান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই অভিমত পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক নড়েচড়ে বসেছে। শুক্রবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে এক বিবৃতি দিয়ে নোট জালকারীদের মৃত্যুদ- প্রদানের প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর সচিবালয়ের মহাব্যবস্থাপক এএফএম আসাদুজ্জামান বলেন, এ বিষয়টির প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। অনবধানবশত পূর্ণ পর্যালোচনা ব্যতিরেকেই প্রস্তাবটি সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল, যা এখন প্রত্যাহার করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.