সম্পাদকীয় সমীপে- হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঘুড়ি উসব

ঘুড়ি গ্রামবাংলার একটি চিরায়ত লোকজ সংস্কৃতি। গ্রামবাংলায় যে সকল প্রতিযোগিতা হতো তন্মধ্যে অন্যতম ছিল ঘুড়ি উড়ানোর উৎসব। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনের পর থেকে এ উৎসবে গ্রামবাংলার মানুষেরা মেতে উঠত।
ফাল্গুন থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত অর্থাৎ সারা বছরই এ উৎসবে গ্রামের প্রতি পাড়া মহল্লার লোকজন জেগে থাকত। গ্রামের দামাল ছেলেদের সঙ্গে এ উৎসবে প্রৌঢ়, বৃদ্ধরাও যোগ দিত। ঘুড়ি উড়ানোর উৎসব ছিল গ্রামীণ মানুষের জীবনে এক অফুরন্ত আনন্দের উৎসব। আমাদের লোকজ জীবন ও লোকজ সংস্কৃতির অন্তরঙ্গ পরিচয় এ ঘুড়ি উড়ানোর উৎসবেই সার্থকভাবে ফুটে উঠত। নিচে ঘুড়ির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও ব্যবহার বর্ণনা করা হলোÑ

ঢাউস ঘুড়ি
ঢাউস ঘুড়ি ছিল খুব শক্তিশালী। এটা তৈরি করা হতো শক্ত এবং পাকা বরাক বাঁশের কঞ্চি দিয়ে। এর কোন নির্দিষ্ট মাপ ছিল না যে যত পারে বড় করে তৈরি করত। এর আকৃতি উপরের অংশ অনেকটা ঢোলকের মতো আর নিচের অংশ সাইড দিয়ে একটু কাটা এবং কার্বযুক্ত। বাঁশ থেকে সরু কঞ্জি তৈরি করে এ ঘুড়ি তৈরি করা হতো। একটি কঞ্চির সঙ্গে অপর একটি কঞ্চি পাটের সূক্ষ্ম রসি দিয়ে বাঁধা হতো। ঘুড়ির মাঝের বাঁশের কঞ্চিটি একটু মোটা (প্রায় ১ ইঞ্চির ৪ ভাগের ২ ভাগ) হতো। ছয় ইঞ্চির মতো উপরের দিকে বেশি রেখে ঘুড়ির মাথা তৈরি করা হতো। ঘুড়ির ছাউনি দেয়া হতো মোটা পোস্টার পেপার (লাল, নীল, হলুদ সবুজ) দিয়ে। এই মাথার মধ্যে ভোমর বেঁধে ঘুড়ি উড়ানো হতো। রাত দিন চব্বিশ ঘণ্টা ঘুড়ি উড়ত এবং ভোমর বাজত। ভোমরের শব্দ অনেক দূর থেকে শোনা যেত এবং লোকমুখে আলাপ আলোচনা চলত উমুক গ্রামের উমুকের ঢাউস ঘুড়ি উড়ছে। ঘুড়ি বাড়ির গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হতো। পাটের রশি বেশি তৈরি করতে না পারলে বাজার থেকে লাইলন রশি কিনে আনা হতো। ঘুড়ি যে রশি দিয়ে উড়ানো হতো তাকে ডোর বলা হতো। ডোর এত বেশি ছিল যে, প্রয়োজনে এই ডোর দিয়ে ঘুড়ি কয়েক গ্রামের সীমানা পর্যন্ত উড়ে যেতে পারত। এই ঘুড়ির কোন লেজ ছিল না।

পানস ঘুড়ি
পানস ঘুড়িটিও ছিল বেশ শক্তিশালী। যার লেজ তৈরি করা হতো চার রঙের কাপড় দিয়ে। লেজের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ২৫ থেকে ৩০ গজ। আকাশে যখন এটা উড়ত তখন খুবই আকর্ষণীয় এবং সুন্দর দেখাত। শরীরের গঠন ছিল লম্বা চার থেকে পাঁচ ফুট, প্রস্থ তিন ফুট। মাথা কার্পযুক্ত একটু বাঁকা। দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের দু’দিকের মাথা রাউন্ড গোলাকারভাবে লাগানো হতো। এটা তৈরি করা হতো পাকা বরাক বাঁশের সরু কঞ্চি দিয়ে। পানস ঘুড়ির আকৃতি উপরের অংশ ছিল ডিমের মতো গোল আর নিচের অংশ মূলবডির সঙ্গে মিল করে খানিকটা চোঙার মতো খাড়া। এটা উড়াতেও ভোমর ব্যবহার করা হতো। এই ঘুড়িরও কোন নির্দিষ্ট মাপ ছিল না। যে যত পারত বড় করে তৈরি করত।

পত্তন ঘুড়ি
পত্তন ঘুড়িটি সবারই খুব চেনা জানা। যে কেউ এটা সহজে তৈরি করতে পারে। এর আকৃতি ছিল চার কোণা বিশিষ্ট বর্গক্ষেত্রের মতো। বাঁশের সরু কঞ্চি দিয়ে ইহা তৈরি করা হতো। রঙিন কাগজ দিয়ে এর ছাউনি দিলে খুবই সুন্দর দেখাত। কাগজের লেজ দিয়ে বা লেজ ছাড়াও এটা উড়ানো যেত। গ্রামগঞ্জে ও শহরে এই ঘুড়ি বেশি উড়ানো হতো। বিশেষ করে শহরের ছেলেরা এটা ছাদে উঠে বেশি উড়াত, যা বর্তমানে তেমন দেখা যায় না। এর ডোর ছিল চিকন লাইলন সুতা।

বাক্স ঘুড়ি
বাক্স ঘুড়িটি ছিল আয়ত বা বর্গক্ষেত্রের মতো। স্থান, কাল, পাত্রভেদে এই ঘুড়ির বিভিন্ন নাম হয়। এর আকৃতি, খোপ বা ঘর যুক্ত ছিল। প্রতি খোপের আনুমানিক মাপ ছিল ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি। এর ছাউনি দেয়া হতো চার রঙের কাগজ দিয়ে। এটা উড়াতে ভোমর ব্যবহার করা হতো না। অনেক দূর থেকে এই ঘুড়িটিকে উড়তে দেখলে জাহাজের মতো মনে হতো।
ঘুড়ি ছিল গ্রাম বাংলার মানুষের চির সৌন্দর্যের প্রতীক। গ্রামের যে সকল ছেলে ঘুড়ি তৈরি করতে পারত না তারা গ্রাম্যমেলা থেকে ঘুড়ি কিনে আনত। অথবা এলাকায় যারা ভাল তৈরি করতে পারত তাদের থেকে কিনে আনত। গ্রাম্য মেলাতে আগে এই ঘুড়িগুলো অহরহ পাওয়া যেত। এখন তথ্য প্রযুক্তির যুগে মেলায় এই ঘুড়ির আমেজ আর নেই। ঘুড়ি কেনা, বেচা, তৈরি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এখন মাঝে মধ্যে শুধু পত্তন ঘুড়ির ব্যবহার দেখা যায়। ঢাউস, পানস, বাক্স ঘুড়ি প্রায় বিলুপ্তির পথে। ঢাউস, পানস, বাক্স ঘুড়ি যখন উড়ানো হতো তখন রাস্তা ঘাটে, মাঠে ময়দানে অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে ঘুড়ি উড়ানোর উৎসব দেখত। কালের বিবর্তনের ফলে নদী যেভাবে তার গতিপথ হারিয়ে ফেলেছে, বাংলার ঋতু বৈচিত্র্যেও পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতিও পরিবর্তন হচ্ছে। সুতরাং আমাদের আজ উচিত হাজার বছরের সেই গৌরবকে অবলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা। আমরা যদি আমাদের এই সকল গ্রামীণ উৎসব বা সংস্কৃতি রক্ষা করতে পারি তাহলে প্রাণ ফিরে পাবে আমাদের এই লোকজ সংস্কৃতি। সুন্দর এবং সতেজ হবে আমাদের এই সমাজ ও সাহিত্য। অটুট থাকবে আমাদের মাছে-ভাতে বাঙালী। আর যদি ব্যর্থ হই, তাহলে আগামী প্রজন্মের কাছে হব প্রশ্নের সম্মুখীন। হারিয়ে যাবে আমাদের সংস্কৃতি থেকে একটি ঐতিহ্য।

মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন
সিনিয়র শিক্ষক (মাধ্যমিক বিদ্যালয়)
ব্রাহ্মণপাড়া, কুমিল্লা।

আমার ঠিকানা কোথায়?
আমার প্রশ্ন আমার ঠিকানা কোথায়? আমি নাকি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা? আমার জমি বাড়িঘর ঠিকানা নেই! অন্যের আশ্রয়ে ভাসমান সপরিবারে মানবেতর জীবনযাপন করছি। এ ধরনের মুক্তিযোদ্ধা দেশে ক’জন রয়েছে? দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে সরকারী ১নং খাস জমির জন্য আবেদনও করেও পাইনি। ঘুষ দিতে না পারার সন্তানের চাকরি হয়নি এবং হয় না। যা ২০১০ সালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পরিবারের এবং নিজের চিকিৎসা সহায়তা চেয়ে এবং একখ- জমি ক্রয়পূর্বক বসতবাড়ি নির্মাণের জন্য আবেদন করেও নিরাশ হয়েছি।
সর্বশেষ খুশির বিষয় এবার অসচ্ছল, অসহায়, হতদরিদ্র, ভূমিহীন ও পরাশ্রিত, ভাসমান মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনে সরকার আবাসন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এখানেও বৈষম্য! কারণ সরকারের গঠিত উপজেলা কমিটির প্রণীত তালিকায় আমার নাম স্থান পায়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও তালিকা প্রণয়ন কমিটির সভাপতি বরাবর লিখতে আবেদন করেছি। কিন্তু তা হয়েছে অরণ্যে রোদন।
এমতাবস্থায় প্রশ্ন, আবাসন প্রকল্পের জন্য নাম তালিকা করতে যাচাই-বাছাইয়ের মাপকাঠি কি? কবে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হতে পারব? থাকবে না বৈষম্য-বঞ্চনা, হানাহানি, বেইনসাফির তা-ব। জাতির সবাই কবে পাবে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার সমঅধিকার?
মোঃ আবুল হোসেন, সাতমেরা,পঞ্চগড়।

ক্ষতি পূরণ দেয়া হোক
দেশে রাজনৈতিক কারণে ডাকা হরতালে অযৌক্তিক ও অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দ্বারা হাজার হাজার কোটি টাকার গাড়ি, দোকানপাট ও গামের্ন্টস কারখানা ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ঘুমন্ত গাড়ি চালককে পুড়িয়ে মারা। হয়। এ সমস্ত গাড়ি ও কারখানা মালিক এবং হরতালকারীদের আচমকা আক্রমণে হত্যাকৃত ব্যক্তিদের যথাযথ ক্ষতি পূরণ দেয়া সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। কারণ বাংলাদেশের সংবিধানে কোথাও বলা হয়নি যে কোন রাজনীতিক দল অন্যায় এবং অযৌক্তিক দাবি নিয়ে সারাদেশে হরতাল ডাকলে দেশের আপাময় জনগণ তা মানতে বাধ্য থাকবেন। গাড়ি চালক গাড়ি মালিক ও কারখানা মালিকরা দেশের উন্নয়নের জন্য ও জনস্বার্থে যদি হরতাল অমান্য করে গাড়ি রাস্তায় বের করেন কারখানা চালু রাখেন তাহলে দেশের প্রচলিত আইনকে তো অমান্য করা হয় না। রবং দেশের ও জনগণের স্বার্থে তারা কাজ করছেন, এমতাবস্থায় গাড়ি মালিক ও কারখানা মালিকরা অন্যায়ভাবে আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাদের ক্ষতি পূরণ দেওয়া একান্ত প্রয়োজন।
কাজী নরুল আমিন
কলেজ রোড, শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ।

ভাড়া বিড়ম্বনা
চলনবিলের প্রবেশদ্বার নামে খ্যাত সিংড়া-বারুহাস রাস্তাটি জনবহুল ও ব্যস্ততম। বর্তমান রাস্তাটির পাকাকরণ কাজ চলছে। ফলে বৃহত্তম চলনবিলাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ বারুহাস বাজার থেকে তাড়াশ রাস্তা হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে যাতায়াত করছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, বারুহাস থেকে তাড়াশ মাত্র ১০ কিঃমিঃ এই রাস্তার ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে বিড়ম্বনা। টেম্পো, মোটরসাইকেল ও বাসগাড়ির ভাড়াতে রয়েছে অনেক বৈষম্য। বাসে ১৫ টাকা ভাড়া নেয়া হলেও টেম্পোতে নেয়া হয় ২০ টাকা। অপরদিকে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে নেয়া হয় ৩০ টাকা। সন্ধ্যার পর সাধারণত লোকাল বাসগাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ঠিক এই সময় থেকেই ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল ও টেম্পোর ভাড়া বেড়ে যায় দ্বিগুণ। এ নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে মাঝে মধ্যেই বাকবিত-া বাধে এমনকি হাতা-হাতির ঘটনাও ঘটে। ভাড়ার এই বৈষম্য আজ নতুন নয়; দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা শহরসহ দূর-দূরান্তের জেলা শহরে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীরা যাওয়া-আসার পথে এই রাস্তাতেই ভাড়া বিড়ম্বনার শিকার হন সবচেয়ে বেশি। তাদের অভিযোগ, দেশের কোথায়ও যাত্রী ভাড়ার বৈষম্যমূলক এমন ভোগান্তি নেই। বিষয়টি সুরাহার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সৌরভ সোহরাব, সিংড়া, নাটোর।

গ্লোবাল ভিলেজ চাই
ভারতের প্রখ্যাত সাংবাদিক, লেখক ও রাজনীতিবিদ কুলদীপ নায়ার ক’বছর আগে বিখ্যাত ডন পত্রিকায় যে কলাম লিখেছিলেন তা বাংলায় ভাষান্তর করে ছাপিয়েছে এটি দৈনিক পত্রিকা। ‘মান মাঝারি লোড সীমাহীন’ শিরোনামের কলামের এক পর্যায়ে কুলদ্বীপ নায়ার লেখেন, “দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো তাদের বিভেদ ভুলতে না পারা দুঃখজনক। সামনে এগিয়ে যেতে হলে এর বিকল্প নেই। তারা যত দ্রুত অর্থনৈতিক ইউনিয়ন গড়ে তুলতে পারবে তত শক্তিশালী হবে। এর মাধ্যমেই তারা প্রকৃত ভারতীয়, পাকিস্তানী, বাংলাদেশী, শ্রীলঙ্কান ও নেপালী হয়ে উঠবে। একই সঙ্গে তারা হয়ে উঠবে দক্ষিণ এশীয় ও বিশ্ব নাগরিক।”
নিজেদের দেশের কথা বিবেচনা করে হলেও সার্ক অঞ্চলের মানুষদের নতুন করে ভাবা প্রয়োজন। এ অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য এ অঞ্চলের মানুষদের আরও সহনশীল, আরও ধৈর্যধারণ করা জরুরী। সীমান্তে উত্তেজনা, নেতৃস্থানীয় লোকদের অপেশাদারী বক্তব্য কোটি কোটি মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির জন্য হুমকিস্বরূপ। অস্থিরতা কোন অঞ্চলের জন্যই মঙ্গলজনক নয়। বরং সার্ক অঞ্চলের বাসিন্দারা এন্টার্কটিকায় গবেষণাগার স্থাপন এবং গভীর সমুদ্র হতে তিমি মাছ আহরণে একত্রে প্রচেষ্টা চালাতে পারে। সার্কের সদস্য দেশগুলো জাতিসংঘকে অনুরোধ জানাতে পারে যেন সর্বোচ্চ একহাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের দেশগুলোতে সার্ক অঞ্চল হতে ছাত্র, শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, কৃষক, জেলে, তাঁতী প্রমুখ শ্রেণীর লোকদের পাঠাতে সহায়তা করে।
বাংলা ভাষা জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষার মর্যাদা পায়নি বা গৃহীত হয়নি। জাতিসংঘের মূল্যবান প্রকাশনাগুলো জানতে না পেরে জাতিসংঘের শক্তিশালী সমর্থক হিসেবে নিজেদের ততটা তৈরি করতে পারছে না বাঙালীরা। বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা ঘোষণা করার জন্য জাতিসংঘকেই এগিয়ে আসা জরুরী। বন্ধুত্ব শুধু রাষ্ট্রে নয়, জনগণের সঙ্গে জনগণের হওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশের কৃষক, জেলে, তাঁতী, পর্যটক, ছাত্র, শিক্ষক জুমচাষী, বনজীবী, পেশাজীবী সংগঠন সুরিনাম, মাদাগাস্কার, মঙ্গোলিয়া, পাপুয়া নিউগিনি, আইসল্যান্ড এবং হাইতির কৃষক, জেলে, তাঁতী জুমচাষী, বনজীবী, ছাত্র, শিক্ষক এবং পেশাজীবীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলবে, যাতে বিশ্বকে সত্যিকার অর্থেই গ্লোবাল ভিলেজে রূপান্তর করা যায়। জাতিসংঘের উচিত তার সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সমান আচরণ করা। ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্র এবং ভূমিবদ্ধ দেশসমূহকেও সমান সুযোগ সুবিধা দেয়া প্রয়োজন।
মুহাম্মদ আবদুস সোবহান, ভাওয়াল মনোহরিয়া, ঢাকা।

হরতাল এখন ভয়তাল
আজকাল সরকারের কাছে বিরোধীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া ও কারণ নিয়ে হরতাল ডাকা হয় যার উদ্দেশ্য ও কার্যাবলী সরকারী ও বিরোধী দলকে ঘিরেই থাকে। কিন্তু দেখা যায় যে, কিছু উচ্ছৃঙ্খল অবাধে দোকানপাট ভাংচুর, গাড়ি ভাংচুর ও আগুন লাগানো এবং নিরীহ সাধারণ জনগণের ওপর হামলা চালায় যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও ক্ষতিকর। তাই হরতালের সময় হরতালকারী দলও যাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগে বা দাবিতে হরতাল ডাকা হয়েছে। তাদের ঘিরেই যেন মারপিট বা অন্যান্য কিছু করার থাকলে করা হয় সাধারণ মানুষ বা হরতালের আওতার বাইরের কাউকে বা জিনিসকে যেন ক্ষতি করা না হয়। বিষয়টির প্রতি হরতালকারী দল, সরকার ও সাধারণ জনসাধারণের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

শরীফউদ্দিন, তেজকুনি পাড়া, ঢাকা

বাড়িওয়ালাদের স্বেচ্ছাচারিতা
দেশ ও জনগণের কল্যাণের চিন্তায় মগ্ন সরকারী ও বিরোধী দলের সকল রাজনৈতিক ব্যক্তির দৃষ্টি আর্কষণ করছি। সামনে নির্বাচন, আপনাদের পদধূলি পড়বে আমাদের দ্বারে, উদ্দেশ্য ‘ভোট’। আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, ঢাকা শহরে প্রায় দেড় কোটি লোকের বসবাস। এদের মধ্যে শতকরা ৮৫ থেকে ৯০ ভাগ ভোটারই ভাড়াটিয়া। বাড়িওয়ালাদের লাগামহীন, স্বেচ্ছাচারিতা ও অত্যাচারের মাত্রা সুনামি, সিডর বা আইলার গতিকেও ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে ঢাকা শহরের প্রতিটি এলাকায় বাড়ির বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস বিল প্রদান করে ভাড়াটিয়ারা। তারপরও প্রতিবছর বাড়ি ভাড়া বাড়ছে লাগামহীনভাবে। গত পাঁচ বছরে ঢাকা শহরের প্রায় সব এলাকার বাড়ি ভাড়া বেড়েছে দ্বিগুণের চেয়েও বেশি। বাড়ি ভাড়া বিষয়ক আইনকে তোয়াক্কা না করে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রতি বছর বাড়িওয়ালারা ইচ্ছামাফিক বাড়তি ভাড়া ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে আদায় করছে। সাধারণ ভাড়াটিয়ারা এখন দিশেহারা তাদের নির্মম অত্যাচারে। আমাদের রক্ষা করার জন্য সকল সরকারের কাছে অনুরোধ অবিলম্বে ‘বাড়ি ভাড়া আইন’ কার্যকর করা হোক। প্রয়োজনে নতুন বাড়ি ভাড়া আইন প্রণয়ন করা হোক পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর বাড়ি ভাড়া আইনের আলোকে। ছিনতাই, রাহাজানি, ঘুষ, সুদসহ সকল অপকর্মকে ছাড়িয়ে গেছে এই অনিয়ম। বাড়িওয়ালার অত্যাচার থেকে রক্ষার জন্য সরকার ও বিরোধী দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
আফনান, খিলগাঁও, ঢাকা

No comments

Powered by Blogger.