‘সংসদীয় কমিটির সভাপতি হিসেবেও দুর্নীতি করেছেন সুরঞ্জিত’

শুধু মন্ত্রী হিসেবে নয় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি থাকাকালেও নিয়োগ-বদলিসহ নানা দুর্নীতির সঙ্গে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত জড়িত ছিলেন বলে দাবি করেছেন সুরঞ্জিতের সাবেক এপিএস ওমর ফারুকের গাড়িচালক আজম খান।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি এ দাবি করেন। শনিবার আরটিভিতে সাক্ষাত্কারের দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব প্রচারিত হয়।
এছাড়া আজম খান দাবি করেন, “সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ছেলে সৌমেন সেনগুপ্তের টেলিকম ব্যবসার আলাপ তো আমার সামনেই হয়েছে। রেলের টাকা থেকে টাকাগুলো ওখানে দেয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে ফোন করে বলতেন, আমার এপিএসকে পাঠালাম। এই কয়েকটা কোটা ছিল। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পাঁচটা পাঠালে এপিএস আরো পাঁচটা দিয়ে দিতেন। সেখান থেকে ওমর ফারুক টাকা পেতেন।” ওই টাকার ভাগ সুরঞ্জিতের কাছেও যেত বলে তিনি দাবি করেন।

রেলের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনার পর সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে রক্ষা করতে ওমর ফারুক তাকে নানা প্রলোভন দেখান বলে চালক আজম দাবি করেন। তিনি বলেন, “ফারুক সাহেব বলেন এখনো সময় আছে। টাকাটা কোথায় যাচ্ছে, তুমিও জানো আমিও জানি। সব ভার আমি নিয়েছি। তুমি আর কাউকে ফাঁসাইও না। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে ফাঁসাইও না। তুমি আমাকেই ফাঁসাও। টাকাটা আমার, তুমি বলো।”

আজম খান প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছেন। আত্মগোপন ছেড়ে প্রকাশ্যে এলে তিনি খুন বা গুম হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন।

গত ৯ এপ্রিল রাতে বিপুল পরিমাণ টাকাসহ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ঝিগাতলা গেট দিয়ে একটি গাড়ি ভেতরে ঢুকে পড়ে। ওই গাড়িটি ওমর ফারুকের এবং এটি চালাচ্ছিলেন আজম খান। গাড়ির যাত্রী ছিলেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইউসুফ আলী মৃধা, তার নিরাপত্তা কর্মকর্তা রেলওয়ের কমান্ড্যান্ট এনামুল হক ও রেলমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) ওমর ফারুক তালুকদার। তারা কেউ এখন স্বপদে নেই।

উল্লেখ্য, শুক্রবার আরটিভিতে আজম খানের সাক্ষাতকারের প্রথম পর্বটি প্রচার হয়। এতে আজম খান দাবি করেন, ওই রাতে ৭০ লাখ টাকার বস্তা সুরঞ্জিতের বাড়িতেই যাচ্ছিল। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের এ সাক্ষাৎকারটি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় ঝড় তুলে। তবে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত দাবি করেছেন, এটা মিডিয়ার কারসাজি। তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।

No comments

Powered by Blogger.