মাছসহ পিকআপ ভ্যান ছিনতাই, হাত পা বেঁধে ফেলে দিয়ে হত্যা-যুগ্ম সচিবের আত্মহত্যা

রাজধানীর পৃথক এলাকায় মাছসহ পিকআপ ভ্যান ছিনতাইকালে এক আড়ত কর্মচারীকে হাত-পা বেঁধে চলন্ত ট্রাক থেকে ফেলে ছিনতাইকারী কর্তৃক হত্যা, নিজের গলায় ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যা ও এক সরকারী কর্মকর্তার আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।


বৃহস্পতিবার ভোরে মহাখালী ওভারব্রিজের নিচে এ ঘটনা ঘটে। ছিনতাইকালে মাছবাহী পিকআপটির চালক ইউসুফ (৩৫) ও টঙ্গীর আবদুল্লাহপুর বাজারের দুই বন্ধু ফিশ আড়তের কর্মচারী হাফিজুর রহমানকে (৪২) হাত-পা বেঁধে পিকআপ ভ্যান থেকে ফেলে দেয় ছিনতাইকারীরা। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ভর্তি করে পুলিশ।
হাসপাতালে ইউসুফ সাংবাদিকদের জানান, ভোরে কারওয়ানবাজার থেকে মাছ নিয়ে তারা আবদুল্লাহপুর বাজারে যাচ্ছিলেন। মহাখালী শাহীন কলেজ পার হয়ে ওভারব্রিজের কাছে পৌঁছানোর পর একটি ছোট ট্রাক তাদের ধাওয়া করে পথরোধ করে।
৬/৭ যুবক ট্রাক থেকে নেমে অস্ত্রের মুখে তাদের হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপর মুখে কাপড় গুঁজে দেয়। তাদের ট্রাকে তুলে মারধর করে। একজন চাপাতি দিয়ে হাফিজুরের মাথায় আঘাত করে। টঙ্গী আমতলী স্টেশন বাজারের কাছে তাদের হাত-পা বাঁধা অবস্থায়ই চলন্ত ট্রাক থেকে ফেলে দেয় ছিনতাইকারীরা। দুই বন্ধু ফিশ আড়তের মালিক আমিন সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিন ধরে হাফিজুর তার আড়তে কাজ করছিলেন। প্রতিদিন ভোরে এভাবেই তারা কারওরানবাজার থেকে মাছ নিয়ে যায়। প্রায় ৩ লাখ টাকার মাছ ছিনতাই হয়েছে বলেও তিনি জানান। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাফিজুর রহমানের মৃত্যু হয়। নিহতের পিতার নাম মতিউর রহমান। বাড়ি টঙ্গীর এরশাদনগরে।
এদিকে রাজধানীর ওয়ারী থানাধীন গোপীবাগের ডিমগলির নিজ বাসায় আনোয়ার হোসেন (৩০) নামে এক ব্যক্তি নিজের গলায় নিজেই ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ জানায়, নিহত আনোয়ার স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে গোপীবাগ বাজারসংলগ্ন ডিম গলিতে বসবাস করতেন। আনোয়ার ঘরের দরজা বন্ধ করে ধারালো ছুরি দিয়ে নিজের গলা কেটে ফেলেন। এ সময় তার স্ত্রী টুম্পা বেগম বাধা দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। স্ত্রীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা রক্তাক্ত অবস্থায় আনোয়ারকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বোন নাজমা বেগম সাংবাদিকদের জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে তার ভাই আত্মহত্যা করতে পারে।
অন্যদিকে রাজধানীর কাফরুল থানাধীন এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালে মনোয়ার হোসেন সরকার (৫৮) নামে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (ওএসডি) আত্মহত্যা করেছেন। কাফরুল থানা পুলিশ জানায়, সকাল ৭টার দিকে মিরপুর ১৩ নম্বরের সরকারী বাসভবন নিমগার্ডেন আবাসিক স্টাফ কোয়ার্টার থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের দাবি, বুধবার রাতের খাবার খেয়ে তিনি ঘুমাতে যান। সকালে জানালার গ্রিলের সঙ্গে প্লাস্টিকের রশি পেঁচানো অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে হতাশায় ভুগছিলেন। নিহতের দুইটি পুত্রসন্তান রয়েছে। নিহতের পিতার নাম আব্দুল আহাদ সরকার (মৃত)। তাঁর বাড়ি রাজশাহী জেলার বোয়ালিয়া থানাধীন এহতেম গ্রামে। এ ব্যাপারে কাফরুল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.