বলিউডের ক্ষমতাধর ৫ দম্পতি

বিয়ের পর নাকি অভিনয় শিল্পীদের বাজার দর কমে যায়। তাই বিয়ে না করে তারা যতদিন পারেন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে যান। প্রেম নাকি খুব একটা সমস্যা করে না তাদের ক্যারিয়ারে। কিন্তু বিয়ে করতে তারা একদম নারাজ। এই সীমারেখা ভেঙ্গে বলিউডে দাপটের সঙ্গে নিজেদের ধরে রেখেছেন এমন  পাঁচজন ক্ষমতাধর দম্পতিদের নিয়ে আজকের আলোচনা।
সাইফ-কারিনা: বলিউডে বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত জুটি সাইফ-কারিনা। তাদের প্রেমে পড়া যেমন ছিল আলোচিত তেমনি তাদের বিয়ে ইস্যুও আলোচনার বিষয়বস্তু। সম্পর্ক চলাকালে শহিদ কাপুরকে টেক্কা দিয়ে কারিনা কাপুর অধিকার করেছিলেন সাইফ আলিকে।
এদিকে ৪১ বছর বয়সী সাইফ নিজেও স্ত্রী অমৃতা সিংয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর সিঙ্গেল জীবনযাপন করছিলেন। অমৃতা তার স্বামী সাইফ থেকে ১২ বছরের বড় ছিলেন। সাইফ-অমৃতা জুটির দুই সন্তান আছে। বলিউডের টপক্রেজ নায়িকাদের একটা বদনাম আছে বিবাহিত পুরুষদের প্রতি আকর্ষণের কারণে। শেষ পর্যন্ত কারিনা নিজেও ওই দলে ভিড়ে গেছেন। এই যুগল গত ৪ বছর ধরে একসঙ্গে সববাস করে আসছেন। জুটিবদ্ধ আথবা একক তাদের যেকোনো ধরনের ছবিই এখন চূড়ান্ত বক্স অফিস হিট।

পতৌদি নবাব সাইফ এবং কাপুর বাড়ির মেয়ে কারিনার ক্রমবর্ধমান খ্যাতির কারণে সিনেমার পাশাপাশি বিজ্ঞাপনেও তাদের চাহিদা সমানতালে। বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের বিপণনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার জন্য তাদের পেছনে যেকোনো পরিমাণ অর্থ লগ্নি করতে প্রস্তুত। হালে এই যুগল আলোচিত সমালোচিত তাদের বিয়ে ইস্যুতে। বিয়ের তারিখ নিয়ে পুরো বলিউডবাসী খুবই উৎকন্ঠিত এবং একইসঙ্গে আনন্দিত। তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান ঐশ্বরিয়া-অভিষেক দম্পতির মতোই হাই প্রোফাইলভুক্ত হতে যাচ্ছে বলে সবার ধারণা।  

শাহরুখ খান-গৌরি খান: শাহরুখ খান বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে সুপারহিট হিরো। আর তার পেছনে থেকে সবসময় তাকে প্রেরণা জুগিয়েছেন স্ত্রী গৌরি। শাহরুখ খান যখন ফিল্মে আসেননি তখনই জীবন সঙ্গীনি হিসেবে পেয়েছিলেন গৌরিকে। গৌরি ফিল্মডোমে নাম না লেখালেও ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে প্রসিদ্ধ। অনেক ছবিতেই ক্রিয়েটিভ ডিজাইনার হিসেবে তিনি বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। পাশাপাশি গৌরি কলকাতা নাইট রাইডার টিম এবং প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রেড চিলির সহযোগী পার্টনার। কয়েক বছর ধরে এই দম্পতি আবাসন ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়েছেন।
 
সাম্প্রতিক সময়ে শাহরুখ-প্রিয়াংকা ইস্যুতে এই দম্পতির ব্যক্তিগত জীবনে তুমুল ঝড় উঠেছিল। সে ঝড় কতটা স্তিমিত হয়েছে সে খবরটা মিডিয়ার কাছে তারা প্রকাশ করেননি। বরাবরই ব্যক্তিগত বিষয়াদী মিডিয়া থেকে দূরে রাখেন তারা। শুধুমাত্র খানিকটা ঝড়ের আভাস পেয়েছিল মিডিয়া সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু ঘর ভাঙ্গার মতো কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণের চিন্ত করেননি এই দম্পতির কেউই ।

শাহরুখ-গৌরি বলিউডের ক্ষমতাধর দম্পতিদের মধ্যে অন্যতম। তারা নিজেদের জীবনাচরণের পাশাপাশি নানাবিধ সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত। এই দম্পতির দুটি সন্তান আছে।

ঐশ্বরিয়া রাই-অভিষেক বচ্চন: ঐশ্বরিয়া-অভিষেক বলিউডের আরেক উজ্জ্বল দম্পতি যাদের শক্ত অবস্থান ক্ষমতাধর দম্পতির আসরে। এই জুটি আলাদাভাবে নিজেরাই ব্যাপক জনপ্রিয়। একজন বিশ্বসুন্দরীর খেতাবধারী  আর আরেকজন হলেন বলিউডের মাথা বিগবি’র সন্তান। দুজনেরই এক বিষয়ে খুব মিল, দুজনেই আরেক জীবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিন্ন করে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন।

ঐশ্বরিয়া রাই প্রথমে ছিলেন সালমান খানের গুণমুগ্ধ। সেখান থেকে অভিনেতা বিবেক অবেরয়ের প্রেমিকা হিসেবে নাম লিখিয়েছিলেন। আর বচ্চন জুনিয়ার দীর্ঘদিন মানসিকভাবে যুক্ত ছিলেন কারিশমা কাপুরের সঙ্গে। শেষপর্যন্ত দুজনই নিজেদের তরি এনে ভিড়িয়েছেন এক ঘাটে। এ দম্পতির বিয়ে শুধু ভারতবাসীই উৎযাপন করেননি, করেছে পুরো বিশ্ব। পাঁচ বছরের বিবাহিত জীবনে তাদের একটি কন্যা সন্তান আছে। শুধু সুন্দরী বলে নয় অভিনয় গুণের কারণেই বলিউডে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ঐশ্বরিয়া রাই।

অভিনেতা হিসেবে বচ্চন জুনিয়ার তার বাবার চেয়ে কতটা শক্তিশালী আমরা এই বিতর্কে যাবো না। সম্প্রতি তার মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বোল বচ্চন বোল’ ছবি সুপারহিট মর্যাদা পেয়েছে এবং ১০০ কোটি রুপির বেশি মুনাফা অর্জন করেছে। মোট কথা দুজনেই প্রচুর হিট ছবি উপহার দিয়েছেন বলিউডবাসীকে। এই দম্পতিকে একসঙ্গে সর্বশেষ ‘রাবন’ ছবিতে দেখা গেছে। এছাড়াও একটি বিউটি সোপের বিজ্ঞাপনে দুজন জুটিবদ্ধ হয়েছেন।

কাজল-অজয় দেবগন:  এককভাবে কাজল এবং অজয় দেবগন দুজনেই বলিউড জগতের বড় তারকা। তাদের নিজেদের অসংখ্য ছবি সুপারহিট। কাজলের মা তনুজা নিজেও বলিউডের প্রসিদ্ধ অভিনেত্রী।

অজয় দেবগনের পুরো পবিবার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত। বাবা ভিরু দেবগন ছিলেন স্টান্ট কোরিওগ্রাফার এবং মা বীনা ছিলেন প্রযোজক। ক্ষমতাধর কাজল-অজয় দম্পতি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বিবাহিত জীবনযাপন করে আসছেন। তাদের ঘরে দুই সন্তান আছে। বিয়ের পর থেকেই কাজল বলিউডে একেবারে অনিয়মিত হয়ে যান।

সংসারকে পুরোদমে উপভোগ করতে চেয়েছেন। বিয়ের পর শুধু সংসার করবেন এমনটাই পন ছিল তার। তারপরেও কালেভদ্রে যে ছবিগুলো করেছেন সবগুলোই সুপার ডুপার হিট হয়েছে। তারা একসঙ্গে অনেক ছবি করেছেন এবং ছোট পর্দার একটি রিয়েলিটি শো’য়ের সেলিব্রেটি বিচারক হিসেবেও অংশ নিয়েছেন।

আরবাজ খান-মালাইকা অরোরা খান: আরবাজ খান এবং মালাইকা অরোরা খান বলিউডের পঞ্চম ক্ষমতাধর দম্পতি। আরবাজ খান বলিউডে নিজের আসন পোক্ত করেছিলেন জন্মগতভাবেই। বাবা স্ক্রিপ্ট রাইটার সেলিম খান। ভাই বলিউড সুপারস্টার সালমান খান। অভিনয়ে ভাইকে ছাপিয়ে যেতে না পারলেও নিজেকে প্রযোজক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন আরবাজ। স্বামীর সঙ্গে মালাইকা নিজেও প্রযোজনা ব্যবসায় জড়িত। আরবাজ-মালাইকা দম্পতির লেটেস্ট প্রযোজিত ছবি দাবাং।

দাবাংয়ের আইটেম গানে পারফর্মও করেছেন মালাইকা। মালাইকা বলিউডের সর্বকালের সেরা আইটেম গার্ল। তিনি একাধারে মডেল, টিভি উপস্থাপিকা এবং ভিডিও জকি। এই দম্পতির প্রথম পরিচয় ঘটেছিল কফির বিজ্ঞাপনের সেটে। সেখান থেকে এতদূর অব্দি পথ হেঁটেছেন একসঙ্গে। নিজের জীবনে নানাবিধ সমস্যা এবং বিতর্কের পরেও মালাইকা ঘর সামলে চলেছেন নিপুন হাতে। কাজের ক্ষেত্রে এবং ঘরকে এক হতে দেননি। ১৪ বছরের বিবাহিত জীবনে এই দম্পতির একটি পুত্র সন্তান আছে। সূত্র: জিনিউজ

No comments

Powered by Blogger.