সাংবাদিক ও ছাত্র হত্যা

কোথায় যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও দেশ কোথায় যাচ্ছে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি? প্রতিদিনই বাড়ছে অপমৃত্যুর সংখ্যা। অপহরণ হচ্ছে, মুক্তিপণ আদায় করা হচ্ছে। গুপ্তঘাতক যেন ছায়ার মতো ঘুরছে আশপাশে। হত্যা-অপহরণের সংখ্যাই শুধু বেড়ে চলছে তা নয়, বিশ্লেষকরা এসবের মধ্যে দেশের একটা বড় রকম অমঙ্গলের


অশনিসংকেতও পাচ্ছেন। এবার রেলস্টেশনের পাশে পাওয়া গেল সাংবাদিকের ২০ টুকরো লাশ। যশোরের চৌগাছায় মুক্তিপণের দাবিতে অপহৃত স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনোভাবেই আয়ত্তে আনা যাচ্ছে না। প্রতিদিনের খবরের কাগজে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে খবর প্রকাশিত হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে স্বস্তি প্রকাশের কোনো সুযোগ সেসব খবরে পাওয়া যাচ্ছে না।
গত বুধবার ঘটে যাওয়া দুটি হত্যাকাণ্ডের একটি ঘটেছে নবীগঞ্জে। তরুণ সাংবাদিক জুনাঈদ আহমদ জুনেদকে নৃশংসভাবে হত্যা করে তাঁর মৃতদেহ শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশনে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তাঁর পরিবার। রেলওয়ে পুলিশ বুধবার সকালে তাঁর ২০ টুকরো লাশ উদ্ধার করেছে। তবে কে বা কারা, কেন তাঁকে এভাবে হত্যা করেছে তা জানা যায়নি। অন্যদিকে মুক্তিপণ না পেয়ে যশোরের চৌগাছা থেকে অপহৃত স্কুলছাত্র সৌরভকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার সকালে উপজেলার গরীবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের একটি পাটক্ষেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে চৌগাছা থানার পুলিশ। এককালে সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল যশোর। আবারও কি সেই কলঙ্ক লাগতে যাচ্ছে যশোরের গায়ে?
দিন দিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না খুন, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, রাহাজানি। দেশজুড়ে দখলদারিও চলছে। রোধ করা যাচ্ছে না সন্ত্রাস। চাঁদাবাজি, খুনের ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে দেশের কোথাও না কোথাও।
আমরা দেখেছি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েই অতীতের সরকারগুলোকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আয়ত্তে আছে, এমন কথা বলে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলার কোনো অবকাশ নেই। প্রতিদিন একের পর এক লাশ পড়বে। খুন হবে মেধাবী ছাত্র, সাংবাদিক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, শিক্ষক, ছাত্র ও সাধারণ মানুষ আর পুলিশ জনগণের বন্ধু হয়ে ওঠার চেষ্টায় অনলাইনে অভিযোগ নিলেও কোনো লাভ হবে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে না পারলে অদূরভবিষ্যতে এ সরকারকেও বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হতে পারে। সার্বিক অবস্থার অবনতির নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে বের করতে হবে। পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আগেই সরকারের উচিত লাগাম টেনে ধরা। এ ব্যাপারে যাদের যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথা, সেই সংস্থার দায়িত্বশীলতা এখন প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক চেষ্টা কাম্য।

No comments

Powered by Blogger.