‘সেক্সলম্পিক’ নিয়েই ভয় আয়োজকদের

অলিম্পিক শুরু হতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। তারপরই অলিম্পিক স্টেডিয়ামে জ্বলে উঠবে মশাল। লন্ডনের বুকে শুরু হয়ে যাবে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’। এখন শেষ মুহূর্তের চূড়ান্ত প্রস্তুতি পর্ব টেমসের তীরে। গোটা বিশ্ব প্রহর গুনছে গেমস শুরু হওয়ার। পরিবহণ ধর্মঘট মিটে যাওয়ায় আয়োজকদের মুখে চওড়া হাসি। লন্ডন অলিম্পিক গেমস আয়োজক কমিটির সবচেয়ে বড় চিন্তার কারণ অবশ্য অন্য।

না না আলকায়েদার জঙ্গি আক্রমণ নয়, চিন্তার সবচেয়ে বড় কারণ ‘সেক্স ইন অলিম্পিক’ সংক্ষেপে যার নাম রাখা হয়েছে ‘সেক্সলম্পিক’। গেমস শুরুর আগে ইউরোপের বিখ্যাত এক অ্যাথলিট বলছিলেন, অলিম্পিকের সেক্সের কলঙ্ক লাগতে চলেছে লন্ডনের গায়ে। যার জেরে সতর্ক আয়োজকরা। ‘সেক্সলম্পিক’ বিষয়টি ঠিক কী তাই নিয়েই এই প্রতিবেদন-
অলিম্পিক ভিলেজে সেক্স মেলা: একসঙ্গে ১৭,০০০ অ্যাথলিটদের এক ছাদের তলায় থাকার জন্য তৈরি হয়েছে এই অলিম্পিক ভিলেজ। প্রত্যেক অলিম্পিকেই এই ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। এই ভিলেজের মাধ্যমেই বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের এক অনন্য ছবি ধরা পড়ে। তবে এই ভিলেজে নিয়েই যত ভয়। আসলে মুখে যাই বলা হোক এই ভিলেজ নিয়ে নানা কথা শোনা যায় অ্যাথলিটদের মুখে। এবার যেমন মজা করে বলা হচ্ছে লন্ডন অলিম্পিক ভিলেজে বসছে সেক্স মেলা। আসলে অলিম্পিকে অসম্ভব চাপ থেকে মুক্তি পেতে অ্যাথলিটরা সেক্সের মাধ্যমে চাপ কাটানোর উপায় খুঁজে নেন। আর তাই অনেক অ্যাথলিটই বলেন অলিম্পিক ভিলেজ হলো যৌনতার স্বর্গ। আয়োজকরা অবশ্য ব্যাপারটাকে ‘স্পোর্টিংলি’ নিয়েছেন আর তাই ভিলেজে দেড় লক্ষেরও বেশি কন্ডোম বিতরণ করা হয়েছে।

ক’দিন আগেই আমেরিকার মহিলা ফুটবল দলের গোলরক্ষক এবং অধিনায়ক হোপ সোলো অলিম্পিকে নিজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে বলেন, “ভিলেজে একদিন রাত না কাটালে বোঝাই যাবে না কিরকম নোংরামো চলে। ২০০৮ বেজিং অলিম্পিক ভিলেজে একদিন রাতে ঘুম ভেঙে গেল কি একটা শব্দে। বাইরে গিয়ে দেখি এক বিখ্যাত বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের সঙ্গে এক মহিলা অ্যাথলিট ডাইনিং রুমে যৌন কর্মে ব্যস্ত , কিছুটা দূরেই দেখি আরও কয়েকজন সেই একই কাজ করছে। দেখে মনে হচ্ছে সেক্সের মেলা বসে গিয়েছে।” কোনো কোনো মহিলা অ্যাথলিট আবার ইভ টিজিংয়ের অভিযোগও করেছেন। যৌনতায় অনিচ্ছুকদের নানাভাবে হয়রানও করা হয় বলে অভিযোগ। মার্কিন তারকা সাঁতারু রায়ান লোকেট বলেছেন, “অলিম্পিক ভিলেজের ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ অ্যাথলিটকেই দেখেছি উদ্দাম যৌনলীলায় মেতে উঠতে। অনেকেই সেক্স করেছে মাঠে, ঘাসে, ডাইনিং রুমে, বাথরুমে ...। এতে একটা উৎকট সমস্যাও তৈরি হয়েছিল। তা হলো রুমসহ সর্বত্র নোংরা ও আবর্জনাময় হয়ে পড়েছিল।” আইওসি’র ভয় এসব শুনে রক্ষণশীল মুসলিম দেশেরা মহিলা অ্যাথলিটরা আর অলিম্পিকে খেলতে দিতে রাজি হবে কিনা!

বিচ ভলিবল আর পর্ন মুভি: অলিম্পিকের সবেচেয়ে মেগা ইভেন্ট কী? অনেকেই বলবেন পুরুষদের ১০০ মিটার দৌড়। কিন্তু প্রশ্নটা যদি করা হয় সবচেয়ে গ্ল্যামারাস ইভেন্ট কী? তাহলে অবশ্যই বলতে হবে মহিলাদের বিচ ভলিবলের কথা। যেখানে খেলা ছাপিয়ে মহিলাদের বিকিনি পরিহিত পোশাক আলোচনা আর ছবির মূল বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে। শোনা যাচ্ছে এ বার বিচ ভলিবলে খেলবেন মডেলদের পাশাপাশি পর্ন স্টারেরাও। তবে তারা ঠিক কোন দেশের তা জানানো হয়নি। অলিম্পিক ভিলেজে যৌনতার বিচারে নাকি সবচেয়ে বেশি কদর থাকে এই বিচ ভলিবল খেলোয়াড়দেরই। এথেন্স অলিম্পিক ভিলেজে এক মহিলা বিচ ভলিবল খেলোয়াড়ের সঙ্গে আফ্রিকার এক দৌড়বিদের নীল ছবিও তৈরি হয় বলে খবর।

দেহব্যবসার রমরমা: অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছে ২০৪টি দেশের অ্যাথলিটরা। এই জন্য ২০০টি দেশের সাংবাদিক, অতিথিরা আসছেন ইংল্যান্ডে। আর এই অলিম্পিক রাজসূয় যজ্ঞকে কেন্দ্র করে দেহব্যবসার জমজমাট ব্যবসা তৈরি হয়েছে। লন্ডনের হোটেলে হোটেলে ভিড় জমিয়েছেন দেহ ব্যবসায়ীরা। তাতে রয়েছন বিশ্বের বিখ্যাত পর্নস্টাররাও। ইন্টারনেটে তৈরি হয়েছে অলিম্পিক সেক্স সাইট। সব জেনে শুনেও নিরুপায় আয়োজকরা। তবে রাস্তার ধারে দেহব্যবসায়ীদের দাঁড়িয়ে থাকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

নগ্ন প্রতিবাদ: এই একটা জিনিস নিয়ে তটস্থ আয়োজকরা। আসলে প্রতিবাদের মাধ্যম হিসাবে মহিলাদের নগ্ন হয়ে যাওয়াটা ইউরোপে এখন বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। ইউক্রেনে ইউরো কাপ চলার সময় ঠিক এই ধরনের প্রতিবাদে জনসমর্থন পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু অলিম্পিকে নগ্ন প্রতিবাদ হলে তা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠবে বিশ্ব জুড়ে আর তাই আয়োজকরা সতর্ক। শোনা যাচ্ছে তিব্বতিরা তাদের আন্দোলনে গতি আনতে লন্ডনে নগ্ন প্রতিবাদের রাস্তাতেও হাঁটতে পারে। অনেক মানবাধিকার সংগঠনও প্রচারের আলো টানতে একই পথ নিতে পারে বলে খবর।

পাপারাৎজিদের কাণ্ডকারখানা: ইংল্যান্ডের কুখ্যাত জিনিসগুলোর এটা একটা। লুকিয়ে ছবি তুলে সেই ছবি প্রকাশ করে দেয়া পাপারাৎজিদের কাজ। রাজকুমারী ডায়নার মৃত্যুর পর পাপারাৎজিদের বিরুদ্ধে আঙুল ওঠে। আগামী এই কয়েকদিন বোল্ট, ফেডেরার, শারাপোভাদের নানা গোপন মুহূর্তের ছবি তোলার জন্য পাপারাৎজিরা মরিয়া। আয়োজকরাও মরিয়া তাদের ঠেকাতে। সূত্র: ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.