ফিরলেন সেই পিটারসেন

এদিকে কেভিন পিটারসেন, ওদিকে প্রাভিন কুমার। কাল লর্ডসে নিজ নিজ দলের লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিলেন দুই ‘প’। জহিরবিহীন ভারতের বোলিং আক্রমণকে একাই টেনেছেন প্রাভিন কুমার। লর্ডস অভিষেকে ৫ উইকেট নিয়ে নাম লিখিয়েছেন অনার্স বোর্ডে। কিন্তু দিনশেষে পিটারসেনের ঔজ্জ্বল্যের পাশে ম্লান তিনি। ক্যারিয়ারের তৃতীয় দ্বিশতক করে পিটারসেন মাঠ ছেড়েছেন হার না মেনে। তাঁর দ্বিশতকের সঙ্গে সঙ্গেই ইনিংস ঘোষণা করেছেন অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস। শেষ বিকেলের ছয়টি ওভার নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দিয়েছেন ভারতের দুই ওপেনার।দেশের মাটিতে পিটারসেনের সর্বশেষ সেঞ্চুরিটি ছিল ২০ ইনিংস আগে। ২০০৮ সালে ওভালের সেই সেঞ্চুরিটির সময় তিনি ছিলেন দলের অধিনায়ক! এরপর সময় গড়িয়েছে অনেক। মাঝে পথ হারিয়ে আবার ফিরেছেন পথে। কিন্তু বোলারদের ওপর ছড়ি ঘোরানো সেই পুরোনো পিটারসেন যেন হারিয়ে গিয়েছিলেন। গত অ্যাশেজের অ্যাডিলেডের ডাবল সেঞ্চুরিটায় পুরোনো ঝলক কিছু দেখা গিয়েছিল। এরপর আবারও অচেনা পিটারসেন। রান যে পাননি তা নয়, কালকের আগে সর্বশেষ দুই ইনিংসেও ছিল ফিফটি। কিন্তু সেই পিটারসেন যতটা না আগ্রাসী, তার চেয়ে অনেক বেশি ‘শ্রমিক’।
লর্ডসের এই ইনিংসটা দুই চেহারার পিটারসেনের অপূর্ব সংমিশ্রণ। প্রথম এক শতে তিনি গত কিছুদিনের পিটারসেন। উইকেটে টিকে থাকার দিকেই বেশি মনোযোগ। সেঞ্চুরিতে লাগল তাই ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বেশি বল (২১৬)। সেঞ্চুরির পর মিলতে শুরু করল পুরোনো পিটারসেনের। পরের ফিফটি ৮৫ বলে। দেড় শর পর তিনি সেই চিরপরিচিত পিটারসেন, ব্যাট যাঁর চাবুক। দেড় শ থেকে দুই শ ছুঁতে লাগল মাত্র ২৫ বল। ১৮৬ থেকে রায়নার টানা ৪ বলে ১৬ রান দিয়ে দুই শ! ভারতীয় পেসারদের ‘পেসহীনতার’ সুযোগে অফ স্টাম্পের বাইরের বলও টেনে নিয়ে খেলছিলেন লেগে। ওয়াগন হুইল বলছে, ৬২ শতাংশ রানই এসেছে লেগ সাইড থেকে!
কাল ইংল্যান্ডের যে ছয়টি উইকেট পড়েছে, পাঁচটিই তুলে নিয়েছেন প্রাভিন। জবাব দিয়েছেন অনেক প্রশ্নেরও। গতি নেই, মূল অস্ত্র তাঁর সুইং। গায়ে লেগে গিয়েছিল ওয়ানডে বোলারের ছাপ। ৫২ ওয়ানডের পর এই সেদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট অভিষেক। ৩ টেস্টে ১২ উইকেট নেওয়ার পরও সমালোচকদের মন জয় করতে পারেননি। শ্রীশান্তকে বসিয়ে এই টেস্টে তাঁকে খেলানো হচ্ছে কেন, এই নিয়ে কত প্রশ্ন!
সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা ‘সুইং’ দিয়েই কাল তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। নতুন বল বা পুরোনো, সারা দিনই সুইং করিয়েছেন। লাঞ্চের আগে ফিরিয়েছেন ট্রটকে। পরের ৪ উইকেট জোড়ায় জোড়ায়। এক ওভারে বেল-মরগানকে, পরে টানা দুই বলে প্রায়র ও ব্রডকে। চূড়ান্ত হতাশ করেছেন হরভজন ও ইশান্ত শর্মা। তৃতীয় পেসারের অভাব মেটাতে দুই দফায় উইকেটকিপিং গ্লাভস খুলে বোলিংয়েও আসতে হয়েছিল ধোনিকে। প্রথম স্পেলে পিটারসেনের উইকেটটা প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন। আসাদ রউফ কট বিহাইন্ডের আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন। কিন্তু রিভিউ বাঁচিয়ে দেয় পিটারসেনকে। হট-স্পট বলছে, রিভিউ নিলে হয়তো বেঁচে যেতেন মরগানও। 
 মন্থর ‘কেপি’
এই প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করতে দুই শর বেশি বল লাগল কেভিন পিটারসেনের!

No comments

Powered by Blogger.