মিয়ানমারে নতুন সরকারের কাছে জান্তার ক্ষমতা হস্তান্তর

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা গতকাল বুধবার একটি নির্বাচিত বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে। এর মধ্য দিয়ে সে দেশে বেসামরিক শাসনের নতুন যুগের সূচনা হলো। অবসান ঘটল প্রায় দুই দশকের সামরিক শাসনের। গত নভেম্বরে বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে এই নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
জান্তাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল থান সয়ের স্বাক্ষর করা নির্দেশের উদ্ধৃতি দিয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ঘোষণায় বলা হয়, জান্তার স্টেট পিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল (এসপিডিসি) বিলুপ্ত হয়েছে। থান সয়ে ১৯৯২ সাল থেকে জান্তাপ্রধান হিসেবে শক্ত হাতে মিয়ানমারের শাসন পরিচালনা করে আসছিলেন। গতকাল টিভিতে প্রচারিত খবরে তাঁর নাম উল্লেখ করার সময় কেবল ‘এসপিডিসির চেয়ারম্যান’ বলে পরিচয় দেওয়া হয়। এতে দৃশ্যত সেনাপ্রধানের পদ থেকে সরে গেলেন তিনি। জেনারেল মিন অং হলাইং নতুন সেনাপ্রধান হয়েছেন বলে খবরে জানা গেছে। তবে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন কি না, তা জানা যায়নি।
মিয়ানমারের সরকারে এই পরিবর্তন সত্ত্বেও বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, সেনাবাহিনী এখনো শক্ত হাতে ক্ষমতা ধরে রাখবে। সে ক্ষেত্রে আড়াল থেকে থান সয়ে ক্ষমতার কলকাঠি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। এসপিডিসি আগে স্টেট ল অ্যান্ড অর্ডার রিস্টোরেশন কাউন্সিল নামে পরিচিত ছিল। ১৯৮৮ সালে তারা দেশের ক্ষমতা দখল করে।
গতকালের টেলিভিশন ঘোষণায় বলা হয়, আইনপ্রণেতারা একজন নতুন প্রেসিডেন্ট, দুজন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ৩০ জন মন্ত্রীকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এ সরকার আগামী পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবে। ঘোষণায় বলা হয়, এত দিন আইন প্রণয়ন, বিচার বিভাগীয় ও প্রশাসনিক যে ক্ষমতা এসপিডিসি ভোগ করে আসছিল, আজ (বুধবার) থেকে তা স্থানীয় সরকার-পর্যায়ে চলে গেল।
নতুন যে বেসামরিক সরকার গঠন করা হয়েছে, এর সদস্যরা সাবেক বা বর্তমান সেনাসদস্য। সামরিক জান্তার ক্ষমতা প্রয়োগের হাতিয়ার এসপিডিসির সাবেক সদস্যরাই নতুন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো পেয়েছেন। প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট, পার্লামেন্ট স্পিকারসহ দেশটির ১৪টি অঞ্চলের সরকারপ্রধানদের মধ্যে অধিকাংশ ওই সেনা সংস্থা থেকে আসা।

No comments

Powered by Blogger.