বন্দরে বিদেশি বিনিয়োগ ছাড়া কি ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হওয়া সম্ভব by সুবাইল বিন আলম
কিছুদিন আগে একটা গোলটেবিল প্রোগ্রামের কি–নোট উপস্থাপন করি এবং আলোচনায় উপস্থিত সবাই মোটামুটি একমত যে, বাংলাদেশ যদি ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে যেতে চায়, তাহলে বিদেশি বিনিয়োগ ও চট্টগ্রাম বন্দরের আধুনিকায়নের বিলম্ব করার সুযোগ নেই; যদিও কিছু ব্যাপারে মানুষের মনে প্রশ্ন আছে।
এখন এ কথা শুনতে যতটা সহজ, বাস্তবে ততটা নয়। কারণ, বন্দর শুধু একটা অবকাঠামো নয়, বরং এটা দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য, লজিস্টিকস, মুদ্রানীতি, রাজনৈতিক অর্থনীতি ও প্রশাসনিক সংস্কারের কেন্দ্রবিন্দু।
চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের অর্থনীতির প্রধান প্রবেশদ্বার। দেশের ৯২ শতাংশ সমুদ্র–বাণিজ্য ও ৯৮ শতাংশ কনটেইনার কার্গো এখান দিয়ে ওঠানো নামানো হয়।
২০২৫ অর্থবছরে রেকর্ড ৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন টিইইউ হ্যান্ডল করা হয়েছে। কিন্তু এই বৃদ্ধির মধ্যেও বন্দরের কার্যকারিতা এক জায়গায় আটকে আছে।
সিঙ্গাপুর বন্দর বছরে প্রায় ৩৭ মিলিয়ন টিইইউ হ্যান্ডল করে, কলম্বো ৭ দশমিক ২ মিলিয়ন টিইইউ। তার তুলনায় চট্টগ্রামের ৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন টিইইউ এখনো আঞ্চলিক মানের অনেক নিচে।
বিশ্বব্যাংকের কনটেইনার পোর্ট পারফরম্যান্স অনুযায়ী চট্টগ্রামের অবস্থান ৩৩৭তম/৪০৫। টার্মিনালের ক্রেন উৎপাদনশীলতা মাত্র ১৮-২১ মুভ/ঘণ্টায়, যেখানে আন্তর্জাতিক মান ৩৫-৪৫।
বিশ্বব্যাংক তার অক্টোবরের প্রতিবেদনেও এ কথা তুলে ধরেছে। এনসিটিতে ব্যবহৃত বেশির ভাগ গ্যান্ট্রি ক্রেন ২০ থেকে ৩০ বছরের পুরোনো।
প্রায়ই ব্রেকডাউন হয়, স্পেয়ার পার্টসের অভাবে সপ্তাহের পর সপ্তাহ অচল থাকে। একটি আধুনিক টার্মিনালে যেখানে ৯৫ শতাংশের বেশি আপটাইম থাকে, সেখানে এনসিটির আপটাইম ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ।
এর মানে হলো, বিদ্যমান অবকাঠামোই আমাদের অর্থনৈতিক আকাঙ্ক্ষার জন্য যথেষ্ট নয়।
২০২৫ সালের আগস্টে এনসিটি একাই রেকর্ড ১ লাখ ২২ হাজার ৫১৭ টিইইউ হ্যান্ডল করেছে (+ ২৮% আগের একই সময়ে বছরের তুলনায়)।
জুলাই-সেপ্টেম্বরে এনসিটির ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি দেখা গেছে। কিন্তু সিডিডিএলের মধ্যস্থতা সত্ত্বেও অপেক্ষার সময় এখনো ৭ দিনের ওপর।
ফলাফল একটাই—জাহাজকে বহির্নোঙরে ৭ থেকে ১০ দিন অপেক্ষা করতে হয়, প্রতিদিন অতিরিক্ত খরচ ১২ থেকে ২০ হাজার ডলার।
প্রতিবছর এ বিলম্বে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা ১ দশমিক ৫ থেকে ২ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত খরচ বহন করেন।
এ খরচ শেষ পর্যন্ত পণ্যের দামে, রপ্তানির সময়সীমায় এবং দেশের লজিস্টিক খরচে উঠে আসে। সোজা কথায়, বন্দর জ্যাম মানেই জাতীয় অর্থনীতির জ্যাম।
যাঁরা বন্দর পরিচালনা, মেশিনারি রক্ষণাবেক্ষণ, অটোমেশন কিংবা ডিজিটাল টিওএস বোঝেন, তাঁরা জানেন, একটা টার্মিনালের দক্ষতা বাড়ানো মানে শুধু নতুন ক্রেন বসানো নয়।
এটা হলো দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ পরিকল্পনা, প্রশিক্ষিত জনবল, ডিজিটালাইজেশন, গ্লোবাল শিপিং নেটওয়ার্কে প্রবেশ এবং দৃঢ় ম্যানেজমেন্ট শৃঙ্খলা।
সে জন্যই সরকার এনসিটি ও এলসিটিতে জিটুজি ও পিপিপি মডেলে বিদেশি অপারেটর আনার উদ্যোগ নিয়েছে।
লালদিয়া টার্মিনালে এপিএম টার্মিনাল (মারসেক গ্রুপ) এবং নিউমুরিং টার্মিনালে ডিপি ওয়ার্ল্ডের প্রস্তাব আলোচনায় এসেছে।
লালদিয়া টার্মিনালের চুক্তি নিয়ে প্রথম আলোয় একটা বিশ্লেষণ আসার পর দেখা যায়, দেশের এখানে একটাই রিস্ক, সেটা হচ্ছে যদি হরতাল–অবরোধে পোর্ট বন্ধ থাকে, তাহলে দেশকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
রাজনীতিবিদেরা কি এ ব্যাপারে গ্যারান্টি দেবেন? আশার কথা, দেশের এত হরতাল–অবরোধে সাধারণত পোর্ট বন্ধ থাকে না।
দুই প্রকল্পে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আসবে, যেখানে সরকারের নিজেদের বাজেট থেকে কোনো খরচ লাগবে না। আমাদের আর্থিক চাপও আসবে না।
ডিপি ওয়ার্ল্ডের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা বলছে, তারা সাধারণত ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে, জাহাজের অপেক্ষার সময় ৪০ শতাংশ কমাতে পারে, ডুয়েল টাইম কমিয়ে আনে এবং পুরো টার্মিনালকে তথ্যভিত্তিক করে তোলে।
এ ব্যাপারে ২০২৫ সালের ২৩ জুন প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত আমার লেখা ‘যে কারণে চট্টগ্রামে বন্দরে বিদেশি বিনিয়োগ দরকার’ শীর্ষক কলামে বিস্তারিত বলা আছে।
বর্তমানে ভিয়েতনাম, ভারত, এমনকি শ্রীলঙ্কার বন্দরগুলোও দ্রুতগতিতে আধুনিক হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর যদি এখনই র্যাডিকেল সংস্কার না করে, তাহলে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সরবরাহশৃঙ্খলে আমরা মার্জিনালাইজড হয়ে পড়ব।
শিপিং লাইনগুলো সরাসরি কলম্বো বা ক্ল্যাংয়ে যাবে, সেখান থেকে ফিডার করে ছোট জাহাজে পণ্য বাংলাদেশে আসবে, যা রপ্তানিকারকদের জন্য সময় ও খরচ—দুটিই বাড়িয়ে দেবে।
বন্দরের দক্ষতা বাড়লে শুধু জাহাজ দ্রুত লোড-আনলোড হবে না; এর তরঙ্গের প্রভাব পুরো অর্থনীতিতে ছড়িয়ে পড়ে। রপ্তানি প্রবৃদ্ধি প্রতিবছর ৫ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার বাড়তে পারে।
তৈরি পোশাক, কৃষি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং—সব খাতেই অপেক্ষার সময় কমে যাবে। লজিস্টিক খরচ জিডিপির শূন্য দশমিক ৮ থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব।
আজ বাংলাদেশে রপ্তানিকারকদের লজিস্টিক খরচ ভিয়েতনাম ও ভারতের চেয়ে ২০ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি। এই অদক্ষতা যত দিন থাকবে, এফডিআই আসবে না।
দক্ষ বন্দর শুধু অর্থনৈতিক নয়, পরিবেশগতভাবেও টেকসই। জাহাজগুলো যদি ১০ দিনের বদলে ২ দিনে টার্ন অ্যারাউন্ড করতে পারে, তবে জ্বালানি খরচ ও কার্বন নিঃসরণ ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে।
এটি আমাদের জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান লক্ষ্য (এনডিসি) অর্জনেও সহায়ক হবে।
সরকারি রাজস্ব বাড়বে। টিইইউ থ্রুপুট বাড়লে পোর্ট ফি, কাস্টমসের রেভিনিউ, অন্যান্য ডিউটি সবই বাড়ে।
সবচেয়ে বড় ভুল ধারণা, বিদেশি অপারেটর আসলে চাকরি কমবে; বরং টার্মিনালের সক্ষমতা বাড়লে কাজ বাড়ে, আর শ্রমিকদের আরও দক্ষ করে তোলে।
স্বল্প মেয়াদে (১-২ বছর) জাহাজের অপেক্ষার সময় কমবে, মধ্য মেয়াদে (৩-৫ বছর) থ্রুপুট ও রাজস্ব বাড়বে, আর দীর্ঘ মেয়াদে (৫-১০ বছর) রপ্তানি প্রতিযোগিতা ও ক্রেডিট রেটিং উন্নত হবে।
পিপিপি বা জিটুজিতে সব তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব নয়। কারণ, এতে বাণিজ্যিক গোপনীয়তা থাকে। কিন্তু কিছু তথ্য জনগণের জানার অধিকার আছে। যেমন দেশ কী পরিমাণ লাভ করবে?
স্থানীয় পেশাদারদের ভূমিকা কতটা নিশ্চিত? অপারেটরের কেপিআই কী? মোট বিনিয়োগ কত? চট্টগ্রাম পোর্টের সঙ্গে রেভিনিউ শেয়ার কী?
এ সরকারের সময় যেহেতু তিন মাসেরও কম, তাদের তাই প্রধান রাজনৈতিক দল ও স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া দরকার।
এখন যতগুলো আলোচনা হচ্ছে, এর মধ্যে চুক্তির স্বচ্ছতায় আসলে একমাত্র প্রশ্ন—যার উত্তর সরকারে দেওয়া উচিত। কারণ, দেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংস্কার তখনই সফল হয়, যখন বিষয়টি কারও এজেন্ডা না হয়ে সবাই সহরাষ্ট্রীয় নীতিতে পরিণত হয়।
যদিও হাইকোর্টে এনসিটি হস্তান্তরের বৈধতা নিয়ে পিটিশন চলছে। সরকার আশ্বাস দিয়েছে কোর্টের রায় ছাড়া কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।
এটা প্রমাণ করে যে প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার দিকে এগোচ্ছে, জনগণের উদ্বেগ উপেক্ষা করা হচ্ছে না।
আরেকটি বাস্তবতা হচ্ছে, চুক্তির মালিকানা ও নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ শতভাগ সিপিএ ও নৌবাহিনীর হাতেই থাকবে। বিদেশি অপারেটরের এখতিয়ার শুধুই ‘টার্মিনাল ম্যানেজমেন্ট’।
বন্দর বা রাষ্ট্রের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ না। এটি গুরুত্বপূর্ণ মনে করা যে সার্বভৌমত্ব মানে শুধু শতভাগ মালিকানা নয়, বরং নিজের সম্পদ কতটা কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারছি, সেটাও।
অদক্ষ, লোকসানি বন্দরের মালিকানা রাখার চেয়ে একটি দক্ষ, আয়বর্ধক বন্দরে অংশীদারি গ্রহণ করা অনেক বেশি সার্বভৌমত্ববান সিদ্ধান্ত।
গ্লোবালাইজেশনের যুগে ‘মালিকানা’ নয়, ‘নিয়ন্ত্রণ’ ও ‘মূল্য সৃষ্টির ক্ষমতা’ই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সরকার জমি, নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণকারী শক্তি হিসেবে থেকে গেলে সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন থাকে।
আরেকটি নিরাপত্তার জামানত হলো, বাংলাদেশ আলাদা দেশের অপারেটর নিচ্ছে। এক দেশের ওপর নির্ভরতা নেই, প্রতিযোগিতা থাকবে, বেস্ট প্র্যাকটিস আসবে। এই দেশগুলা নিজেদের স্বার্থেই নিরাপত্তা দেবে।
সমস্যা শুধু কনটেইনার হ্যান্ডলিং নয়, সমস্যা পুরো লজিস্টিকস ইকোসিস্টেমে। যদি শুধুই ক্রেনের স্পিড বাড়ানো হয় আর কাস্টমস, আইসিডি গেট, সড়ক লাইন, কনটেইনার বহির্গমনের জন্য রাস্তা যদি অপরিবর্তিত থাকে, তাহলে বন্দরের উন্নতির অর্ধেকই অপচয় হবে।
চট্টগ্রামের ড্রাফট কম, তাই বড় জাহাজ ঢোকে না। সারা দেশের রাস্তার অবস্থাই খারাপ, তাই বন্দরের কনটেইনার বের হতে দেরি হয়।
বে টার্মিনাল দ্রুত বাস্তবায়িত না হলে ড্রাফট সীমাবদ্ধতার কারণে ৬ থেকে ৮ হাজার টিইইউ জাহাজ কখনোই চট্টগ্রামে আসতে পারবে না, লজিস্টিক খরচ কমার পথও আটকে যাবে। বে টার্মিনাল ছাড়া চট্টগ্রাম কখনোই মাদার ভেসেলভিত্তিক বন্দর হতে পারবে না।
আমাদের কাস্টমস আধুনিক তো নয়, বরং ধীর এবং অনেক অনৈতিক কাজের অভিযোগ আছে। বাংলাদেশে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সে যেখানে ৩০ থেকে ৪০ ঘণ্টা লাগে, সেখানে ভিয়েতনামে লাগে ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা।
এই ব্যবধান কমানো ছাড়া বন্দর যতই উন্নত হোক, পুরো সাপ্লাই চেইনে গতি আসবে না। ফলে ডুয়েল টাইম বাড়ে। অর্থাৎ বন্দর উন্নয়ন মানে শুধু বন্দর উন্নয়ন নয়, পুরো সাপ্লাই চেইনের আধুনিকায়ন।
তবে বিশ্লেষকদের একটি বড় উদ্বেগ হলো ‘পায়রা সিনড্রোম’। সবার চিন্তা একটাই, যেন পায়রা বন্দরের মতো দুর্নীতি না হয়। একটা বড় অবকাঠামো বানিয়ে রেখে যদি তা ব্যবহারই না হয়, তাহলে সেটা ‘শ্বেতহস্তী’ প্রকল্প ছাড়া আর কিছুই হবে না।
তাই বাস্তব চাহিদা, ড্রাফট ডেপথ ও শিপিং গতিশীলতা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
পায়রা বন্দরের শিক্ষা হলো, ‘যদি বানাও, তারা আসবে না’, যদি না সঠিক অপারেটর, সঠিক ড্রাফট ও সঠিক মার্কেট কানেকটিভিটি থাকে। এলসিটি ও এনসিটির জন্য প্রস্তাবিত অপারেটররা তাদের গ্লোবাল নেটওয়ার্ক থেকে শিপিং লাইন নিয়ে আসবে।
অর্থাৎ তাদের নিজস্ব কার্গো ফ্লো নিশ্চিত থাকে। এটি পায়রা মডেল থেকে সম্পূর্ণ আলাদা, যেখানে বন্দরটি তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু বিশ্বস্ত অপারেটর বা নিশ্চিত কার্গো ফ্লো ছাড়া।
দেশ যদি আগে হয়, তবে সিদ্ধান্তও হতে হবে দেশের স্বার্থকে কেন্দ্র করে। সরকারের হাতে এখন একটি শক্ত কার্ড রয়েছে। এলসিটি ও এনসিটি উভয়ই উচ্চমূল্যের সম্পদ।
এটি আমাদের দর-কষাকষির ক্ষমতা বাড়ায়। আমরা সর্বোচ্চ সুবিধা আদায় করতে পারি, যদি আমাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকে।
আমরা যদি ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে চুক্তিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই, তাহলে অবশ্যই আমাদের আরব আমিরাতের ভিসা–সংক্রান্ত জটিলতা দূর করিয়ে নিতে হবে।
আল জাবেল বন্দর ব্যবহার করে আমরা যাতে বৈশ্বিক বাজারে প্রবেশ করতে পারি, সে সুযোগও নিতে হবে। এখন সময় সস্তা রাজনীতির নয়, বরং দূরদর্শী অর্থনৈতিক নীতির।
চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন শুধু একটি প্রকল্প নয়, এটা বাংলাদেশের পরবর্তী অর্থনৈতিক রূপান্তরের কেন্দ্রবিন্দু। আমরা যদি এফডিআই-জিডিপি অনুপাতকে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৫ শতাংশে না নিতে পারি, তাহলে ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতি স্বপ্ন হিসেবেই থাকবে।
আমরা কি তথ্যকে ভিত্তি করে এগোব, নাকি শোরগোলকে? তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্তই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে, শোরগোল নয়। ডেটাই হবে নীতির ভিত্তি।
চট্টগ্রাম বন্দরের এই রূপান্তর কেবল একটি প্রকল্প নয়; এটি আমাদের অর্থনীতির জন্য একটি মহা অভিযান। তথ্য-উপাত্তের আলোকে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে থেকে এগিয়ে গেলেই কেবল আমরা এ লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হব এবং এই বিদেশি অংশীদারত্ব বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে বহুদূর এগিয়ে নিতে পারে।
চট্টগ্রাম বন্দর সংস্কার মানে শুধু বন্দর নয়, পুরো অর্থনীতির রূপান্তর।
* সুবাইল বিন আলম, টেকসই উন্নয়নবিষয়ক কলামিস্ট।
- মতামত লেখকের নিজস্ব
![]() |
| চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের অর্থনীতির প্রধান প্রবেশদ্বার। ছবি: প্রথম আলো |

No comments