পার্লামেন্টে অমিত শাহ বনাম রাহুল গান্ধী: ‘ভোট চুরি’ মন্তব্য ঘিরে তীব্র বাকযুদ্ধ

লোকসভায় নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে বিতর্ক চলাকালে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধীর মধ্যে তুমুল বাকযুদ্ধ হয়েছে। রাহুল গান্ধী যখন ভোটার তালিকায় অনিয়ম নিয়ে তার প্রেস কনফারেন্সগুলোর ওপর সরাসরি বিতর্কের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন, তখন অমিত শাহও চড়াও হন। এ খবর দিয়েছে এনডিটিভি।

বক্তব্যে অমিত শাহ অভিযোগ করেন, বিরোধীরা একদিকে ভোটার তালিকার অনিয়ম তুলে ধরে, অন্যদিকে সেই তালিকা হালনাগাদ প্রক্রিয়াতেও আপত্তি তুলছে। তিনি বলেন, বিহারের মতো জায়গায় যখন হেরে যান, তখন বলেন তালিকায় সমস্যা। এই দ্বিচারিতা চলবে না।

রাহুল গান্ধীর ভোট চুরি সংক্রান্ত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে অমিত বলেন, যাদের পরিবারের ‘প্রজন্মগত ভোট জালিয়াতির ইতিহাস’ রয়েছে, তারা এখন ভোট চুরির কথা তুলছেন। ইঙ্গিত ছিল সরাসরি নেহরু-গান্ধী পরিবারের দিকে।

রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তোলেন, কেন নির্বাচন কমিশনারদের অফিসে থাকাকালীন দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তিনি শাহকে তিনটি প্রেস কনফারেন্সের প্রতিটির ওপর খোলামেলা বিতর্কে নামার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। আমি ৩০ বছর ধরে আইনসভা ও সংসদ সদস্য। আমার বক্তব্য কোন ক্রমে হবে তা আপনি ঠিক করবেন না। ধৈর্য ধরুন, সব প্রশ্নের উত্তরই দেব।

ইতিহাস টেনে অমিত দাবি করেন, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার সময় ২৮ জন প্রাদেশিক কংগ্রেস নেতার ভোট পেয়েছিলেন সরদার প্যাটেল। আর নেহরু পেয়েছিলেন মাত্র দুটি ভোট। তবু নেহরুই প্রধানমন্ত্রী হন। এ সময় বিরোধী শিবির থেকে তীব্র প্রতিবাদ ওঠে।

তিনি আরও দাবি করেন, রায়বরেলির আসনে ইন্দিরা গান্ধীর নির্বাচনের বিরুদ্ধে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় বাতিল হলে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে আইন পরিবর্তন করেন। পরে সিনিয়রিটি উপেক্ষা করে চতুর্থ স্থানের বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেন। সোনিয়া গান্ধীও তার নাগরিকত্ব পাওয়ার আগেই ভোট দিয়েছেন। এই অভিযোগও তোলেন অমিত শাহ। যদিও কংগ্রেস তা সঙ্গে সঙ্গে নাকচ করে।

লোকসভা থেকে বেরিয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জবাব পুরোপুরি রক্ষণাত্মক ছিল। তিনি স্বচ্ছ ভোটার তালিকা, ইভিএমের স্থাপত্য বা আমার দেওয়া প্রমাণ- কোনোটি নিয়েই স্পষ্ট করে কথা বলেননি।  

mzamin

No comments

Powered by Blogger.