ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধের পর কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করবেন টেলর গ্রিন
ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ‘মাগা সুপারস্টার’ বা মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন সুপারস্টার হিসেবে পরিচিত গ্রিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় জানান, তিনি ৫ জানুয়ারি কংগ্রেস ছাড়বেন। তিনি লিখেছেন, আমি সামনে একটি নতুন পথের দিকে তাকিয়ে আছি। গ্রিন মূলধারার আলোচনায় আসেন নানা ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রতি সমর্থন এবং ট্রাম্পের প্রতি অটল আনুগত্যের কারণে। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পর তা ভেঙে পড়ে। তাদের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হাতে থাকা প্রয়াত অপরাধী জেফরি এপস্টেইনের সব নথি প্রকাশের বিষয়ে।
কংগ্রেস ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া ভিডিও বার্তায় গ্রিন নিজের সাফল্যগুলোর তালিকা দেন এবং ট্রাম্পকে সমালোচনা করেন। ট্রাম্প হুমকি দিয়েছিলেন যে, তিনি গ্রিনকে হারাতে পরের বছরের নির্বাচনে একজন রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বীকে সমর্থন করবেন। গ্রিন বলেন, আমার নিজের প্রতি যথেষ্ট সম্মান আছে। পরিবারকে আমি খুব ভালোবাসি। আমি চাই না আমার রাজ্যের মানুষ এমন একটি আক্রমণাত্মক ও বিভাজন সৃষ্টিকারী প্রাইমারি নির্বাচন সহ্য করুক, যা ঘটত সেই প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে, যার জন্য আমরা লড়েছি।
কংগ্রেস থেকে বিদায় নেয়ার ঘোষণা দিলেও, মার্কিন গণমাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে গ্রিন জর্জিয়ার গভর্নর অথবা সিনেট আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী। এই সম্ভাবনা নিয়ে প্রেসিডেন্টও প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন। তিনি ট্রুথ সোশালে তাদের বিরোধের সময় লিখেছিলেন, তিনি গ্রিনকে আগেই বলেছিলেন দুর্বল জনমত জরিপের কারণে এই দুই পদেই তার না থাকা উচিত। দীর্ঘদিন ধরে ট্রাম্প ও গ্রিন ছিলেন মিত্র। গ্রিন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার অন্যতম প্রবল সমর্থক। কিন্তু গ্রিন যখন এপস্টেইন সম্পর্কিত সব নথি প্রকাশের পিটিশনের পক্ষে থাকা রিপাবলিকানদের একজন হয়ে ওঠেন, তখন থেকেই তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। ট্রাম্প প্রথমে এই আইনটির বিপক্ষে ছিলেন। কিন্তু পরে অবস্থান বদলে রিপাবলিকানদের সমর্থনের আহ্বান জানান। কারণ গ্রিন ও আরও বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান ডেমোক্রেটদের সঙ্গে যোগ দিয়ে আইনটি পাস করাতে প্রস্তুত ছিলেন। গ্রিন দীর্ঘদিন ধরে এপস্টেইন সম্পর্কিত নথি প্রকাশের দাবিতে সোচ্চার। একসময় এটি ট্রাম্প ও তার মাগা সমর্থকদের ঐক্যবদ্ধ করেছিল। কিন্তু এখন তা বিভাজন সৃষ্টি করেছে।
গত কয়েক মাস ধরে গ্রিন বিভিন্ন টেলিভিশন টকশোতে ট্রাম্প ও রিপাবলিকান নেতৃত্বকে সমালোচনা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্প ভোটারদের জীবনযাত্রার ব্যয় কমাতে যথেষ্ট কাজ করছেন না এবং তার শুল্কনীতি ভুল। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন- ট্রাম্প কি এখনও আমেরিকা ফার্স্ট নীতি অনুসরণ করছেন, নাকি বিদেশনীতি নিয়ে বেশি ব্যস্ত? তবে সবচেয়ে বড় অভিযোগ ছিল- এপস্টেইন নথি প্রকাশে ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের অস্বীকৃতি; যার জন্য কংগ্রেসের কোনো আইন প্রয়োজন ছিল না। প্রেসিডেন্ট চাইলে যেকোনো সময় তা প্রকাশের নির্দেশ দিতে পারতেন। ট্রাম্প একাধিক সামাজিক মাধ্যম পোস্টে তাকে বিশ্বাসঘাতক এবং উন্মাদ বলে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন গ্রিনকে পরাজিত করতে তিনি একজন প্রতিদ্বন্দ্বীকে সমর্থন দেবেন। অবশেষে এপস্টেইন নথি প্রকাশে বিচার বিভাগকে বাধ্য করার আইনটি মঙ্গলবার কংগ্রেসে পাস হয় এবং বুধবার ট্রাম্প সেটিতে স্বাক্ষর করেন।

No comments