যেকোনো ভবিষ্যৎ আগ্রাসনে কঠোর জবাব দেবে পাকিস্তান
এতে আরও বলা হয়, মে মাসে ভারত ও পাকিস্তান দুই প্রতিবেশী দেশের সংঘর্ষে ভারত ৫ ও ৬ মে রাতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন বেসামরিক ও নিরাপত্তাকর্মী নিহত হন। এরপর পাকিস্তান সাতটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে। ভারতের এই হামলা চালায় জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগাম এলাকায় পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর। পেহেলগাম হামলায় ২৮ জন নিহত হন। নয়াদিল্লি কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ না দিয়েই পাকিস্তানকে দায়ী করে। পাকিস্তান অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করে।
পরে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনিয়ান-উম-মারসুস’ নামে বৃহৎ পাল্টা হামলায় বিভিন্ন অঞ্চলে ভারতের ২০টিরও বেশি সামরিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া এক যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে এ দুই পরমাণুসজ্জিত দেশের যুদ্ধ ১০ মে শেষ হয়।
যুদ্ধের পরপরই সংঘর্ষকালীন নেতৃত্বের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে জেনারেল মুনিরকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করা হয়। এদিকে সেনাপ্রধান আবারও পাকিস্তানের শান্তিপূর্ণ অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তবে বলেন, আগ্রাসন হলে পাকিস্তান দৃঢ় জবাব দেবে, যেমনটি মে মাসে ভারতের বিরুদ্ধে দিয়েছিল। পবিত্র কোরআনের উদ্ধৃতি দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ঈমান থাকলে মুমিনরা শত্রুর শক্তির তোয়াক্কা না করেই বিজয় অর্জন করতে পারে- এ প্রতিশ্রুতি আল্লাহ দিয়েছেন। পাকিস্তান মে মাসে সেটিই প্রমাণ করেছে। সভায় উপস্থিতরা তাকে অভিনন্দন জানাতে শুরু করলে তিনি বলেন, পাকিস্তানের উন্নতির জন্য দোয়া করুন। তিনি আরও বলেন, আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব তিনি শেষ পর্যন্ত পালন করবেন।
উল্লেখ, ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে সরকার প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান (সিডিএফ) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। এর ফলে তার মেয়াদ নতুনভাবে শুরু হবে। ১৩ নভেম্বর জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার বলেন, সিডিএফের মেয়াদ নিয়োগের তারিখ থেকে পাঁচ বছর হবে। সিনেট ও জাতীয় পরিষদ গৃহীত সেনাবাহিনী আইন সংশোধনীতে বলা হয়েছে, সংবিধানের ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সেনাপ্রধান, যিনি একই সঙ্গে সিডিএফ, তার মেয়াদও ওই পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকেই গণনা করা হবে।
পাকিস্তান-জর্ডান সামরিক সহযোগিতা আরও বিস্তারের অঙ্গীকার
পাকিস্তান ও জর্ডান সামরিক সহযোগিতা আরও বিস্তারের অঙ্গীকার করেছে। জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ রোববার পাকিস্তানি সেনাদের কার্যকর সক্ষমতার প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে পাকিস্তানের বেসামরিক ও সামরিক নেতৃত্ব হাশেমি রাজতন্ত্রের সঙ্গে সামরিক-সামরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
দুই দিনের সফরে পাকিস্তানে থাকা বাদশাহ আবদুল্লাহ দিনটি অত্যন্ত ব্যস্তভাবে কাটান। তিনি গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ডিফেন্স সল্যুশনস (জিআইডিএস), টিলা ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জেস এবং আইওয়ান-এ-সদর পরিদর্শন করেন। প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা করেন। জিআইডিএসে পৌঁছালে সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ অসিম মুনির ও ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান। তার সঙ্গে ছিলেন প্রিন্সেস সালমা বিনতে আবদুল্লাহ এবং জর্ডানের বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল।
সফরকালে বাদশাহকে জিআইডিএসের কাঠামো, সক্ষমতা ও পণ্যের পোর্টফোলিও সম্পর্কে ব্রিফ করা হয়। এতে পাকিস্তানের নিজস্ব প্রতিরক্ষা শিল্পের উন্নতি, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সম্ভাব্য নতুন পথ তুলে ধরা হয় বলে সামরিক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। পরে আইএসপিআর জানায়, বাদশাহ আবদুল্লাহ টিলা ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জও পরিদর্শন করেন। এই সময় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও আজারবাইজানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভুগার মুসতাফায়েভ উপস্থিত ছিলেন। অতিথিরা একটি যৌথ ফায়ার ও ম্যানুভার মহড়া প্রত্যক্ষ করেন। আইএসপিআর জানায়, মহড়ায় বহুবিধ ক্ষেত্রের সমন্বিত অপারেশন, প্রচলিত ও আকাশ-অগ্নিশক্তি, সমন্বিত ম্যানুভার এবং ড্রোনসমর্থিত স্পেকট্রাম যুদ্ধ সক্ষমতা প্রদর্শিত হয়।

No comments