ভার্জিনিয়ার নতুন লেফটেন্যান্ট গভর্নর মুসলিম ডেমোক্র্যাট গাজালা হাশমি

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডেমোক্র্যাট প্রার্থী গাজালা হাশমি ভার্জিনিয়ার লেফটেন্যান্ট গভর্নর নির্বাচনে রিপাবলিকান জন রিডকে পরাজিত করে জয়লাভ করেছেন। হাশমি ভার্জিনিয়া সিনেটে প্রথম মুসলিম এবং প্রথম দক্ষিণ এশীয় আমেরিকান সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।  তার সাম্প্রতিক এই জয়ের অর্থ, এখন তার সিনেট আসনটি পূরণের জন্য বিশেষ নির্বাচন করতে হবে। হাশমি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন ২০১৯ সালে এবং বিস্ময়করভাবে এক রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত রাজ্য সিনেটের আসন উল্টে দিয়ে ভার্জিনিয়ার জেনারেল অ্যাসেম্বলিতে নির্বাচিত হন। পাঁচ বছর পর, ২০২৪ সালে, তিনি সিনেটের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কমিটির চেয়ার হিসেবে নিযুক্ত হন- যা ডেমোক্রেট পার্টির দুইটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার- প্রজনন স্বাধীনতা ও জনশিক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বের পদ।

হাশমির ওয়েবসাইটে উল্লেখ রয়েছে, তিনি অন্যদের জীবনমান উন্নত করতে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। বিশেষ করে আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং পরিবেশগত ন্যায়বিচারের বৈষম্য দূরীকরণে মনোনিবেশ করে কাজ করে যাচ্ছেন। গাজালা হাশমি ১৯৬৪ সালে ভারতের হায়দরাবাদে জিয়া হাশমি ও তানভীর হাশমির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।

শৈশব কেটেছে মালাকপেটে তার নানাবাড়িতে। তিনি মাত্র চার বছর বয়সে মা ও বড় ভাইয়ের সঙ্গে ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। সেখানে তারা তার বাবার সঙ্গে জর্জিয়ায় যোগ দেন। গাজালার পিতা অধ্যাপক জিয়া হাশমি, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। সেখান থেকে তিনি এম.এ. ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলাইনা থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে পিএইচডি সম্পন্ন করেন এবং খুব শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনি সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানকার পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

গাজালার মা তানভীর হাশমি, বিএ এবং বি.এড ডিগ্রিধারী। তিনি ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন্স কলেজ, কোঠি থেকে পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। গাজালা তার স্কুল জীবনে শ্রেষ্ঠ ছাত্রী (ভ্যালেডিক্টোরিয়ান) হিসেবে স্নাতক হন এবং একাধিক পূর্ণ স্কলারশিপ ও ফেলোশিপ অর্জন করেন। তিনি জর্জিয়া সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে অনার্সসহ বিএ এবং আটলান্টার এমোরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমেরিকান সাহিত্য বিষয়ে পিএইচডি অর্জন করেন। ১৯৯১ সালে গাজালা তার স্বামী আজহার রফিককে নিয়ে রিচমন্ড এলাকায় চলে যান। তাদের দুই প্রাপ্তবয়স্ক কন্যা রয়েছে। তারা হলেন ইয়াসমিন ও নূর। দু’জনেই চেস্টারফিল্ড কাউন্টি পাবলিক স্কুল এবং ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক। গাজালা হাশমি প্রায় ৩০ বছর ধরে অধ্যাপনা করেছেন। প্রথমে ইউনিভার্সিটি অব রিচমন্ডে এবং পরে রেনল্ডস কমিউনিটি কলেজে। রেনল্ডস কলেজে তিনি সেন্টার ফর এক্সিলেন্স ইন টিচিং অ্যান্ড লার্নিং প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

https://mzamin.com/uploads/news/main/188082_Abul3.webp

No comments

Powered by Blogger.