ইউরোভিশন ২০২৬ : ইভেন্টে ইসরাইল অংশ নিলে প্রতিযোগিতা করবে না স্লোভেনিয়া

ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতায় ইসরাইলের অংশগ্রহণ নিয়ে বিতর্ক ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। কারণ ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী দেশ স্লোভেনিয়া জানিয়ে দিয়েছে যে,  আগামী বছর ইসরাইলি প্রতিনিধিদলকে আমন্ত্রণ  জানানো হলে তারা প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে না। মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ইউরোভিশনে ইসরাইলের অংশগ্রহণ দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত দুই বছরে, এই আলোচনা আরও জোরালো হয়েছে, দেশটির উপস্থিতির কারণে অনেক দর্শক প্রতিযোগিতাটি বয়কট করেছেন। বেশ কয়েকজন অংশগ্রহণকারী তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই বছরের শুরুর দিকে, ইউরোভিশনের অংশগ্রহণকারী সম্প্রচারকদের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল যে গাজায় চলমান যুদ্ধ সত্ত্বেও ইসরাইলের প্রতিযোগিতার অংশ নেয়া উচিত হবে কিনা। বিষয়টি নিয়ে পুনর্মূল্যায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

স্লোভেনীয় সম্প্রচারক আরটিভিএসএলও এখন বলেছে যে, ইসরাইলকে নিষিদ্ধ করা হলে তবেই  তারা আগামী বছর ইউরোভিশনে ফিরে আসবে।  ঠিক যেমন ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে রাশিয়াকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আরটিভিএসএলও-এর যোগাযোগ বিভাগ একটি বিবৃতি জারি করে বলেছে যে, ‘ইউরোভিশনে অংশ গ্রহণের বিষয়টি নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত  নেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে, এটা স্পষ্ট হওয়া উচিত যে ইবিইউ  ( European Broadcasting Union)  ইসরাইলের অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে কিনা এবং ভোটদানের স্বচ্ছতা সম্পর্কে বেশ কয়েকটি ইবিইউ সদস্য রাষ্ট্রের মন্তব্য বিবেচনা করবে কিনা। সেইসাথে  এটাও স্পষ্ট হবে যে আমরাও এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবো কিনা।’

জুলাইয়ের শুরুতে লন্ডনে অনুষ্ঠিত ইবিইউ সাধারণ পরিষদে, আরটিভি স্লোভেনিয়া তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছিল -গাজায় গণহত্যার পরও  যদি ইসরাইল ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে, তাহলে তারা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে না। ভবিষ্যতের প্রতিযোগিতায় ইসরাইলের সম্ভাব্য অংশগ্রহণ সম্পর্কে ইবিইউ বর্তমানে তার সদস্যদের সাথে আলোচনা করছে। ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতার পরিচালক মার্টিন গ্রিন হাফপোস্ট ইউকে -তে বলেছেন, ‘আমরা মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাতের বিষয়ে উদ্বেগ  বুঝতে পারছি । গানের প্রতিযোগিতা এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা কীভাবে পরিচালনা করা যায় সে সম্পর্কে মতামত সংগ্রহ করার জন্য আমরা এখনও সমস্ত ইবিইউ  সদস্যদের সাথে পরামর্শ করছি। সম্প্রচারকরা ডিসেম্বরের মাঝামাঝি  নিশ্চিত করতে পারবেন যে তারা আগামী বছর ভিয়েনায় অনুষ্ঠেয় ইভেন্টে অংশ নিতে চান কিনা। প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চাওয়া  প্রতিটি সদস্যের  সিদ্ধান্তকে সম্মান করা হবে।’  অস্ট্রিয়ার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জেজে এবং গত বছরের বিজয়ী সুইজারল্যান্ডের নেমো হাফপোস্ট ইউকে-এর সাথে সাম্প্রতিক একান্ত সাক্ষাৎকারে বিষয়টি নিয়ে তাদের মতামত ভাগ করে নিয়েছিলেন - তারাও ইউরোভিশন থেকে ইসরাইলের বহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছেন।
সূত্র : হাফ পোস্ট

ইসরায়েলি হামলায় নিহত এক ফিলিস্তিনির মরদেহের পাশে স্বজনদের আহাজারি
ইসরায়েলি হামলায় নিহত এক ফিলিস্তিনির মরদেহের পাশে স্বজনদের আহাজারি। ছবি: রয়টার্স
প্রথম আলোঃ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬২ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ২৩ মাস ধরে চলা হামলায় উপত্যকাটিতে নিহত হয়েছেন ৬৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬২ হাজারের বেশি। হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ৬২ জনের মধ্যে ৪১ জনই গাজা নগরীর বাসিন্দা। সকাল থেকে ইসরায়েলি সেনাদের অবিরাম হামলায় তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েল যদি গাজা নগরী দখলের অভিযান এগিয়ে নেয়, তাহলে ‘বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতি দেখা দেবে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের সতর্কতা উপেক্ষা করেই গাজা নগরী ছেড়ে বাসিন্দাদের চলে যেতে বলেছে ইসরায়েল। তাঁদের উপত্যকার দক্ষিণ দিকে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশনার পরপরই হামলা চালিয়ে গাজা নগরীর আরেকটি বহুতল ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। ওই ভবনে বেশ কয়েকটি বেসামরিক ফিলিস্তিনি পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। গত শুক্রবার গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের ৭০০তম দিন পূর্ণ হয়েছে। এদিন গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর উপত্যকাটিতে ইসরায়েলের নৃশংস হামলা শুরুর পর থেকে অন্তত ১৯ হাজার ৪২৪টি শিশু নিহত হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি ৫২ মিনিটে একটি শিশু প্রাণ হারিয়েছে। নিহত শিশুদের মধ্যে নবজাতক ও এক বছরের কম বয়সীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার।

No comments

Powered by Blogger.