ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বললেন: গাজা জ্বলছে
নেতানিয়াহু ও রুবিও দু’জনেই সোমবার বলেন, গাজার সংঘাত শেষ করার একমাত্র উপায় হলো হামাসকে ধ্বংস করা এবং অবশিষ্ট ৪৮ জন জিম্মিকে মুক্ত করা- যার মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা অন্তর্বর্তী যুদ্ধবিরতির আহ্বান সরিয়ে রেখে দ্রুত সংঘাতের অবসান দাবি করেন। অন্যদিকে, হামাস জানিয়েছে, তারা কেবল অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দেবে ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের শর্তে। গাজায় যুদ্ধ শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যখন হামাস নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা দক্ষিণ ইসরাইলে ঢুকে পড়ে প্রায় ১২০০ জনকে হত্যা করে- অধিকাংশই ছিল বেসামরিক এবং ২৫১ জনকে অপহরণ করে। এরপর থেকে বেশির ভাগ জিম্মিকে কাতার-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি বা অন্যান্য চুক্তির মাধ্যমে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ইসরাইলের পাল্টা হামলায় কমপক্ষে ৬৪,৮৭১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তবে কতজন বেসামরিক আর কতজন যোদ্ধা তার বিভাজন মন্ত্রণালয় জানায়নি। হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকার পরিচালিত এই মন্ত্রণালয়, যেখানে চিকিৎসকরা কাজ করেন, বলছে নিহতদের প্রায় অর্ধেকই নারী ও শিশু।
হামাস নেতাদের ওপর আরও হামলার ইঙ্গিত নেতানিয়াহুর
কাতারে হামলার পর হামাস নেতাদের বিরুদ্ধে আরও হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, তারা ‘যেখানেই থাকুক না কেন’ কোনো রকম সুরক্ষা পাবেন না। জেরুজালেমে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, প্রতিটি দেশেরই ‘নিজস্ব সীমার বাইরে গিয়েও আত্মরক্ষার অধিকার’ রয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। কাতারে জ্যেষ্ঠ হামাস নেতাদের ওপর ইসরাইলের হামলা আন্তর্জাতিক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পও এ নিয়ে সমালোচনা করেছেন। হামাস জানায়, এই হামলায় ছয়জন নিহত হলেও শীর্ষ নেতারা বেঁচে গেছেন।
হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা আছে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে নেতানিয়াহু সাংবাদিকদের বলেন, আমরা একাই করেছি। শেষ। ওদিকে আরব নেতারা কাতারের প্রতি সংহতি জানাতে সম্মেলন করেছেন। কাতারের প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন-ইসরাইল সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না- এ প্রসঙ্গে রুবিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার উপসাগরীয় মিত্রদের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রেখেছে। কাতারে একটি বড় মার্কিন বিমান ঘাঁটি আছে এবং দেশটি গাজা যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় মধ্যস্থতাকারীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
রবিবার নেতানিয়াহু সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল সম্পর্ক পশ্চিমা প্রাচীরের পাথরের মতোই স্থায়ী। ওদিকে ইসরাইলি সেনারা গাজা সিটির পশ্চিমাঞ্চলে স্থল অভিযান শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতিমধ্যেই বহু আবাসিক ভবন ধ্বংস করা হয়েছে। প্রায় আড়াই লাখ ফিলিস্তিনি দক্ষিণে পালিয়ে গেছেন বলে দাবি আইডিএফের। তবে আরও কয়েক লাখ মানুষ শহরে রয়ে গেছেন। অনেকেই জানিয়েছেন, দক্ষিণ গাজাও নিরাপদ নয়। কারণ সেখানেও ইসরাইলি বিমান হামলা হয়েছে। কেউ কেউ দক্ষিণে গিয়ে তাঁবু ফেলতে না পেরে আবার গাজা সিটিতে ফিরে এসেছেন।

No comments