অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় ঘিরে উত্তপ্ত আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেস

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে অব্যাহত অভিবাসন অভিযান। দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভকারীরা ফেডারেল এজেন্টদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। যার ফলে শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারা তাদের বিচারের আওতায় আনার হুমকি দিয়েছেন। শনিবার দক্ষিণ-পূর্ব লস অ্যাঞ্জেলেসের প্যারামাউন্ট এলাকায় একটি দোকানের বাইরে অভিবাসীদের আটকের খবর সামনে আসার পর নতুন করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

বিক্ষোভকারীরা কর্মকর্তাদের ব্যঙ্গ করে এবং ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এজেন্টদের এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানায়। প্রতিবাদকারীদের মধ্যে একজন জানান, ‘কোনও মানুষ অবৈধ নয়।’

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সচিব ক্রিস্টি নয়েম সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘এলএ দাঙ্গাবাজদের’ সম্বোধন করে একটি বার্তা পোস্ট করেছেন, সতর্ক করে দিয়েছেন যে অভিবাসন আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ সহ্য করা হবে না।

তিনি লিখেছেন, ‘আপনি আমাদের থামাবেন না বা আমাদের গতি কমাতে পারবেন না। আইসিই আইন প্রয়োগ করবে এবং যদি আপনি কোনও আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তার উপর হাত রাখেন, তাহলে আপনার বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ পরিসরে মামলা করা হবে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সীমান্ত জার, টম হোমান, ফক্স নিউজকে বলেছেন যে, শনিবার সন্ধ্যায় লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়। ইতিমধ্যেই আইসিই এজেন্টরা শহরে আইন প্রয়োগকারী অভিযান পরিচালনা করে অভিবাসন লঙ্ঘনের অভিযোগে কমপক্ষে ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরপর বিক্ষোভ মাথাচাড়া দেয়।

বিক্ষোভকারীরা লস অ্যাঞ্জেলেসের শহরতলিতে এডওয়ার্ড আর রয়েল ফেডারেল বিল্ডিংয়ের প্রবেশপথ এবং প্রস্থান পথ বন্ধ করে দেয়, যেখানে আটক ব্যক্তিদের রাখা হয়েছে। ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস) এক বিবৃতিতে বলেছে যে, ‘১,০০০ দাঙ্গাবাজ একটি ফেডারেল আইন প্রয়োগকারী ভবন ঘিরে ফেলে এবং আইসিই আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের উপর হামলা চালায়। ভবন এবং করদাতাদের অর্থায়নে পরিচালিত সম্পত্তি নষ্ট করে।’

অভিবাসন সংক্রান্ত কঠোর ব্যবস্থা ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতির অংশ, যেখানে তিনি রেকর্ড সংখ্যক মানুষকে কাগজপত্র ছাড়াই দেশে ফেরত পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কারণ হোয়াইট হাউস আইসিই-এর জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ৩,০০০ অভিবাসীকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। কিন্তু দেশে বৈধভাবে বসবাসকারী ব্যক্তিরা তারাও ব্যাপক অভিবাসন দমন অভিযানের কবলে পড়েছেন। প্যারামাউন্ট এলাকার কাছে লস অ্যাঞ্জেলেসের কম্পটন থেকে আল জাজিরার রিপোর্টার  রবার্ট রেনল্ডস জানিয়েছেন যে, শনিবার পুলিশ ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস এবং ফ্ল্যাশব্যাং গ্রেনেড ব্যবহার করে।

শনিবারের বিক্ষোভ এবং অভিবাসন তল্লাশির খবরে আইসিই বা ডিএইচএসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। লস অ্যাঞ্জেলেসের ডেমোক্র্যাটিক মেয়র কারেন বাস শুক্রবার এক বিবৃতিতে অভিবাসন তল্লাশির নিন্দা জানিয়েছেন। বাস বলেন, ‘যা ঘটেছে তাতে আমি ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ। এই কৌশলগুলো আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে সন্ত্রাসের বীজ বপন করে এবং আমাদের শহরের নিরাপত্তার মৌলিক নীতিগুলিকে ব্যাহত করে। আমরা এটি মেনে নেব না।’

সূত্র : আলজাজিরা

mzamin

No comments

Powered by Blogger.