দূরনিয়ন্ত্রিত সেক্স রোবট: পাল্টে দেবে জীবনধারা!

রোবট আবিষ্কার পাল্টে দিয়েছে পৃথিবীর মানুষের আচার-আচরণ, কাজের ধারা। এতদিন কারখানা, দোকানপাটে কাজ করতো রোবট। কিন্তু এখন তারা পুরুষের শয্যাসঙ্গী হিসেবেও ব্যবহার হচ্ছে। এক্ষেত্রে রোবটকে বানানো হচ্ছে অবিকল মানুষের মতো আকৃতি দিয়ে। বিশেষ করে সিনেমাতেও তারা অভিনয় করছে। ‘অস্টিন পাওয়ারস’ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সিনেমা ‘সাবসার্ভিয়েন্স’ পর্যন্ত পুরুষের শয্যাসঙ্গী হিসেবে রোবট ব্যবহৃত হচ্ছে। এর সাধারণ নাম সেস্ক রোবট। বহুদিন ধরেই ফিল্মি কালচারে জায়গা করে নিয়েছে তারা। তবে এখন আর কল্পনার বিষয় নয়, এই প্রযুক্তি ধীরে ধীরে বাস্তব জগতে ঢুকে পড়ছে। এমনকি বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন যে, ২০৫০ সালের মধ্যে মানুষ এবং রোবটের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক, মানুষ-মানুষের শারীরিক সম্পর্কের চেয়েও বেশি তীক্ষ্ণ ও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে।

এই পটভূমিতে চীনের ডংগুয়ান শহরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান রিডমি নিয়ে এসেছে তাদের নতুন, অভিনব এবং কিছুটা বিতর্কিত পণ্য- একটি দূরনিয়ন্ত্রিত সেক্স রোবট। এর দাম প্রায় ১,৪০০ পাউন্ড (প্রায় ১,৯০০ ডলার)। রোবটটি ব্লুটুথের মাধ্যমে একটি মোবাইল অ্যাপের সঙ্গে সংযুক্ত করা যায়। মুটুয়াফান নামে পরিচিত অ্যাপের মাধ্যমে এর ব্যবহারকারী রোবটকে দিয়ে সব করাতে পারবেন। মানুষের মতোই আচরণ করাতে পারবেন এই রোবটকে দিয়ে। এই অ্যাপ পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন প্লাটফর্মে। অ্যাপে একটি “রুম” তৈরি করা যায়। সেখানে ১০ জন পর্যন্ত মানুষ যোগ দিতে পারে এবং রোবটটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এতে আছে ১০টি কম্পন মোড, ১০টি সাকশন মোড, ৬টি শব্দ মোড। বিভিন্ন ত্বকের রঙ, চুলের স্টাইল, চোখের রঙ, এমনকি পরী আকৃতির রোবটও পাওয়া যায়।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এটি দেহগত ঘনিষ্ঠতা ও ডিজিটাল ইন্টারঅ্যাকশনের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। কিন্তু আশঙ্কাও রয়েছে। ইএসইটির সাইবার নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক মুর সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, এ ধরনের ইন্টারনেট অব থিংস ডিভাইসগুলোতে নিরাপত্তার ঘাটতি থাকতে পারে। হ্যাকাররা যদি অ্যাপ বা রোবটের সফটওয়্যারে প্রবেশ করতে পারে, তাহলে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত মুহূর্তের ডেটা চুরি করে ব্ল্যাকমেইল করাও সম্ভব। আরও উদ্বেগের বিষয় হল, এই রোবটগুলি বাড়ির ভেতর নজরদারির মাধ্যমেও ব্যবহৃত হতে পারে, যদি তা দুর্বল সাইবার নিরাপত্তা দিয়ে তৈরি হয়।
এ ধরনের পণ্য সমাজে নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। তার মধ্যে আছে নারী-পুরুষে শারীরিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ, প্রযুক্তির ব্যবহার, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা। মানুষের সম্পর্কের স্বরূপ কীভাবে বদলাচ্ছে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। 

mzamin

No comments

Powered by Blogger.