গাজার ৭৭ শতাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরায়েল
আজ রোববার গাজার জনসংযোগ কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বেসামরিক ও আবাসিক এলাকায় সরাসরি স্থল অভিযান ও দখলদার বাহিনী মোতায়েনের মাধ্যমে গাজার ৭৭ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ইসরায়েল। এসব এলাকা থেকে হয় ফিলিস্তিনিদের চলে যেতে বলা হয়েছে, না হয় গুলি চালানো হচ্ছে। এতে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারছেন না তাঁরা।
দখলদারি বন্ধে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানিয়েছে গাজার জনসংযোগ কার্যালয়। তারা বলেছে, উপত্যকাটির বেশির ভাগ এলাকায় চলমান জাতিগত নিধন, উপনিবেশবাদ, আগ্রাসন ও দখলদারি এটাই দেখাচ্ছে যে আন্তর্জাতিক সব আইন ও রীতিনীতি লঙ্ঘন করে শক্তি খাটিয়ে একটি ‘চূড়ান্ত সমাধান’ চাপিয়ে দেওয়ার রাজনৈতিক ইচ্ছা রয়েছে ইসরায়েলের।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। মাস দুয়েকের যুদ্ধবিরতির সময় ছাড়া উপত্যকাটিতে নির্বিচার চলছে মানুষ হত্যা। গতকালও গাজায় অন্তত ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ দিন দক্ষিণের খান ইউনিস, উত্তরের জাবালিয়া ও মধ্য গাজার নুসেইরাতে হামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আশরাফ আবু নার মানের এক সাংবাদিক রয়েছেন।
গাজার জনসংযোগ কার্যালয়ের হিসাবে, এ নিয়ে সংঘাত শুরুর পর থেকে উপত্যকাটিতে প্রায় ৫৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাঁদের মধ্যে নারী ও শিশুই বেশি। এ সময় আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার মানুষ।
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ২২০ সাংবাদিক নিহত
গাজায় ১৯ মাস ধরে চলমান হামলায় মোট ২২০ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। গাজার জনসংযোগ কার্যালয় এ হিসাব দিয়েছে। এই সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন আশরাফ আবু নার নামের একজন। আজ রোববারই ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন তিনি।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। মাস দুয়েকের যুদ্ধবিরতির সময় ছাড়া উপত্যকাটিতে নির্বিচার চলছে মানুষ হত্যা। আজও গাজায় অন্তত ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ দিন দক্ষিণের খান ইউনিস, উত্তরের জাবালিয়া ও মধ্য গাজার নুসেইরাতে হামলা হয়েছে।
গাজার জনসংযোগ কার্যালয়ের হিসাবে, গাজায় ১৯ মাস ধরে চলমান হামলায় এখন পর্যন্ত ২২০ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে সংঘাত শুরুর পর থেকে উপত্যকাটিতে প্রায় ৫৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাঁদের মধ্যে নারী ও শিশুই বেশি। এ সময় আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার মানুষ।
উদ্ধার সরঞ্জামের অভাবে গাজায় হাজার হাজার মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে মারা যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে উপত্যকাটির সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ। আজ সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আল-মুগাইর বলেন, ‘আমাদের তথ্য অনুযায়ী আমরা সহায়তা করতে না পারার কারণে ৯ হাজার ৭০০ জন ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়া অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন।’
গাজায় ইসরায়েলের ওপর পাল্টা আঘাত হানার কথা বলেছে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেডস। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০ মে খান ইউনিসের আল-কারারা এলাকায় একটি বাড়িতে ইসরায়েলি সেনাদের একটি দল অবস্থান করছিল। সেখানে হামাস যোদ্ধারা বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে বাড়িটি ধ্বংস হয়ে যায় এবং ‘শত্রু’ সেনারা হতাহত হন।
অনাহারে শিশুর মৃত্যু
এদিকে ইসরায়েল গাজায় দিনে ১০০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিলেও তার অনেক কম পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছে উপত্যকাটির কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার পর সেখানে ৩০০টি ত্রাণের ট্রাক প্রবেশ করেছে। তবে ফিলিস্তিনের একজন কর্মকর্তার অভিযোগ, মাত্র ৯২ ট্রাক হাতে পেয়েছেন তাঁরা।
এমন পরিস্থিতিতে খাবারসহ জরুরি পণ্যের অভাবে অনাহার-অর্ধাহারে রয়েছেন গাজার বাসিন্দারা। অনেক ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে খাবারের মজুত শেষ হয়ে গেছে। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেছে, গাজায় প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ ট্রাক ত্রাণ প্রয়োজন। উপত্যকাটির বাসিন্দাদের আর অপেক্ষা করার অবস্থা নেই।
খাবারের অভাবে অনাহারে গাজায় চার বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। তাঁর নাম মোহাম্মদ ইয়াসিন। এর মধ্য দিয়ে গাজায় ইসরায়েলের অবরোধ শুরুর পর থেকে অনাহারে মৃত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে ৫৮-তে দাঁড়াল।
![]() |
| ৭ অক্টোবর থেকে গাজাকে অবরুদ্ধ করে নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। পাশাপাশি তারা গাজায় স্থল অভিযানও চালাচ্ছে। ফাইল ছবি: রয়টার্স |

No comments