‘আমি কষ্ট পাইনি তবে বিব্রত হয়েছি’ by সামন হোসেন
আপনার কী মনে হয়? কেন মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে সরকারি ছুটির মধ্যে প্রজ্ঞাপন দিয়ে আপনাকে সরিয়ে দেয়া হলো?
চপল: এটা
আসলে আমার চেয়ে আপনারা ভালো বলতে পারবেন। আমি আসলে কিছুই জানি না। আমি
কারো কাছে আমাকে রাখার জন্য যেমন তদবির করিনি, তেমনি কেন বাদ দেয়া হয়েছে
তাও জানতে চাইনি। আমি তো আরচারি সেবক। এখন উনারা যা ভালো মনে করেছেন তাই
করেছেন। কে বা কারা বাইরে থেকে খেলছে, তা তো বলতো পারবো না। তবে আমি
কাপুরুষ নই যে, সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বাদ দিয়েছে বলে ফেডারেশনেই আর থাকবো
না। বড় পদে না থেকেও যে খেলাটি এগিয়ে নেওয়া যায় সেই চেষ্টা করে যাবো।
সামনে দুটি প্রকল্প আছে। সেটা আগে এখন শেষ করতে হবে।
দায়িত্ব দেয়ার পর ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে সরিয়ে দেয়াতে আপনি কি কষ্ট পাননি?
চপল: সত্যি বলতে আমি একটুও কষ্ট পাইনি। তবে বিব্রত হয়েছি।
আপনি বললেন কে বা কারা বাইরে থেকে খেলছে। তারা কারা?
চপল: ক্রীড়াঙ্গনে আমার কোনো শত্রু নেই। যারা আছেন তারা সবাই আমার শুভাকাঙ্ক্ষী। আমি কারো ওপর দায় চাপাতে চাই না।
কিন্তু সার্চ কমিটি তো সরাসরি আপনার বিরোধিতা করেছে। আপনাকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি দেয়ার পর পদত্যাগের হুমকি দিয়েছে-
চপল: দেখুন
সরকার ক্রীড়াঙ্গনের সংস্কারে তাদের দায়িত্ব দিয়েছে। তারা হয়তো চিন্তা
করেছে আমাকে দিয়ে আর হবে না। তাই আমাকে সরিয়ে দিয়েছে। এতে আমি বিন্দুমাত্র
কষ্ট পাইনি। তাদের ওপরও আমার কোনো রাগ নেই। তারা সবাই আমার বন্ধু কিংবা
শুভাকাঙ্ক্ষী। তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে আমার খুবই ভালো সর্ম্পক।
তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে আমার খুবই ভালো সর্ম্পক।
সুদীর্ঘ
সময় আরচারির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। আপনার নেতৃত্বেই পরপর
দুটি অলিম্পিকে দু’জন আরচার সরাসরি অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করেছে। ২০১৯ সালের
এসএ গেমসে আরচারিতে দশটি সোনা জিতেছে বাংলাদেশ। আরচারি খেলাটিকে দেশের
অন্যতম সেরা ফেডারেশনে পরিণত করেছেন। দীর্ঘ পথচলায় আপনি কতটুকু সন্তুষ্ট?
চপল: আমি
একজন দেশপ্রেমিক সংগঠক। আমি দেশকে ভালোবেসে কাজ করেছি। চেষ্টা করেছি
খেলাটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে। কতটুকু পেরেছি তার মূল্যায়ন আপনাদের মাধ্যমে
দেশের জনগণ করবে। তবে আমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট না। কারণ কাজ করতে গিয়ে অনেক
প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছি। বারবার আমাকে টেনে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
নানাভাগে খেলোয়াড়দের মাথাভারি করেছে একটা গ্রুপ। তাদের কারণেই রোমান সানার
মতো খেলোয়াড় বিগড়ে গেছে। বার বার আমাকে হেনস্থা করার চেষ্টা করা হয়েছে।
তারপরেও আমি আমার চেষ্টা চালিয়ে গেছি।
অলিম্পিকে পরপর দু’বার কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। কী এমন হলো সবশেষ কমিটিতে আপনাকে রাখাই হলো না?
চপল : এখানে
অনেক বড় গল্প আছে। তা আমি এখন বলতে চাই না। আমি কারো বিরুদ্ধে কিছু বলতে
চাই না। তবে এটুকু বলি, অলিম্পিকে আমি যাদের খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম
হয়তো তারা চায়নি আমি থাকি। তারা সেনা প্রধানের দোহাই দিয়ে আমাকে বাদ
দিয়েছে। অথচ পরে সেনা প্রধান আমি কেন নাই সেটা জানতে চেয়েছেন।
শোনা
যাচ্ছে আপনি অলিম্পিকের মহাসচিব পদে নির্বাচন করবেন। সার্চ কমিটির একজনের
কথাও শোনা যাচ্ছে, এই পদে তিনিও আগ্রহী। গুঞ্জন আছে তিনি তার রাস্তা
পরিষ্কার করতেই আপনাকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে উপদেষ্টার দোহাই দিয়ে
সরিয়ে দিয়েছে-
চপল: আমার মনে হয় না আমাকে
সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রাখলে উপদেষ্টা কিছু বলতেন। যাইহোক এসব নিয়ে কথা
বলতে চাই না। আমার নিজের কোন ইচ্ছে নেই অলিম্পিকের মহাসচিব হওয়ার। তবে
পরিস্থিতির কথা বলা যায় না। সার্চ কমিটির কারো অলিম্পিকে নির্বাচন করার
বিষয়ে আমি এখনো কিছুই জানি না।
এটাতো অ্যাডহক কমিটি। সামনে নির্বাচন হবে ফেডারেশনে। আপনি কি ফেডারেশনে নির্বাচন করবেন?
চপল: সেটা
আসলে সময়ই বলে দেবে। আমার বয়স হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ ক্রীড়া পুরস্কার
পেয়েছি। ক্রীড়ালেখক সমিতির সেরা সংগঠক হয়েছি। অনেক পেয়েছি আরচারি থেকে।
কমিটিতে না থাকলেও আরচারির সংগঠক হিসেবে থাকতে চাই। কারণ আরচারি আমার
রক্তে।
চপল : খুবই ভালো কমিটি হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক তানভীর খুবই ভালো ছেলে। ও বিদেশে থাকতে কমিটি ঘোষণা হয়েছে। দেশে ফিরেই ও আমার সঙ্গে বাড়িতে এসে দেখা করেছে। আমি ওকে যুগ্ম সম্পাদক আলমগীরকে ফুল দিয়ে মিষ্টি খাইয়ে বরণ করেছি। এমনিতে আরচারি সঠিক পথেই আছে। সিটি গ্রুপের মতো একটি প্রতিষ্ঠান আরচারির সাথে আছে। এবার স্কয়ার সাঈদ সাহেব কমিটিতে আসছেন। ফান্ডে প্রায় নয় কোটি টাকা আছে। পাইপ লাইনে যথেষ্ট খেলোয়াড় আছে। সবকিছু মিলিয়ে আরচারি চালিয়ে নিতে নতুন কমিটির সমস্যা হওয়ার কথা না।

No comments