ভারতকে ছাড় দিতে নারাজ পাকিস্তান, চূড়ান্ত জবাবের প্রস্তুতি

কাশ্মীর হামলাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে টানটান উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে পাকিস্তানও। এই অবস্থায় ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে আজাদ কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ারুল হক বলেছেন, সীমান্ত অতিক্রম করে ভারত যদি পাকিস্তানে কোনো আগ্রাসন চালায়, তাহলে পাকিস্তান তার ‘চূড়ান্ত জবাব’ দেবে।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, আজাদ কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ভারতের সাহস নেই পাকিস্তানের সীমান্ত লঙ্ঘনের। কিন্তু যদি করে, তাহলে শক্ত প্রতিরোধের মুখে পড়বে। তিনি ভারতের কূটনৈতিক আচরণকে চাণক্য নীতি বা ‘কূটনীতির আবরণে ছুরি মারা’ বলেও আখ্যা দেন।

আনোয়ারুল হক আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘ভারত কোনো তৃতীয় পক্ষকে ব্যবহার করে আজাদ কাশ্মীরকে অস্থির করতে পারে। যদি তারা এমন কোনো দুঃসাহস দেখায়, তাহলে উপযুক্ত জবাব দেবে পাকিস্তান।’ পাকিস্তান যে কোনো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।

ভারত-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে সিন্ধু নদের পানি চুক্তি। ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা দুই দেশের মধ্যে বিরল এক সহযোগিতার উদাহরণ হিসেবে এতদিন ধরে টিকে ছিল। এই চুক্তির আওতায় পাকিস্তান সিন্ধু নদের জলাধার ব্যবস্থার ওপর অধিকতর নির্ভরশীল, কারণ দেশটির কৃষি ব্যবস্থার প্রায় ৯০ শতাংশ এই পানির ওপর নির্ভর করে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তান তার পানির ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতেও দ্বিধা করবে না। ইতোমধ্যে ইসলামাবাদও স্পষ্ট করে বলেছে, চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তানের পানির প্রবাহ বন্ধ বা সরিয়ে দেওয়ার যে কোনো চেষ্টা ‘যুদ্ধ ঘোষণার’ শামিল হবে এবং তার জবাব দেওয়া হবে ‘সব ধরনের প্রচলিত ও অপ্রচলিত’ অর্থাৎ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে।

পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ বা এনএসসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পানি হচ্ছে পাকিস্তানের ‘জীবনরেখা’, যা ২৪ কোটিরও বেশি মানুষের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। তাই পানির প্রবাহ বন্ধ করা হলে তা ‘যুদ্ধ’ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং এর জবাবে পাকিস্তান সামরিক শক্তি প্রয়োগ করতেও দ্বিধা করবে না।

প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত যদি পাকিস্তানের পানির প্রবাহ থামাতে কোনো জলাধার বা বাঁধ নির্মাণ করে, তাহলে পাকিস্তান সেই স্থাপনাগুলো ধ্বংস করে দেবে। এতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতেও দ্বিধা করবে না ইসলামাবাদ। 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের পপ্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। ছবি : সংগৃহীত
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের পপ্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। ছবি : সংগৃহীত

No comments

Powered by Blogger.