চাপে নতি স্বীকার , উইঘুরদের চীনে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করলো থাইল্যান্ড
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ,' চীন ও থাইল্যান্ডের অভ্যন্তরীণ আইন ও আন্তর্জাতিক আইন মেনেই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। 'ফিরে আসা দলটিতে ৩০০ জনেরও বেশি উইঘুর ছিল যারা ২০১৪ সালে জিনজিয়াংয়ে দমন-পীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আসার পর থাই সীমান্তে আটক করা হয়েছিল।অনেককে তুরস্কে পাঠানো হয়েছিল, আবার অনেককে ২০১৫ সালে চীনে ফেরত পাঠানো হয়েছিল - যার ফলে সরকার এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলির মধ্যে তীব্র প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বিরোধী দলের আইনপ্রণেতা কান্নাভি সুয়েবসাং প্রশ্ন তোলেন - '"থাই সরকার কী করছে?উইঘুরদের নির্বাসনের মাধ্যমে নির্যাতনের মুখোমুখি করা উচিত নয়। তাদের ১১ বছর জেল খাটতে হয়েছিল। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছি।'যে আটক কেন্দ্রে উইঘুরদের রাখা হয়েছিল তা অস্বাস্থ্যকর এবং জনাকীর্ণ ছিল বলে জানা গেছে। পাঁচজন উইঘুর হেফাজতেই মারা গেছেন।বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে যে এই গোষ্ঠীটি এখন নির্যাতন, জোরপূর্বক অন্তর্ধান এবং দীর্ঘমেয়াদী কারাদণ্ডের উচ্চ ঝুঁকির মুখোমুখি। সংস্থার এশিয়া পরিচালক, এলেন পিয়ারসন বলেছেন - ' থাইল্যান্ডের উইঘুর বন্দীদের চীনে স্থানান্তর দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে থাইল্যান্ডের বাধ্যবাধকতার স্পষ্ট লঙ্ঘন। ঊর্ধ্বতন থাই কর্মকর্তারা একাধিকবার প্রকাশ্যে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে এই ব্যক্তিদের হস্তান্তর করা হবে না।' এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও থাইল্যান্ডের এই নির্বাসন প্রক্রিয়ার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন -' যেসব দেশে উইঘুররা সুরক্ষা চান, সেইসব দেশের সরকারকে জোরপূর্বক জাতিগত উইঘুরদের চীনে ফেরত না পাঠানোর আহ্বান জানাতে হবে। "অনলাইনে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি চীনকে জিনজিয়াংয়ে প্রধানত মুসলিম উইঘুর এবং অন্যান্য জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সদস্যদের লক্ষ্য করে গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করার অভিযোগ করেছেন।জাতিসংঘ বলেছে যে তারা এই নির্বাসনের জন্য "গভীরভাবে অনুতপ্ত" ।যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন যে তারা থাইল্যান্ডের সিদ্ধান্তের সাথে একমত নয়।জিনজিয়াংয়ে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ উইঘুর বাস করেন, যাদের বেশিরভাগই মুসলিম। এই অঞ্চলটি আনুষ্ঠানিকভাবে জিনজিয়াং উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল (Xinjiang Uyghur Autonomous Region বা XUAR) নামে পরিচিত।
উইঘুররা তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলে, যার সাথে তুর্কি ভাষার সাদৃশ্য রয়েছে। সাংস্কৃতিক ও জাতিগতভাবে মধ্য এশীয় দেশগুলির সঙ্গে এদের সাযুজ্য রয়েছে। চীনের বিরুদ্ধে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের লক্ষ্যবস্তু করা এবং এই অঞ্চলে ধর্মীয় অনুশীলন নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি মসজিদ ও সমাধি ধ্বংস করার অভিযোগ রয়েছে।
সূত্র : বিবিসি

No comments