যুক্তরাষ্ট্র-চীন নতুন বাণিজ্য যুদ্ধ
উল্লেখ্য, ২০শে জানুয়ারি ক্ষমতায় আসার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপ করেন। প্রথম দু’টি দেশের বিরুদ্ধে শতকরা ২৫ ভাগ এবং চীনের ক্ষেত্রে তা শতকরা ১০ ভাগ। কিন্তু মেক্সিকো এবং কানাডা থেকে তীব্র প্রতিবাদ এবং সমঝোতার পর এ দু’টি দেশের শুল্ক আপাতত স্থগিত রেখেছেন ট্রাম্প। কিন্তু চীনের ওপর শুল্ক বহাল আছে। কানাডা ও মেক্সিকোর বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপের ঘোষণা এবং পরে তা স্থগিত করার পর এবার যুক্তরাষ্ট্রে সব রকম স্টিল এবং অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে শতকরা ২৫ ভাগ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এখানে উল্লেখ্য, প্রথম দফায় ক্ষমতার সময়ে একই রকম পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ট্রাম্প। তিনি সে সময়ও স্টিল আমদানিকে শতকরা ২৫ ভাগ এবং অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে শতকরা ১০ ভাগ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। কিন্তু পরে কানাডা, মেক্সিকো এবং ব্রাজিলের মতো বেশ কিছু বাণিজ্যিক অংশীদারদেরকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেন। তিনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিরুদ্ধেও শুল্ক আরোপ করেছিলেন। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত এর সমাধান মেলেনি। তবে এবার ট্রাম্পের শুল্ক মুক্তির সুবিধা কোনো দেশ পাবে কিনা, তা রোববার পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপ যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনী প্রচারণার সময় দেয়া তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে। তবে আমদানি করা গাড়িতে শুল্কের বিষয়টি এখনো তার টেবিলে আছে। ট্রাম্প বার বার অভিযোগ করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় বেশি শুল্ক আরোপ করে। গত সপ্তাহে তিনি বলেছেন, ইউরোপিয়ান পণ্যের ওপর সহসাই শুল্ক আরোপ করা হবে।
ডনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সর্বশেষ ঘোষণা কার্যকর হওয়ার পর বেইজিং অভিযোগ করেছে। তারা বলেছে, সিনথেটিক অপিয়ড ফেন্টালাইন বাণিজ্য নিয়ে ওয়াশিংটন ভুয়া এবং মিথ্যা অভিযোগ করছে। এ বিষয়ে তারা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অভিযোগ দিয়েছে। তাতে চীন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র আমদানিতে যে শুল্ক আরোপ করেছে তা বৈষম্যমূলক এবং সংরক্ষণবাদ। এর মধ্যদিয়ে তারা বাণিজ্যিক নিয়ম ভঙ্গ করছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা চীনকে সতর্ক করছেন। তারা বলছেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যে প্যানেল আছে তারা সমস্যার সমাধান দিতে সক্ষম হবেন না। ফলে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা থেকে চীনের পক্ষে রায় পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই। এমন অবস্থায় কয়েকদিনের মধ্যে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলার কথা ডনাল্ড ট্রাম্পের। তবে ট্রাম্প বলেছেন, এই আলোচনার জন্য তিনি তাড়াহুড়ো করবেন না। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের চায়না ব্যবসা ও অর্থনীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ স্কট কেনেডি বলেন, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের চেয়ে চীন অনেক বেশি প্রস্তুত। যদিও তাদের অর্থনীতি পর্যায়ক্রমিকভাবে নিম্নমুখী হয়েছে একটু। কিন্তু তাদের প্রযুক্তি সক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। তারা ব্যবসাকে বহুমুখী করেছে। বিনিয়োগ করেছে অনেক জায়গায়।

No comments