‘আইএসআইয়ের কাছ থেকে অর্থ নিচ্ছে বিজেপি ও বজরং দল’

পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের কাছ থেকে অর্থ নিচ্ছে ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপি ও বজরং দল। পরে তারা তা প্রত্যাখ্যান করছে। এমন অভিযোগ এনেছেন কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা ও মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিং। তিনি আরো অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের পক্ষে মুসলিমদের চেয়ে অমুসলিমরা বেশি গুপ্তচরবৃত্তি করছে। এ বিষয়টি জনগণকে বুঝতে হবে। বিন্দ এলাকায় মহরানা প্রতাপের একটি মূর্তি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে তিনি এসব মন্তব্য করেছেন বলে খবর দিয়েছে অনলাইন জি নিউজ।

বিজেপি ও বজরং দলকে নিয়ে তার এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে তা নিয়ে। ক্যামেরায় তার এ বক্তব্য ধারণ করা হলেও তিনি পরে বিজেপির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের কথা অস্বীকার করেছেন।
বলেছেন, মিডিয়া পক্ষপাতী হয়ে এমন রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে তিনি এক টুইটে বলেছেন, তিনি তার বক্তব্যে অটল যে, বিজেপির আইটি সেলের বেশকিছু সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ। তারা পাকিস্তানের আইএসআইয়ের পক্ষে কাজ করছিল ও তাদের কাছ থেকে টাকা পাচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।

এর আগের এক টুইটে দিগ্বিজয় সিং বলেছেন, আইএসআইয়ের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য বিজেপির কিছু নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে তাদের কঠোর সাজা হওয়া উচিত। তিনি আরো অভিযোগ করেন, মধ্যপ্রদেশ পুলিশ বিজেপির যেসব সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে, এদেরকে পাকিস্তানি এজেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এদেরকে মুক্ত করানোর জন্য চেষ্টা করছেন রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। এমন সমালোচনার জবাব দিয়েছেন শিবরাজ সিং। তিনি বলেছেন, খবরের শিরোনাম হতে এমন সব বিতর্কিত বিবৃতি দিচ্ছেন দিগি¦জয় সিং। তিনি ও তার নেতারা কথা বলেন পাকিস্তানি ভাষায়। পাকিস্তান উদ্ধৃত করে রাহুল গান্ধীকে। বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ যেমন জানে, তেমনি পুরো বিশ্ব ও পুরো দেশ তাদের দেশপ্রেম সম্পর্কে জানে।

কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতে ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি সরকারকে আক্রমণ করেন দিগি¦জয় সিং। তিনি বলেন, যদি শেখ আবদুল্লাহকে আস্থায় না আনতেন নেহরু তাহলে কাশ্মীর ভারতের অংশ হতো না। তিনি ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীকে উদ্ধৃত করে বলেন, বিজেপির এই বর্ষীয়ান নেতা ঠিকই বিশ্বাস করতেন যে, কাশ্মীরের জনগণ সহ সব অংশীদারদের আস্থায় আনার মাধ্যমেই কেবল কাশ্মীর সঙ্কটের সমাধান হতে পারে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, গত ২৩ শে আগস্ট পাকিস্তানি অপারেটিভদের পরিচালিত একটি চক্রের সঙ্গে যোগসূত্র থাকার সন্দেহে সাটনা থেকে ৫ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে মধ্যপ্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাস বিরোধী স্কোয়াড।

বজরং দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে এর একজনের। তার নাম বলরাম সিং। গ্রেপ্তার করা ৫ জনের মধ্যে বলরাম সিং, সুনীল সিং ও শুভম মিশ্রকে পরে ভুপালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ বলেছে, একটি অ্যাপ ব্যবহার করে তারা ওই চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতো। তারা যেসব বার্তা পাঠাতো এই অ্যাপে তার কিছুই রেকর্ড নেই। সন্ত্রাস বিরোধী স্কোয়াড বলেছে, পাকিস্তানি চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতো এসব ব্যক্তি। তারা কৌশলগত তথ্য, ব্যাংকের বিস্তারিত হিসাব, আন্তঃসীমান্ত আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে শেয়ার করতো পাকিস্তানি ওই চক্রের সঙ্গে। শুক্রবার ইস্যু করা এক বিবৃতিতে মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের মিডিয়া সমন্বয়ক নরেন্দ্র সালুজা অভিযোগ করেন, গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের মধ্যে বজরং দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে বলরাম সিংয়ের। এ প্রসঙ্গে মধ্যপ্রদেশ মন্ত্রীপরিষদের সদস্য গোবিন্দ সিং বলেন, অনেক বছর ধরে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত বিজেপির কিছু মানুষ। তাদের কাছে গোপন তথ্য ও সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহারের তহবিল ছিল।

No comments

Powered by Blogger.