চীনের সহায়তায় নির্মিত হচ্ছে পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ বিমানবন্দর

চীনের সহায়তায় গোয়াদারে নির্মিত হচ্ছে পাকিস্তানের সবথেকে বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটি হতে চলেছে বিশ্বের বৃহত্তম যাত্রীবাহী বিমান এয়ারবাস এ-৩৮০সহ বড় সব বিমান চলাচলে সক্ষম পাকিস্তানের দ্বিতীয় বিমানবন্দর। বর্তমানে কেবল ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই এ৩৮০ বিমান অবতরণ করতে পারে। করাচি ও লাহোর বিমানবন্দরে এ ধরনের বিমান অবতরণ করতে পারে না। নতুন গোয়াদার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক মর্যাদা পাবে। জানা গেছে এটি উন্মুক্ত আকাশ নীতিতে পরিচালিত হবে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শুক্রবার গোয়াদার ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ সময় তিনি বলেন, গোয়াদার হবে পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি।
বিমানবন্দরটি ২৫৬ মিলিয়ন ডলারে তিন বছরে নির্মাণ করা হবে।
চীনা ঋণেই এটি নির্মাণ করার পরিকল্পনা করা হয়। ৪,৩০০ একর জায়গায় নির্মিত এটি হবে পাকিস্তানের বৃহত্তম বিমানবন্দর। করাচি বিমানবন্দর (৩,৭০০ একর), ইসলামাবাদ বিমানবন্দর (৩,৬০০ একর), লাহোর বিমানবন্দরের (২,৮০০ একর) চেয়ে বড় হবে গোয়াদার বিমানবন্দর (৪,৩০০ একর)। গোয়াদারে ৬৯০ মিলিয়ন ডলারে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে, বিমানবন্দরটি এর অন্যতম। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ হিসেবে এর পরিকল্পনা করা হয়। বেলোচিস্তানের সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নের অংশ হবে এই প্রকল্প।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, এই প্রকল্পটি স্থানীয় জনসাধারণের জন্য কল্যাণকর হবে। অতীতে বেলোচিস্তানের উন্নয়ন কর্মসূচিগুলোতে স্থানীয়দের উপেক্ষা করা হতো। ফলে বেলোচিস্তানে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হলেও তা স্থানীয়দের জন্য কল্যাণকর হতো না। তিনি বলেন, গোয়াদার হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়ানো হবে। এছাড়া একটি কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রও নির্মাণ করা হবে। তিনি প্রতিটি পরিবারের জন্য সাত লাখ ২০ হাজার রুপি মূল্যের স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য কার্ড চালু করেন।
ইমরান খান জানিয়েছেন, চীন পাকিস্তানের রেললাইনের আধুনিকায়ন করে দিতে সম্মত হয়েছে। করাচি ও লাহোরের মধ্যে চার ঘন্টায় চলাচল উপযোগী রেললাইন নির্মাণ করে দেবে চীন। ৫৬ বিলিয়ন ডলারের চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) প্রকল্পটি হলো চীনের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড (ওবিওআর) উদ্যোগের অংশবিশেষ। এটি হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক যোগাযোগ। চীনকে মধ্য এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার সাথে সংযুক্ত করার প্রকল্প এটি। সিপিইসির মাধ্যমে পাকিস্তানের বার্ষিক জিডিপি প্রায় ২০ ভাগ বাড়বে বলে আশ্বাস দেয়া হচ্ছে।
২০৩০ সাল নাগাদ ৩,২১৮ কিলোমিটার রুটটির নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে মনে করা হয়। এতে মহাসড়ক, রেললাইন, পাইপলাইন, বিদ্যুত কেন্দ্র থাকছে। এই প্রকল্পের আওতায় ৩৪ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ১৭,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.