রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে জাতিসংঘের আন্তরিকতা নিয়ে টাস্কফোর্স বৈঠকে প্রশ্ন

রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে জাতিসংঘের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সরকার। এ বিষয়ে বাংলাদেশে কর্মরত জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর সমালোচনাও করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রোহিঙ্গা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের সভায় ওই সংস্থাগুলোকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে যথাযথভাবে কাজ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সদস্য, বিভিন্ন এজেন্সির প্রতিনিধি, বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের প্রতিনিধিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইউএনডিপি ও ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসনের জন্য মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে। কিন্তু মিয়ানমারের পক্ষ থেকে তাদেরকে রাখাইনে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপো গ্র্যান্ডি রাখাইন সফর করার ইচ্ছা ব্যক্ত করলে মিয়ানমার তাতে রাজি হয়নি। বর্তমানে গোলযোগের কারণে প্রতিদিন সেখানকার অবস্থা খারাপ হচ্ছে এবং রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে কাজ করছে এমন কোনও জাতিসংঘ সংস্থা বা তাদের সদর দফতর কোনও বিবৃতি ইস্যু করেনি যার মাধ্যমে গোটা বিশ্ব জানতে পারে রাখাইনে কী ঘটছে।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা তাদেরকে বলেছি, বিবেকের তাড়না থেকেই তাদের উচিত– মিয়ানমারে কী ঘটছে সেটি গোটা দুনিয়াকে জানানো। আমরা বলেছি, তারা যেন তাদের কাজ ঠিকমতো করে।’ তারা যদি বিবৃতি দিতো, তবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিলে মিয়ানমারের বিষয়ে আরও শক্ত অবস্থান নেওয়া সম্ভব হতো বলে তিনি জানান।
এ প্রসঙ্গে আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশে যখন কোনও কিছু ঘটে সে বিষয়ে তারা প্রকাশ্যে বিবৃতি দেয়, অন্যদিকে মিয়ানমারের ক্ষেত্রে বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।’ উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের পরে তারা একটি বিবৃতি দিয়েছিল, কিন্তু মিয়ানমারে যখন মানবিক বিপর্যয় ঘটছে তখন তারা নিশ্চুপ।’
ওই বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান আরেকজন কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘আমরা ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রথম ব্যাচটি পাঠাতে চেয়েছিলাম কিন্তু রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশে ফেরত যেতে ভয় পাওয়ার কারণে আমরা সেটি স্থগিত করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে আমরা প্রস্তুত। রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি হলে এবং রোহিঙ্গারা ফেরত যেতে রাজি হলে তাদের পাঠানো হবে। রোহিঙ্গারা তাদের নিরাপত্তা, জীবনযাপনের জন্য ব্যবস্থা ও অন্যান্য মৌলিক অধিকারের বিষয়ে উদ্বিগ্ন।’

No comments

Powered by Blogger.