পরকীয়ার জেরে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন

কুড়িগ্রামের চিলমারীর আকন্দপাড়ার রহিদুল হকের একমাত্র মেয়ে রুমা (১৯) স্বামীর দা’য়ের কোপে খুন হয়েছে। থানায় মামলা হয়েছে।
থানা সূত্রে জানা যায়, ২ বছর আগে চিলমারী উপজেলার আকন্দপাড়া এলাকার রহিদুল হকের মেয়ে রুমার সঙ্গে উলিপুর উপজেলার নারিকেলবাড়ী পূর্ব ছড়ার পাড় গ্রামের মৃত চান্দ উল্যা হাজীর ছেলে আঃ ছালাম (৩০)-এর বিয়ে হয়। নিহতের স্বামী আঃ ছালাম বিবাহের আগে তার ভাবীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিল বলে পারিবারিকভাবে বিষয়টি তার এলাকাতে জানাজানি হলে তা গোপন রেখে অতি সুকৌশলে অতিদ্রুত রুমার সঙ্গে বিয়ে দেন আঃ ছালামের পরিবার। বিবাহের পরও ছালামের পরকীয়া চলতে থাকলে রুমা বিষয়টি জানতে পারায় প্রতিনিয়তই রুমার ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু করে আঃ ছালাম। এ অবস্থায় ঘর-সংসার করা কালীন রুমার একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। কিন্তু থেমে থাকেনি আঃ ছালামের পরকীয়া এবং স্ত্রীর ওপর অত্যাচার। এরই জের ধরে ২রা জানুয়ারি সকালে আঃ ছালাম রুমার ওপর নির্যাতনের একপর্যায়ে দা দিয়ে ঘাড়ে সজোরে আঘাত করে এবং বিভিন্ন ভাবে শারীরিক নির্যাতন করলে রুমা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এ সময় মৃত্যু যন্ত্রণায় রুমা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় পার্শ্ববর্তী রুমার খালা বিলকিস বেগম তাকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। ঐ দিনই ছালাম তার পরিবারের লোকজনসহ পরিকল্পিতভাবে রুমাকে চিকিৎসার নামে তার খালার বাড়ি  থেকে নিয়ে আসে এবং আবারো তার ওপর নির্যাতন চালায়। রুমার অবস্থার চরম অবনতি হলেও তারা চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে বাড়িতেই রেখে দেয়। অপর দিকে বিলকিসের মাধ্যমে রুমার মা খবর পেয়ে রুমার বাড়িতে আসলে রুমাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দেখে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় উলিপুর হাসপাতালে নিয়ে আসলে রুমার অবস্থার আরো অবনতি হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ৩রা জানুয়ারি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় রুমার মৃত্যু হয়। শনিবার রাতে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে চিলমারী আকন্দপাড়ায় রুমার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এদিকে আঃ ছালাম ও তার সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ফাঁসির দাবি করেছেন রুমার আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী। উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, এব্যাপারে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। তিনি আরো জানান, তদন্তের সঙ্গে আসামি ধরারও চেষ্টা চলছে।

No comments

Powered by Blogger.