রেমন্ড সাম্রাজ্যের কর্ণধার এখন ভাড়া বাড়িতে

ভারতে পরিবারের মালিকানাধীন ব্যবসায়িক সংস্থাগুলির মধ্যে রেমন্ডগোষ্ঠীর নাম একেবারে প্রথম সারিতে। মূলত বস্ত্র ব্যবসায় সুনাম অর্জন করলেও সিমেন্ট, ডেয়রি ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রেও ব্যবসাকে প্রসারিত হয়েছে। আর এই সুবিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলার  কারিগর ছিলেন বিজয়পত সিংহানিয়া। তিনিই বস্ত্র ব্যবসার ছোট সংস্থা থেকে বিশ্বের অন্যতম নামী ব্র্যান্ডে পরিণত করেছেন রেমন্ডকে। কিন্তু পুত্রের হাতে ব্যবসার সব দায়িত্ব তুলে দিয়ে এখন পস্তাচ্ছেন ৮০ বছরের বৃদ্ধ বিজয়পত। পুত্রের হাতে সব খুইয়ে এখন একসময়ের এই ধনকুবের  আশ্রয় নিযেছেন ভাড়া বাড়িতে। মর্যাদা ফিরে পেতে পুত্র গৌতমের বিরুদ্ধে  আইনি লড়াইয়ে নামতে চলেছেন রেমন্ড গোষ্ঠীর সাবেক কর্ণধার বিজয়পত সিংহানিয়া। পুত্রের হাতে মান-মর্যাদা সব খুইয়ে এখন তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বলেছেন,সব বাবা-মাকেই পরামর্শই দেব, জীবিত অবস্থায় সন্তানকে নিজের সারা জীবনের সঞ্চয় তুলে দেয়ার মতো বোকামি করবেন না।
অথচ তিল তিল করে  গড়ে তোলা ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন একমাত্র ছেলে গৌতম সিংহানিয়ার হাতে। কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণের পর পিতার কাছ থেকে এক এক করে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা কেড়ে নিয়েছে গৌতম। পুত্রের হাতে ব্যবসায়িক মালিকানা তুলে দেয়ার সিদ্ধান্তকে এখন নিজের ‘চূড়ান্ত বোকামি’ বলেই কপাল চাপড়াচ্ছেন বৃদ্ধ বিজয়পত। বিজয়পতের দাবি, ‘ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল’ করেই তাঁর কাছ থেকে সব কিছু কেড়ে নিয়েছেন গৌতম। বিজয়পত জানিয়েছেন, তাঁর দুর্দশার শুরুটা হয়েছিল ২০১৫ সালে। সেই সময় ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের ৩৭ শতাংশ মালিকানা ছেলে গৌতমের হাতে তুলে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, এর পর থেকেই ছেলের সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ শুরু হযেছে। মুম্বইয়ের অভিজাত এলাকা মালাবার হিলে সিংহানিয়া পরিবারের ৩৬তলা বহুতলে  ৫,১৮৫ বর্গফুট আয়তনের একটি ডুপ্লে অ্যাপার্টমেন্ট নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। বিজয়পত সিংহানিয়ার অভিযোগ, অন্য আত্মীয়দের সঙ্গে তাঁকেও ওই কোটি কোটি টাকার ডুপ্লের মালিকানা থেকে বঞ্চিত করে গৌতম। এক সময় তাঁর কাছ থেকে ড্রাইভার-সহ গাড়ির সুবিধাও কেড়ে নিয়েছে গৌতম। সংস্থার ‘চেয়ারম্যান এমিরেটাস’ পদটিও কেড়ে নেয়া হযেছে।  তাঁকে রেমন্ডের বোর্ড থেকেও সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এরপর থেকে পিতা-পুত্রের সম্পর্কে তিক্ততা চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। তবে পিতার সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গৌতম। পাল্টা বলেছেন, আমি নিজেই তো নির্যাতনের শিকার।

No comments

Powered by Blogger.