অন্য রকম এক লাভস্টোরি!

অন্য রকম এক লাভস্টোরি! লন্ডনের ৬৬ বছর বয়সী মিলিয়নিয়ার ক্রিস্টিয়ানি শেলার্ডের সঙ্গে ‘প্রেম’ গড়ে উঠেছিল তার চেয়ে ৩৭ বছরের ছোট ২৯ বছর বয়সী টয়বয় ক্রিশ্চিয়ান মিহালিয়ার। ক্রিশ্চিয়ান মিহালিয়ার দাবি, তার প্রেমিকার নামে একটি ফ্লাট কিনতে তাকে ৫ লাখ পাউন্ট লোন দিয়েছিলেন শেলার্ড। কিন্তু শেলার্ড বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলছেন, ওই অর্থ নিয়ে তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে মিহালিয়া। তাই তার এই রোমানিয়ান প্রেমিক মিহালিয়ার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাচ্ছেন শেলার্ড। মিহালিয়ার দাবি তাকে ওই অর্থ উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন শেলার্ড, যখন তারা নিয়মিত অন্তরঙ্গ সম্পর্কে মিলিত হতেন তখন। তবে তার এ দাবি অস্বীকার করেছেন শেলার্ড। তিনি বলেছেন, তারা নিয়মিত যৌন সম্পর্কে মিলিত হতেন না। মাত্র দু’বার এমন সম্পর্কে মিলিত হয়েছিলে এবং তা সন্তোষজনক ছিল না। এ প্রসঙ্গে শেলার্ড বলেছেন, একবার ওয়েস্ট লন্ডনের কিংস রোডের ব্লুবার্ড রেস্তোরাঁয় নৈশভোজ সারছিলেন তিনি। এ সময় বাইরে দেখতে পান ধুমপানরত পূর্ব ইউরোপিয় একজন হ্যান্ডসাম যুবককে। তিনি তার কাছে এগিয়ে যান। মিহালিয়ার কাছে গিয়ে তার ম্যাচ লাইটার চান নিজের সিগারেট ধরানোর জন্য। তিনি বলেন, এ সময় মিহালিয়াকে খুবই আকর্ষণীয় দেখাচ্ছিল। ওই সময় আমি তার প্রতি ভীষণ আকৃষ্ট হযে পড়ি। সে ছিল ২০১৬ সালের কথা। এ সময় আমরা কথা বলি। একে অন্যের টেলিফোন নম্বর বিনিময় করি। এক পর্যায়ে সেপ্টেম্বরে সে আমার বাসায় আসা শুরু করে। আমরা একে অন্যের সঙ্গে সাক্ষাত করতে থাকি প্রতি রাতে। এরপর তা পনের দিন পর পর ঘটতে থাকে। কারণ, আমি কারো সম্পদ হতে চাই নি। এক পর্যায়ে সে আমার কাছে অর্থ দাবি করে।
তাদের এ সম্পর্ক টিকে ছিল দেড় বছর। এ সময়ে মিহালিয়াকে মোরিতিয়াস ও সেইন্ট লুসিয়ায় বিলাসবহুল অবকাশ যাপনে নিয়ে যান শেলার্ড। তাকে কিনে দেন একটি পোর্শে পানামেরা, বিভিন্ন ব্রান্ডের ঘড়ি, তার পিতার জীবনরক্ষার জন্য চিকিৎসা করাতে দেন এক লাখ ৬০ হাজার পাউন্ড।
ক্রিশ্চিয়ানে শেলার্ড বলেন, মিহালিয়ার যা ছিল তা হলো সব মিলিয়ে একটি ভ্যান। তার কোনো কাজ ছিল না। সে তার বাসার ভাড়া দিতে পারতো না। আমি তাকে ৭০০ পাউন্ড দিই। অদ্ভুত ব্যাপার হলো সে কখনো আমাকে বলতো না যে, কোথায় বসবাস করে সে। তা বের করতে পরে আমি প্রাইভেট গোয়েন্দা লাগাই। এরপর তার বিএমডব্লিউ ভেঙেচুরে নষ্ট হয়ে গেছে বলে কান্নাকাটি শুরু করে। বলে, তা মেরামত করাতে অনেক অর্থের প্রয়োজন। আমি তাকে বলি আমি তাকে একটি গাড়ি কিনে দেবো। এ জন্য তাকে ২০ হাজার পাউন্ড দেবো বলে আমি চিন্তা করি। তাকে একটি সেকেন্ড হ্যান্ড পোর্শে পানামেরা কিনে দিই। কিন্তু সে কখনো আমাকে ওই গাড়ি কেনার রিসিপ্ট দেখায় নি। দেড় বছর ধরে তার ব্যক্তিগত একাউন্টে আমি অর্থ জমা দিতে থাকি। সে বলেছিল, তার পিতা লিভার ক্যান্সারে মারা যাচ্ছে। জার্মানির একটি হাসপাতালে গিয়ে লিভার প্রতিস্থাপন না করালে তিনি ছয় মাসের বেশি বাঁচবেন না। মিহালিয়া বলে, তারা একজন ডোনারও পেয়ে গেছে। এ সময় আমি তার কাছে জানতে চাই তাতে কত অর্থ লাগবে। সে আমাকে অঙ্কটা জানানোর পর তাকে এক লাখ ৬০ হাজার পাউন্ড দিই। এখন আমি বিশ্বাস করি সে মিথ্যা বলেছে। আমি তাকে আমার বয়ফ্রেন্ড হিসেবে ভেবেছিলাম। সেও তাই বলেছিল। সে অন্য কারো সঙ্গে চলে যাবে এটা আমি কখনো ভাবি নি।
শেলার্ড এখন মনে করেন তাকে একটি ‘উন্মুক্ত পার্স’ হিসেবে টার্গেট করেছিল মিহালিয়া। তিনি বলেন, আমি এত্ত বোকা ছিলাম। ৩৮ বছর সংসার করার পর সম্প্রতি আমি বিবাহ বিচ্ছেদে গিয়েছিলাম স্বামীর সঙ্গে। তার কাছে আমি কখনো অবিশ্বাসী ছিলাম না। কিন্তু আমি যা করেছি তা এর আগে কখনো আর করি নি। আমার চেয়ে ৩৭ বছরের কম বয়সী বয়ফ্রেন্ডকে আমার বাহুবন্ধনে পেয়ে আমি ছিলাম আপ্লুত।
এ নিয়ে প্রেমিক মিহালিয়ার বক্তব্য অন্যরকম। তার দাবি তাদের মধ্যে প্রেম ছিল। কিন্তু শেলার্ড আরো কম বয়সী একজন মডেলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এতে তিনি আপসেট হয়ে পড়েন। মিহালিয়া বলেন, গত নভেম্বরে আমি লক্ষ্য করি শেলার্ড আরেকজন যুবকের সঙ্গে তিন মাস ধরে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। আমি দেখেছি তার মোবাইলে ‘লাভ ইউ’ ম্যাসেজ ও ছবি। নতুন যে ছেলেটির সঙ্গে তিনি প্রেম করছেন সে আরো কম বয়সী। তাই আমি শেলার্ডের সুনাম নষ্ট করতে চাই নি। আমি ওই যুবকের বিষয়ে তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি কি বলেছিলেন আমার তা প্রকৃতপক্ষে মনে নেই। এতে আমি ভীষণ আপসেট হয়ে পড়ি। ২০১৩ সালে শেলার্ডের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তারপর আমার সঙ্গে তার সম্পর্ক। এক্ষেত্রে তিনি আমাকে একমাত্র বয়ফ্রেন্ড হিসেবে উল্লেখ করেছেন এটা তার একেবারে ননসেন্স কথাবার্তা। মিহালিয়া বলেন, শেলার্ডের সঙ্গে সাক্ষাতের পর অল্প সময়ের মধ্যেই তারা যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলেন, যদিও বয়সের ফারাক আকাশ পাতাল। তিনি ২০১৭ সালের আগস্টে ওয়েস্ট লন্ডনের ব্রেন্টফোর্ড ডকে একটি বাড়ি কিনতে তিনি আমাকে ৫ লাখ পাউন্ড উপহার দেন। এ নিয়ে তার সঙ্গে আমার কোনোই চুক্তি হয় নি। কারণ, ভালবাসার সম্পর্কে আমরা ছিলাম ‘কাপলের’ মতো। আমি অবশ্যই তার সঙ্গে ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ ছিলাম। আমি সম্ভবত সপ্তাহভিত্তিতে তাকে দেখতে যেতাম। যখনই আমাদের এমন সাক্ষাত হতো তার বেশির ভাগ সময়ই আমরা যৌন সম্পর্কে মিলিত হতাম। প্রায় দু’বছরের মতো আমরা ছিলাম বয়ফ্রেন্ড ও গার্লফ্রেন্ড। এক্ষেত্রে বয়সের ফারাক আমাকে প্রভাবিত করে নি। আমরা একসঙ্গে অবকাশ যাপনেও গিয়েছি।

No comments

Powered by Blogger.