আমিও একজন ফিলিস্তিনি: ম্যারাডোনা

ফিলিস্তিন আমার হৃদয়, আর আমিও একজন ফিলিস্তিনি’ এমনটাই দেশটির প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে বললেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। সোমবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে আব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ফুটবলার। এ সময় ম্যারাডোনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে জলপাই গাছের শাখা বহনকারী একটি পাখির ছবি উপহার দেন আব্বাস। এর পরে ম্যারাডোনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে আলিঙ্গনের একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, এই মানুষটা ফিলিস্তিনে শান্তি চায়। প্রেসিডেন্ট আব্বাসের একটা দেশ আছে এবং সেখানে তার অধিকার রয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আমন্ত্রণে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ দেখতে রাশিয়ায় যান আব্বাস। অন্যদিকে ভেনিজুয়েলার নিউজ নেটওয়ার্ক চ্যানেল তেলিসুর’র ভাষ্যকার হিসেবে সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপ কাভার করেন ম্যারাডোনা। এর আগে ওই চ্যানেলে বিশ্বকাপের শেষ শো’তে ম্যারাডোনা বলেন, আমাদের কেনা যায় না, আমরা সবদিক থেকেই বামপন্থি রাজনীতির সমর্থক। একথা মানুষ জানে যে আমরা সত্য কথা বলি এবং সাম্য চাই। এর আগে ম্যারাডোনা প্রকাশ্যেই ভেনিজুয়েলা, কিউবা ও ইরানের নেতাদের প্রশংসা করেন। ২০০৭’র ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনায় নিযুক্ত ইরানি কূটনীতিক মহসিন বহরভন্দকে তিনি বলেন, আমি ইতিমধ্যে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ (তৎকালীন) এবং কিউবার নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রোর (তৎকালীন) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। এখন আমি আপনাদের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাই। গতকাল বেলারুশের ক্লাব ডায়নামো ব্রেস্টের চেয়ারম্যানের পদে নিয়োগ দেয়া হয় ৫৭ বছর বয়সী দিয়েগো ম্যারাডোনাকে। এর আগে এই ক্লাবটির কোচের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
এবারের বিশ্বকাপে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে পরেন ম্যারাডোনা। গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়ার ম্যাচে গ্যালারিতে বসে অশোভন অঙ্গভঙ্গি করেন তিনি। শেষ ষোলতে কলম্বিয়া-ইংল্যান্ডের ম্যাচের রেফারিংকে ডাকাতি বলায় তাকে সতর্ক করে আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থা (ফিফা)। পরে অবশ্য এ বিষয়ে ক্ষমা চান ম্যারাডোনা।
এবারের বিশ্বকাপ শুরুর আগে সম্ভাব্য আর্জেন্টিনা-ইসরাইলের ম্যাচ নিয়ে উত্তাল হয় ফিলিস্তিন। আর ফিলিস্তিন ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির প্রবল আপত্তির মুখে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বদলায় আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশন। গত ৯ই জুন জেরুজালেমে আর্জেন্টিনা-ইসরাইলের প্রীতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল। তবে এ ম্যাচ আয়োজনের প্রতিবাদে ফিলিস্তিন ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি বলেন, মেসি (লিওনেল) তোমরা জেরুজালেমে খেলতে এসোনা। তারা (ইসরাইল) আমাদের মাতৃভূমি দখল করে রেখেছে। মেসি শান্তি ও ভালোবাসার প্রতীক। ফিলিস্তিনে তার লাখো ভক্ত-সমর্থক রয়েছে। ওই ম্যাচের নির্ধারিত সূচির দু’দিন আগে মেসিদের জেরুজালেম সফর বাতিল করে আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশন। আর্জেন্টিনা ফুটবল প্রধান বলেন, বিশ্বশান্তির জন্যই তাদের এই সিদ্ধান্ত।

No comments

Powered by Blogger.