ফাল্গুনে ফুলেল সাজ

শীতের রুক্ষতা ছাড়িয়ে ফাল্গুন দিন মানেই প্রকৃতিতে আনন্দ আর উৎসবের অনাবিল সমারোহ। কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী সবাই মিলিত হই মহামিলনমেলায়। আর সেই মিলনমেলায় নিজেকে সুন্দর ও পরিপাটি করে উপস্থাপন করাটাই সার্থকতা। ফাল্গুন মানেই হলুদ-লাল পাড়ের শাড়ি আর বাহারি ঢংয়ের সাজ। এরই ঐতিহ্য ধরেই ফাল্গ–নের পোশাকে এখন এসেছে একটু ভিন্নতা। লাল-হলুদের পাশাপাশি ফাল্গুনের পোশাকে স্থান করে নিয়েছে আরও কিছু রং। এই উৎসবে নিজেদের একটু ভিন্নভাবে ফুটিয়ে তুলতে ছেলেরাও পিছিয়ে নেই। ফাল্গ–নে সাধারণত হালকা শীত ও গরম থাকে। তাই সাঁজটা সেভাবে দিতে হবে যাতে দীর্ঘ সময় থাকে। যেহেতু শীতকাল তাই ফাল্গ–নের সাঁজ সম্পর্কে ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের পরিচালক ফারনাজ আলম বলেন, মুখ আলতো করে মুছে নিয়ে এসপিএফ ৫০+ সম্পন্ন একটি ভালো মানের সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এতে রোদেও আপনার ত্বক সুরক্ষিত থাকবে। সাঁজটা যাতে অনেক সময় থাকে সে জন্য মেকআপের আগে কিছু সময় মুখে বরফ ঘষে নিন। তবে মনে রাখতে হবে সাঁজটা হালকা হলে ভালো হয়। চোখে স্মোকি আই শ্যাডো আর আই ভ্রুটা ডার্ক করে নিতে হবে, মুখে ফাউন্ডেশন না লাগিয়ে ফেস পাউডার লাগাতে পারেন তাহলে ভালো হবে।
আর চুলের ক্ষেত্রে বাঁধতে চাইলেও সেটা আঁটসাঁট না হয়ে খুব হালকা বাঁধন হতে পারে। চুলে মেসি ভাব রাখলে ভালো লাগবে। তিনি বলেন, ‘চুলটা থাকবে অগোছালো, কিন্তু এর মাঝেও থাকতে হবে ছন্দ।’ পশ্চিমা ধাঁচের পোশাক পরলে সামনের চুলটা মেসি ভাব এনে পেছনে হালকা কার্ল করে ছেড়ে দেয়া যেতে পারে। আর ফাল্গ–নে চুল সাজাতে ফুল ছাড়া চলে না। বাহারি রঙের ফুল চুলে পরতে পারেন। এ ছাড়া বেলিফুল দিয়ে ব্যান্ড বানিয়ে ভিন্নভাবে সাজিয়ে নিতে পারেন। ফারনাজ আলম বলেন, ব্যান্ডের চারদিকে ফুল না দিয়ে একপাশে বেশি করে ফুল গুঁজে ব্যান্ডের বাকি জায়গাটা চেইন কিংবা ফিতা দিয়ে ঢেকে দিতে পারেন। আবার দু’পাশে বেলিফুল গুঁজে ব্যান্ডের মাঝখানটাতেও চেইন বা ফিতা দিয়ে ঢেকে নেয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে দু’পাশ থেকে চুল সামনে এনে খোলা ছেড়ে দিলে অথবা ফুলের ব্যান্ডের সঙ্গে চুল খোলা রাখলে বেশি ভালো লাগবে। সারাদিন ঘোরাফেরার পর চুলের যত্ন নেয়া প্রয়োজন। তাই নারকেল তেল+মেথি গুঁড়া+ডিমের সাদা অংশ ভালো করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিয়মিত ব্যবহার করলে চুলে সিল্কি, নমনীয় ও কোমলভাব বজায় থাকবে। এই সময় আমাদের ত্বকে দেখা দেয় অনেক ধরনের সমস্যা। আর তাই এ সময় আমাদের নিতে হয় বাড়তি কিছু যত্ন। বিশেষ করে আমাদের চুলের ক্ষেত্রে। এই সময় আমাদের চুল শুষ্ক, রুক্ষ হয়ে ওঠে। কারো কারো চুলের গোড়া ফেটে যায় এবং চুলের গোড়ায় খুশকি জমে ও অতিরিক্ত চুল পড়তে দেখা যায়। তাই এসব সমস্যার সমাধান আপনি ঘরে বসেই দূর করতে পারেন।
* পেঁয়াজের রস, কালোজিরা এবং নারিকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করুন। এভাবে এক মাস ব্যবহার করুন। যাদের চুলের গোড়া ফেটে যায় তারা গরম পানিতে তেজপাতা দেয়ার পর পানি লাল হয়ে গেলে এটা ঠাণ্ডা করে মাথায় শ্যাম্পু করার পর দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত করুন।
* ডিমের সাদা অংশ, টকদই ও অ্যালোভেরার জেল একসঙ্গে পেস্ট করে সপ্তাহে ৩-৪ বার ব্যবহার করুন। আশা করছি ভালো ফল পাবেন।
* এ ছাড়াও খাদ্যোভ্যাসের প্রতিও খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিদিন শাক-সবজি ও ফল খাবারের তালিকায় রাখুন। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
* খুশকির জন্য পেঁয়াজ আদর্শ। পেঁয়াজে যথেষ্ট পরিমাণ সালফার থাকে। সালফার খুশকি সারাতে ভালো কাজ করে। পেঁয়াজের রস, নিম পাতার রস, পাতিলেবুর রস ও ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগান। ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।
* দু’চামক নিমপাতা গুঁড়া, দু’চামচ বেসন পানিতে গুলে পেস্ট ও ১ টেবিল চামচ অ্যালোডেরা জেল মিশিয়ে স্ক্যাল্পে লাগান। ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে নিন। এতে খুশকি ইনফেকশন থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
তেল : খাঁটি নারিকেল তেল ও কর্পূর মিশিয়ে গরম করে মাথায় লাগিয়ে ১ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করতে হবে।
* চুলকে খুশকিমুক্ত করতে প্রয়োজন নিয়মিত পরিচর্যা।
* নিজের চিরুনি, তোয়ালে, বালিশের কভার পরিষ্কার ও আলাদা রাখুন।
* শ্যাম্পু করার ৩০ মিনিট দুই টেবিল চামচ ভিনিগার নিয়ে মাথার ত্বকে হালকা হাতে মাসাজ করুন।
* শ্যাম্পু পরিমাণ কম ব্যবহার করে, বেশি পরিমাণ পানি ব্যবহার করুন।
* চুলে প্রোটিনসমৃদ্ধ কনডিশনার ব্যবহার করতে হবে, তাহলে চুলের পুষ্টি বজায় থাকবে।
* ভেজা চুল খুলে রাস্তায় বেরোবেন না।
* খুশকি দূর করতে শসার রস ও আদার রস সমপরিমাণে মিশিয়ে মাথায় রাখুন।

No comments

Powered by Blogger.