ভয়াবহ বন্যার কবলে উত্তরাঞ্চল

ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জ, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের আরও কয়েটি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। রোববার বন্যার পানিতে ডুবে ও সাপের কামড়ে পাঁচ জেলায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বানের পানিতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন আরও ৭ জন। যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, আত্রাই, সুরমাসহ ১৭ নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। ভেসে গেছে অনেকের ঘরবাড়ি-গবাদি পশু। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, ফসলি জমি। এমনকি কয়েকটি জেলায় সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। দিনাজপুরে শহর রক্ষাবাঁধ ভেঙে পড়ায় তা মেরামতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। লালমনিরহাটে রেলপথের নিচের অংশ ভেঙে শহরে পানি প্রবেশ করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার বাংলাদেশে বন্যা প্রলম্বিত হবে। বর্তমানে ভারতের বিহার ও আসামে বন্যা চলছে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বন্যার ৮০ ভাগ পানি বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বঙ্গোপসাগরে যায়। ওই পানির সঙ্গে বাংলাদেশের ভেতরের অতিবৃষ্টির পানি যোগ হয়ে বড় বন্যার আশঙ্কা আছে। এমনকি এটি ১৯৮৮ বা ১৯৯৮ সালের বন্যাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইমেইলে বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম রোববার যুগান্তরকে জানান, ‘তিন নদী অববাহিকাই একসঙ্গে সক্রিয় হওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি। এটা হলে ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের মতো বড় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা আছে। বর্তমানে আসামে ব্রহ্মপুত্রের ওপরের অংশে বন্যা চলছে। সেই পানি বাংলাদেশে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীতে প্রবাহিত হবে। বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি এবং সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনার পানি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে।’ এদিকে বন্যার কারণে দেশের উত্তর এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ এরই মধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সংশ্লিষ্ট জেলার চরাঞ্চল, নিন্মাঞ্চল পানির নিচে চলে গেছে। ওইসব এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধ হয়ে গেছে লেখাপড়া। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের উপপরিচালক নুরুল আমিন জানান, রোববার পর্যন্ত তারা বন্যায় আক্রান্ত ১ হাজার ৯৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পেয়েছেন। পানি বাড়তে থাকায় বন্যায় আক্রান্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক চন্দ্র শেখর জানান, এখন পর্যন্ত বন্যায় আক্রান্ত ৮ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাওয়া গেছে। যুগান্তর ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- কুড়িগ্রাম, চিলমারী, নাগেশ্বরী ও রৌমারী : বন্যায় ৪ জনের মৃত্যু ও ২ জন পানিতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন সাপের কামড়ে, অন্যরা পানিতে ডুবে মারা গেছেন। নিহতরা হলেন- কুড়িগ্রাম সদরের খামার হলোখানা এলাকার অলিউর রহমানের স্ত্রী জ্যোৎস্না বেগম, পৌরসভার ভেলাকোপা এলাকার দুলু মিয়ার ছেলে বাবু (দেড় বছর), ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের প্রাণকৃঞ্চ গ্রামের খাতক মামুদের ছেলে লুৎফর রহমান ও গোড়কমণ্ডল বস্তি গ্রামের মৃত কাচু মামুদের ছেলে হযরত আলী। এছাড়া কালুয়ারচর ওয়াপদা বাঁধ ভেঙে পানিতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন রিফাত ও লোকমানের স্ত্রী। এদিকে ৯ উপজেলার ৫৭ ইউনিয়নের প্রায় ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি। বন্যার কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ৬০৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এ জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়ক ভেঙে ও প্লাবিত হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিঘœ ঘটছে। চিলমারীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। হুমকির মুখে রয়েছে পাউবো বাঁধ। উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানরা জানান, ৫২টি গ্রামের প্রায় ৯ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমির সদ্য রোপণ করা আমন ধান, বীজতলা ও শাকসবজি। রৌমারীতে ৬ ইউনিয়নে ৫০টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫০ হাজার মানুষ। এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ৫৫টি বাড়ি। ৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ওঠায় বন্ধ রয়েছে পাঠদান কার্যক্রম। গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চরাঞ্চলের মানুষ। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। ফলে অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছেন খেটে খাওয়া মানুষ। নাগেশ্বরীতে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। পানি উঠেছে উপজেলা সদরের সড়কগুলোয়ও। রাস্তর ওপর দিয়ে তীব্র সে াতে পানি ঢুকছে শহরে। কুড়িগ্রাম-নাগেশ্বরী সড়কের দুই জায়গায় পানি প্রবাহিত হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে বাস চলাচল। ১২ ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দেড় লক্ষাধিক মানুষ। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। ডুবে গেছে সদ্য লাগানো ৯ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ক্ষেত।
লালমনিরহাট : কুলাঘাট ইউনিয়নে নিরাপদ আশ্রয় খোঁজতে যাওয়ার পথে কলার ভেলা উল্টে একজন নিহত হয়েছেন। এতে একই পরিবারের তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম জানা যায়নি। পানির তোড়ে রেলপথসহ তিনটি স্থানের বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে শহরে। লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেলপথের (নিচের অংশ) প্রায় ১০ ফিট জায়গা ভেঙে যায়। ফলে রোববার সকাল থেকে ওই রুটে রেল যোগোযোগ বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের প্রায় দুই ফুট ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি। এতে যান চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া ধরলা নদীর মোগলহাটের বুমকা ও কুলাঘাটের দক্ষিণ শিবের কুটি বাঁধ ভেঙে শহরে ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি। নজিরবিহীন এ বন্যায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। জেলার ৫ উপজেলার ৩৫ ইউনিয়নে চার লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অসংখ্য মানুষের ঘরবাড়ি। ঝুঁকিতে রয়েছে আদিতমারী উপজেলা সলেডি স্পার-২ বাঁধটিও। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বন্যার্তদের ত্রাণসহায়তা দিতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কাজ করলেও ভারি বর্ষণ আর পানির কারণে তা বিঘিœত হচ্ছে। হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজে খোলা হয়েছে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র। সেখানে রোববার বিকাল পর্যন্ত ১১০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে বলে যুগান্তরকে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ সরওয়ার হায়াত খান।
রংপুর, গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগঞ্জ : গঙ্গাচড়া উপজেলার ৯ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে ৫০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তলিয়ে গেছে আমনক্ষেতসহ বিভিন্ন সবজিক্ষেত। ভেসে গেছে শতাধিক পুকুর ও মৎস্য খামারের মাছ। পানিবন্দি পরিবারগুলো উঁচু স্থানসহ বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবিক জীবনযাপন করছে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি ও ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে মানবিক জীবনযাপন করছে পানিবন্দি পরিবারগুলো। শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। কাউনিয়া উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভেঙে গেছে রাস্তাঘাট, তলিয়ে গেছে আমন ধান ও মাছের খামার। তারাগঞ্জ উপজেলায় যমুনেশ্বরী ও চিকলী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর তীরবর্তীর নিন্মাঞ্চল গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ৮ হাজার একর রোপা আমান ও আউশ ধানের ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো ত্রাণসহায়তা পাননি বলে জানান ক্ষতিগ্রস্তরা। পীরগঞ্জে বন্যায় আবাদি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।
দিনাজপুর : কাহারোলে বন্যার পানিতে ডুবে একই পরিবারের ৩ শিশুসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার বিকাল সাড়ে ৩টায় উপজেলার ঈশ্বরগ্রাম থেকে কলার ভেলায় চড়ে ৩ সন্তান ও প্রতিবেশীর ১ সন্তানকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী বিরল উপজেলার হাসিলা গ্রামে আসছিলেন আবদুর রহমানের স্ত্রী সোনাভান বেগম। এ সময় কলার ভেলা উল্টে একই পরিবারের ৩ শিশুসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হল- বিরল উপজেলার হাসিলা গ্রামের আবদুর রহমানের মেয়ে চুমকি (১৩), শহিদ আলী (১০), সিয়াদ (৭) ও প্রতিবেশী সাঈদ হোসেনের ছেলে সিহাদ। এদিকে জেলার সবক’টি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভেঙে গেছে দিনাজপুর শহর রক্ষাবাঁধসহ বেশ কয়েকটি নদীর বাঁধ। বাঁধ রক্ষায় ও বানভাসি মানুষকে উদ্ধারে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি। বাড়িঘর ডুবে গিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন জেলার ৫ লাখ মানুষ। এরই মধ্যে দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে দিনাজপুর সদর, বিরল, কাহারোল, বীরগঞ্জ, খানসামা, চিরিরবন্দর ও পার্বতীপুর উপজেলা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার ২ হাজার ৯৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই বানভাসি মানুষের আশ্রয় কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। শহর রক্ষাবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তা সংস্কারে বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। বিজিবি বাঁধটি সংস্কারে ব্যর্থ হওয়ায় দুপুরে বাঁধ সংস্কার এবং বানভাসি মানুষকে উদ্ধারে মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী। রোববার দুপুর থেকে মেজর তৌহিদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের ৫২ সদস্য বাঁধ সংস্কার ও বানভাসি মানুষকে উদ্ধারের কাজ শুরু করেছেন। নীলফামারী, জলঢাকা ও তিস্তা ব্যারাজ : সৈয়দপুর শহর রক্ষাবাঁধের ১০০ মিটার ভেঙে গিয়ে শহরে পানি ঢুকছে। খড়খড়িয়া নদীর বাম তীরে পশ্চিম পাটোয়ারীপাড়া ও বসুনিয়াপাড়ায় দুটি স্থানে শহর রক্ষাবাঁধ বিলীন হয়েছে। রোববার ১৩ আগস্ট সকালে বাঁধ বিলীন হওয়ায় সৈয়দপুর সেনানিবাস শহরের কুন্দল, পাটোয়ারীপাড়া, নয়াবাজার, সুড়কিমিল, কাজীপাড়া, হাতিখানা, নতুন বাবুপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, বাঁশবাড়ী মহলায় হু-হু করে পানি ঢুকে পড়ে। জলঢাকায় মৎস্য খামার প্লাবিত হয়ে খামারিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এদিকে তিস্তা নদীর আগাম উজানের ঢলের খবরে শনিবার রাত ১০টায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে তিস্তা অববাহিকায়।
বগুড়া : রোববার সকালে কালিতলা হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। উপজেলার ৯ ইউনিয়নে ৩০ সহস াধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসলের ৫১০ হেক্টর জমি ডুবে গেছে। এতে কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এছাড়া ৫৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও অন্যান্য স্কুলে পানি ঢুকে পড়েছে। নেত্রকোনা, কলমাকান্দা, মোহনগঞ্জ, পূর্বধলা ও দুর্গাপুর : কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের সুমেশ্বরী নদীতে বানের জলে ভেসে আসা লাকড়ি ধরতে গিয়ে পানিতে ডুবে মো. আ. আজিজ নামে এক বৃদ্ধ নিখোঁজ হয়েছেন। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
রাজশাহী : তানোরে খাড়ির পানিতে ডুবে লিটন মূর্মূ নামে একজন আদিবাসী যুবকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার দুপুরে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এদিকে জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রাজশাহী নগরীর নিন্মাঞ্চলের মানুষ।
ধোবাউড়া ও গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) : উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে শতাধিক গ্রাম সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ৫৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৮টি উচ্চবিদ্যালয় পানির নিচে থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। গামারীতলা ইউনিয়নে এক শিশুর লাশ ভেসে আসার খবর পাওয়া যায়। তবে শিশুটির পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঠাকুরগাঁও ও পীরগঞ্জ : রেললাইনের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় দুই দিন ধরে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় রুটে। জেলার ১১টি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি অবস্থায় দিন যাপন করছেন কয়েক হাজার মানুষ।
জামালপুর : যমুনার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ১০ ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে ইউনিয়নগুলোর সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
আরও কয়েকটি জেলায় বন্যা : এ ছাড়া সুনামগঞ্জ এবং এ জেলার জামালগঞ্জ ও দোয়ারাবাজারে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গাইবান্ধায় করতোয়া নদীর পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়েছেন নাজমুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। প্লাবিত হয়েছে জয়পুরহাটের নিন্মাঞ্চল। সিলেট ও জেলার ফেঞ্চুগঞ্জে বন্যায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বরিশালে বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষক। নওগাঁর মান্দায় বাঁধ ভেঙে ২০০ পরিবার পানিবন্দি। এছাড়া সিরাজগঞ্জ, নোয়াখালী, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া ও রাঙ্গামাটিতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.