ভারত যেন ঘোরের মধ্যে বাস না করে

চীনের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে কোনো ধরনের ‘ভুল ধারণা’ পোষণ না করতে এবং ‘ঘোরের মধ্যে’ না থাকতে ভারতকে সতর্ক করেছে বেইজিং। একই সঙ্গে নয়াদিল্লিকে ‘ভুল শোধরাতেও’ বলেছে চীন। এনডিটিভি জানায়, সীমান্ত সংকট নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সোমবার চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ভারতের উদ্দেশে এ সতর্কতা দেয়। এক ব্রিফিংয়ে চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওউ কুয়ান বলেন, ‘পাহাড়ে ঝাঁকুনি দেয়া সহজ। কিন্তু (চীনা) পিপলস লিবারেশন আর্মিকে ঝাঁকুনি দেয়া কঠিন।’ চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, উত্তেজনাপূর্ণ অঞ্চলটিতে তাদের সেনাবাহিনী জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছে। সেখানে দ্রুত আরও সেনা মোতায়েন করা হবে ও মহড়া অব্যাহত থাকবে।’ চীনা ভূখণ্ড ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার সক্ষমতা ধারাবাহিকভাবে জোরদার করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। বেইজিংয়ের ভাষ্য, গত মাসের শুরুর দিকে ভারতের সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে চীনের ডংলাং অঞ্চলে প্রবেশ করে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় একটি রাস্তা নির্মাণে ভারত বাধা দেয়। ভারত ও ভুটান এলাকাটিকে ডোকলাম নামে ডাকে। দেশ দুটির দাবি, এই ভূখণ্ড ভুটানের। এলাকাটিকে নিজেদের ডংলাং অঞ্চলের অংশ হিসেবে দাবি করছে চীন। সিকিম সীমান্তে এক মাসের বেশি সময় ধরে ভারত ও চীনের সেনারা মাত্র কয়েকশ’ মিটার দূরত্বে মুখোমুখি অবস্থানে আছে। সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে ভারতের প্রতি অব্যাহতভাবে আহ্বান জানাচ্ছে চীন। তবে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ গত সপ্তাহেই জানিয়ে দিয়েছেন, ভারতকে যদি সেনা সরাতেই হয়, তাহলে চীনকেও একই সঙ্গে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। দুই দেশ একই সঙ্গে সেনা সরিয়ে আলোচনায় বসতে পারে। তবে সোমবার চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ফের বলেছে, যে কোনো ধরনের আলোচনার আগে ভারতকে অবশ্যই সীমান্ত থেকে সেনা সরাতে হবে। এ প্রসঙ্গে চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, বিষয়টি ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দেয়া ঠিক হবে না ভারতের। আর তাদের মোহের মধ্যে থাকা উচিত হবে না।
চীনের মোকাবিলায় মন্ত্র জপের পরামর্শ : এদিকে চীন-ভারত সীমান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দেশ দুটির মধ্যে যখন চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে তখন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএসের পক্ষ থেকে চীনকে বিনাশ করার জন্য আজব ফর্মুলা দেয়া হয়েছে। আরএসএস নেতা ইন্দ্রেশ কুমার চীনকে ‘অসুর শক্তি’ বলে অভিহিত করে দেশবাসীকে বিশেষ মন্ত্র জপের পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানায় ডেইলি নিউজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস। গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইন্দ্রেশ কুমারের দাবি, এর ফলে শুধু চীনের ক্ষতিই হবে না, বরং আমাদের আধ্যাত্মিক শক্তিও বাড়বে এবং ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। ইন্দ্রেশ কুমার মন্ত্র জপার পাশাপাশি চীনা সামগ্রী বয়কটেরও ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘চীনা সামগ্রী ভারতের বাজারে আসায় অনেক ভারতীয় কর্মসংস্থান হারিয়েছে। এ জন্য দিওয়ালি, রাখি ও ঈদের মতো উৎসবে চীনের সামগ্রী বয়কট করা উচিত।’ আরএসএসের সহযোগী শাখা সংগঠন ‘স্বদেশী জাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে চীনা কোম্পানি চায়না রেলওয়ে রোলিং স্টক প্রকল্পের বিরোধিতা করে ৮৫১ কোটি টাকার বিনিয়োগ চুক্তিটি বাতিলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.